ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

কুষ্টিয়ায় ৪ খুনে দুই মামলা, আটক ১২


চাঁদ আলী, কুষ্টিয়া photo চাঁদ আলী, কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ৬-৫-২০২২ দুপুর ১০:৪৭

ঈদ আনন্দ রূপ নিয়েছে বিষাদে। থেমে গেছে সব কোলাহল। স্তব্ধ হয়ে গেছে গ্রামের ঈদ আনন্দ। গ্রামজুড়ে কান্না আর আহাজারি। শোকে বিহ্বল স্বজনরাও। বাবা ও সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় সন্তানরাও। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো গ্রামজুড়ে। এমন চিত্র এখন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে। গত সোমবার (২ মে) বিকেলে গ্রামটিতে পূর্বশত্রুতার জেরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবদমান দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হন। 

নিহতরা হলেন- স্থানীয় আস্তানগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবুল মালিথার ছেলে আব্দুর রহিম মালিথা (৭০), মৃত আজিজুল হকের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৫), দাউদ মণ্ডলের ছেলে লাল্টু মণ্ডল (৪২) এবং মৃত হোসেন মণ্ডলের ছেলে আবুল কাশেম (৬৫)।

প্রথম একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি কেরামত আলীর সমর্থক। প্রতিপক্ষ বর্তমান ঝাউদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসানের সমর্থক এবং আব্দুর রহিম মালিথা। এ ঘটনায় নিহতদের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে ভয়-আতঙ্কের মধ্যদিয়ে মঙ্গলবার (৩ মে) বিকেল ৪টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আহতরা এখনো কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহতদের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামেই মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। 

ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (২ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর বাজারে কেরামত আলীর সমর্থক আব্দুর রহিম মালিথার সাথে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে মেহেদী হাসানের সমর্থকরা রহিমের ওপর ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় লঠির আঘাতে রহিম মাটিতে পড়ে যান। এলোপাতাড়িভাবে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করা করে প্রতিপক্ষ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মেহেদীর সমর্থকরা স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। রহিমকে মারধরের খবর পেয়ে কেরামত আলীর সমর্থকরা পাল্টা মেহেদী সমর্থকদের ওপর হামলা চালালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে মেহিদীর সমর্থকরা পালিয়ে যায়। কেরামত আলীর সমর্থকরা উপর্যুপরি হামলা চালিয়ে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মেহেদীর সমর্থক মতিয়ার, লাল্টু ও আবুল কাশেমকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে । পরে সংবাদ পেয়ে ইবি থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ৪ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি আহত ১০ জনের মধ্যে আরো দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

নিহত আব্দুর রহিম মালিথার স্ত্রী ও আব্দুর রহিম মালিথার ছেলের স্ত্রী দাবি করেন, চাল ভাঙিয়ে বাড়ি ফেরার পথে চারা বটতলা নামক স্থানে পৌঁছলে বর্তমান চেয়ারম্যান মেহেদী ও মসজিদ গ্রুপের রাশিদুলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে। জীবন বাঁচানোর জন্য ভ্যানের নিচে পালালে সেখান থেকে পা ধরে টেনে বের করে আবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে তারা পালিয়ে যায়। এই মৃত্যুকে ধামাচাপা দিতে ও ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নিজেদের লোককে তারা হত্যা করে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে কেরামত আলীর সমর্থক ও মেহেদী হাসানের সমর্থকদের মধ্যে পূর্ব থেকেই উত্তেজনা চলছিল। সোমবার বিকেলে দুপক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। প্রথম মামলাটি করেন ঝাউদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসানের এবং আব্দুর রহিম মালিথা সমর্থক ও নিহত মতিয়ার রহমানের ছেলে আশরাফুল; যার মামলা নম্বর ৪, তারিখ : ৪/৪/২০২২। মামলায় মোট ৭১ জনকে আসামি করা হয়।

 দ্বিতীয় মামলাটি করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি কেরামত আলীর সমর্থক এবং নিহত আব্দুর রহিম মালিথার ছেলে রফিকুল; যার মামলা নম্বর ৫, তারিখ ৪/৪/২০২২। এ মামলায় মোট ২৭ জনকে আসামি করা হয়। দুটি মামলায় মোট ৯৮ জনকে আসামি করা হয়।

এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংঘাত এড়াতে আমি নিজেসহ ওই এলাকায় এখন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত উভয়পক্ষের ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান কেয়ামত গ্রুপের ৭ জন ও বর্তমান চেয়ারম্যান মেহেদী গ্রুপের মোট ৪ জন গ্রেপ্তার হয়।

এদিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি কেরামত আলীর পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ২টার সময় ঝিনাইদহ থেকে র‌্যাব কেরামত আলীকে গ্রেফতার করেছে। 

নিহত আব্দুর রহিম মালিথার ছেলে রফিকুলের পারিবারের দাবি, বুধবার (৪ মে) দহকুলা বাজার থেকে ডিবি পুলিশ রফিকুলকে গ্রেপ্তার করেছে।

তবে এ বিষয়ে ডিবির ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করিনি। 

উল্লেখ্য, নিহত আব্দুর রহিম মালিথার ছেলে রফিকুল বাদী হয়ে মামলাটি করেন, যার নম্বর ৫, তারিখ ৪/৪/২০২২। এ মামলায় মোট ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

 

এমএসএম / জামান

টিসিবি'র কার্ডের কথা বলে নারী-পুরুষদের মানববন্ধনে দাঁড় করালেন প্যানেল চেয়ারম্যান, ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী

শিবির কর্মী থেকে বিএনপি নেতা, কে এই জাকির হোসেন সরকার

রৌমারীতে বিয়ের প্রলোভনে তরুনীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা

মান্দায় ছয় মাস ধরে এসিল্যান্ড শূন্য

পঞ্চগড়ে বিএনপির বিজয় র‌্যালি

প্রশাসনিক অনুমতিতে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের দাফন সম্পন্ন

সড়ক দুর্ঘটনায় সুবিপ্রবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক

পটুয়াখালীতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে জেলা বিএনপির বিজয় র‍্যালি ও সমাবেশ

গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঠাকুরগাঁওয়ে বিজয় র‌্যালী

ঝিনাইদহে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে আনন্দ শোভাযাত্রা

ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তিতে ফটিকছড়িতে বিজয় মিছিল-আলোচনা সভা

আর কোন স্বৈরাচারের জন্ম হতে দিবেনা বিএনপি

নোয়াখালী -৪ আসন থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ