ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

কয়রায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ অপরিহার্য


সম্রাট, কয়রা photo সম্রাট, কয়রা
প্রকাশিত: ৬-৫-২০২২ বিকাল ৫:৫৭

বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে সুন্দরবনের কোলঘেঁষা খুলনার কয়রা উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের বেপরোয়া হয়ে ওঠার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এক সময়ের নগরকেন্দ্রিক এ সমস্যা এখন কম-বেশি সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি দক্ষিণের এ জনপদে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কয়রায় তুচ্ছ বিরোধকে কেন্দ্র করে যেসব কিশোর বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে, সমাজ তাদের নিয়ে কতটা ভাবছে? এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান শুরু হলে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হলেও এক সময় এ আলোচনা একেবারেই থেমে যায়। উদ্বেগজনক তথ্য হলো, কয়রায় ভয়ঙ্কর কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা আনুমানিক ২০ থেকে ৩০টি এবং সদস্য সংখ্যা ২৫০-৩০০।  

এদের কাছে রয়েছে নানারকম দেশীয় অস্ত্র। এদের অনেকেই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অবস্থান করে। আবার কেউ কেউ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনুচর হিসেবে কাজ করছে। কেউবা কোনো বড় ভাইয়ের লোক, কেউ কেউ নির্দিষ্ট কোনো জনপ্রতিনিধির লোক।

এক সময় দক্ষিণের এ জনপদে উঠতি বয়সের তরুণদের মধ্যে নানারকম সমাজকল্যাণমূলক কাজের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যেত, এখনো আছে। কিন্তু আগের তুলনায় অনেক কম। এখন উপজেলায় উঠতি বয়সের তরুণদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ একত্র হয়ে গ্যাং তৈরি করে নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আধিপত্য বিস্তার ছাড়াও বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় গ্রুপে গ্রুপে চলছে হাতাহাতি-মারামারি। 

কয়রায় কিশোর অপরাধীদের উৎপাত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে, যা কয়রার মানুষের সকলের জানা। এমন বাস্তবতায় মাঠপর্যায় থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদেরও পৃষ্টপোষকদের চিহ্নিত করা হলে এবং পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকলে কিশোর অপরাধীদের উৎপাত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে সকলের ধারণা। 

নিম্নবৃত্ত পরিবারের কিশোর যারা নানাভাবে বঞ্চিত তাদের অনেকে হতাশা থেকেও নানারকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। নানা রকম প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে এ শিশু-কিশোরদের সম্পদে পরিণত করার পাশাপাশি তাদের উন্নত মূল্যবোধের দীক্ষা প্রদানে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হলে এই শিশু-কিশোরদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখা সহজ হবে।

বর্তমানে বেশকিছু দিন ধরে কয়রায়  কিশোর অপরাধীদের উৎপাত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যেন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিছু দিন আগে ছুরির আঘাতে একজনের প্রাণ ও হারাতে হয়েছে। ঈদের দিনে আমাদী এলাকায়  একছাত্রকে কাটাকাটি এক পর্যায়ে মারধর ও যখমকে । যারা কিশোর বয়স থেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে, তারা যে একদিন শীর্ষ সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখাবে না; এর নিশ্চয়তা কী? এ ক্ষত সমাজদেহে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করার আগেই সবার এগিয়ে আসা উচিত। শিশুরা যেকোনো ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে দূরে থাকার শিক্ষা জীবনের শুরুতেই যদি পায়, তাহলে অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা করা যায়। আজকাল প্রযুক্তি ও আকাশ সংস্কৃতির থাবায় কিশোর-কিশোরীদের বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। তাদের মধ্যে সংবেদনশীল আচরণ, সহমর্মিতা ও উন্নত মূল্যবোধের দীক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে দেশে আরও ব্যাপক কর্মকাণ্ড চালু করতে হবে। একই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান অব্যাহত না থাকলে এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। কিশোররা যেন অপরাধে জড়াতে না পারে, সেজন্য অভিভাবকদেরই বেশি সচেতন হতে হবে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানের পাশাপাশি শিক্ষক-অভিভাবকসহ সবাই সোচ্চার না হলে গ্যাং কালচার বন্ধে কাঙ্খিত সুফল মিলবে কিনা নিঃসন্দেহ, এটা বলাই যায়।

কিশোরদের এভাবে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার কারণ কী? সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় যে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে নানা অসঙ্গতি রয়েছে। নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোররা। তাদের আচরণে পরিবর্তন হচ্ছে। কিশোর বয়সে হিরোইজম ভাব থাকে। আবার কিশোরদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘গ্যাং কালচার’ গড়ে উঠছে। কিশোর বয়সে ইতিবাচক চর্চার দিকে না গিয়ে নেতিবাচক চর্চার দিকে চলে যায়। আবার যখন তারা দেখে যে অপরাধ যারা করছে, তারা সমাজে বেশি লাভবান হচ্ছে, সেটা কিশোররা অনুসরণ করে। তাদের ওপর পারিবারিক ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

অপরাধ বিশ্লেষকরা মনে করেন, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে দুর্নীতি, অপরাধ ও অপরাধের নানা উপাদান রয়েছে, কিশোররা তার বাইরে নয়। পারিবারিক বন্ধন ভেঙে পড়ছে। এলাকায় খেলার মাঠ নেই। সুস্থ সংস্কৃতিচর্চাও নেই। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে তারকাখ্যাতি, হিরোইজম, ক্ষমতা, বয়সের অপরিপক্বতা, অর্থলোভ। সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ও কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। 
 পারিবারিক শিক্ষার অভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। আবার মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত অনেকেই নিজের সামান্য লাভের জন্য কিশোরদের অপরাধ জগতে টেনে নেন। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করেন। কিশোরদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের গ্যাং কালচার গড়ে উঠছে। কিশোর গ্যাং কালচার প্রতিরোধ করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। অভিভাবক থেকে শুরু করে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবার ও সমাজের সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে।

এমএসএম / জামান

ধামইরহাটে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিশুদেরকে কোরআনের ছবক প্রদান

আদমদীঘিতে নিখোঁজের ৩দিন পর ডোবার থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

পাবনায় রেজিস্টারদের প্রাণনাশের হুমকি! সেই শাহীনসহ ৬ দলিল লেখকের সনদ বাতিল

হালদা নদী থেকে বালুভর্তি ড্রেজার জব্দ, চালককে জরিমানা

‎শাল্লার কুশিয়ারা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের তান্ডব,নদীভাঙনের মুখে শত শত ঘরবাড়ি

বগুড়ার শেরপুরে মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত

গ্রাম আদালতকে আরও গতিশীল করতে চেয়ারম্যানদের নিয়ে ২ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণের চেষ্টা চলবে-নেত্রকোনায় দেলাওয়ার হোসেন আজিজী

চট্টগ্রামের ৫টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ

কটিয়াদীতে পুকুরের পানিতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

কেশবপুরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

কেশবপুরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

নওগাঁয় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পৌরবাসী