ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারি চক্র, একের পর এক নিধন হচ্ছে হরিণ


সম্রাট, কয়রা photo সম্রাট, কয়রা
প্রকাশিত: ২২-৫-২০২২ দুপুর ১:৭
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারি চক্রের সদস্যরা। একের পর এক নিধন করা হচ্ছে বন্যপ্রাণী।বনদস্যু ও জলদস্যু দমন হলেও সুন্দরবনে চোরা শিকারি চক্র দমন হয়নি। কয়রায় সুন্দরবনে হরিণ শিকার হঠাৎ করেই উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২০  শিকারিকে হরিণের মাংস ও চামড়াসহ আটক করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, শিকারিদের ধরতে সুন্দরবনে স্মার্ট প্রেট্রোল এবং বন বিভাগের টহল থাকলেও অদৃশ্য কারণে শিকার কমছে না।
 
স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে, আবার কখনো তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বনে ঢুকে শিকারিরা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছে। বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিয়ে শিকারিদের সুযোগ করে দিচ্ছেন কিছু অসাধু বন কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা, অসাধু পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরাও। তারা শিকারি চক্রের কাছ থেকে হরিণের মাংসসহ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করায় দিন দিন সুন্দরবনে হরিণ শিকার বাড়ছে।
 
অভিযোগ রয়েছে, কিছু মাছ কোম্পানিও চোরা শিকারিদের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। 
 
তবে বন কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যপ্রাণী শিকার বাড়েনি। বরং মানুষ সচেতন হওয়ায় এবং পুরস্কারের আশায় শিকার হওয়ার প্রাণী ও শিকারি ধরিয়ে দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এ কারণেই শিকার বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।
 
তথ্যসূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি মাস হতে মে মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে শিকার করা দুটি হরিণের  মাথা, একটি গুইসাপ,  ৪টি হরিণের চামড়া, ১২০ কেজি মাংস, ১৮০টি হরিণ মারার ফাঁদ জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ২০ জন চোরা শিকারিকে। বন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা এ বন্যপ্রাণীর অংশবিশেষসহ শিকারিদের আটক করে। জানুয়ারি থেকে মে মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত বন্যপ্রাণী আইনে কয়রায় ৩৫টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১২টি মামলা হরিণ শিকার ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে, যা বর্তমানে চলমান আছে।
 
জানা গেছে, সংঘবদ্ধ চোরা শিকারিরা সুন্দরবনের গহীনে কেওড়া গাছের ফাঁকে ফাঁকে অবস্থান নিয়ে নৌকা, ট্রলার ও গাছে মাচা পেতে হরিণের গতিবিধি লক্ষ্য করে। হরিণ নদী ও খালের চরাঞ্চলে ঘাস খেতে আসে। শিকারিরা এসব স্থানে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে। কখনো তারা গুলি ছুড়েও শিকার করে। পরে গোপন আস্তানায় মাংস ছাড়িয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে। প্রতি কেজি মাংস ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করছে বলে জানা যায়৷ 
 
সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার বানিয়াখালী, নোয়ানি, হড্ডা, খোড়লকাটি, তেঁতুলতলার চর, জোড়শিং, ছোট আংটিহারা, গোলখালী, ৫নং কয়রা, পবনা, ৪নং কয়রা এলাকায় সবচেয়ে বেশি হরিণের মাংস পাওয়া যায়। এভাবে হরিণ শিকার করে বিক্রি করতে গিয়ে অনেকে ধরাও পড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।
 
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পেশাদার হরিণ শিকারিদের বিশেষ সিন্ডিকেট রয়েছে।এদের নিয়ন্ত্রণ করে কিছু বিগত দিনের বনদস্যুদের পৃষ্ঠপোষক নামধারী মাছ কোম্পানি (এজেন্ট ব্যবসায়ী)। এসব এজেন্টের মাধ্যমে কখনো অগ্রিম অর্ডারে আবার কখনো তাৎক্ষণিকভাবে মাংস এনে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ হরিণের মাংস  উপজেলা সদর, খুলনা, সাতক্ষীরা এমনকি ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে বিভিন্ন দামে। তবে বেশি দামে বিক্রি হয় চামড়া। 
 
উপজেলার জোড়শিং গ্রামের বাসিন্দা আহাদুজ্জামান  জানান, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও তদবির হিসেবে হরিণের মাংস সরবরাহ করে থাকে শিকারিরা। এসব কারণেই প্রধানত লোকালয়ের অনেক লোকই হরিণ শিকারকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। শিকারিদের বন বিভাগের লোকজন চেনে। কিন্তু তাদের কখনো গ্রেফতার করে না। আবার  আটক হলেও বের হয়ে আবার শুরু করে। 
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনার কয়রা উপজেলার তেঁতুলতলার চর গ্রামের জেল থেকে ছাড়া পাওয়া এক ব্যক্তি বলেন, আমরা সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহ করতাম। লোভে পড়ে হরিণের মাংস বহন করতে গিয়ে ধরা পড়ি জেল খেটেছি, জরিমানা দিয়েছি। কিন্তু হরিণ শিকার তো থামেনি। আমাদের জায়গায় এসেছে নতুন মানুষ, রাঘববোয়ালরা রয়ে গেছে অগোচরে। যারা আমাদের মতো অসহায়দের অর্থের লোভ দেখিয়ে ব্যবহার করে, আপনারা তাদের ধরুন।
 
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবি এমএস দোহা (বিপিএম) বলেন, হরিণ শিকার ও পাচার রোধে আমরা সব সময় সতর্ক রয়েছি। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে হরিণের মাংসসহ পাচারকারীদের গ্রেফতার করছি। তবে আগের তুলনায় হরিণ শিকার অনেকটাই কমে এসেছে। এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সে নেয়ার চেষ্টা চলছে। হরিণ শিকারের মূল হোতাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
 
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা ও লোকবল সংকটের মধ্যেও হরিণ শিকারিদের অপতৎপরতা রোধ করতে বন বিভাগ সব সময় তৎপর। বনরক্ষীদের পাশাপাশি আমাদের স্মার্ট পেট্রোল দল সব সময় কাজ করছে। যাদের আমরা আটক করে আদালতে প্রেরণ করি তারা আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা গেলে এই জাতীয় অপরাধ সংঘটনের হার বহুলাংশে হ্রাস পাবে। এছাড়া আমরা বিভিন্নভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়গুলোতে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করছি।

এমএসএম / এমএসএম

ধামইরহাটে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিশুদেরকে কোরআনের ছবক প্রদান

আদমদীঘিতে নিখোঁজের ৩দিন পর ডোবার থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

পাবনায় রেজিস্টারদের প্রাণনাশের হুমকি! সেই শাহীনসহ ৬ দলিল লেখকের সনদ বাতিল

হালদা নদী থেকে বালুভর্তি ড্রেজার জব্দ, চালককে জরিমানা

‎শাল্লার কুশিয়ারা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের তান্ডব,নদীভাঙনের মুখে শত শত ঘরবাড়ি

বগুড়ার শেরপুরে মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত

গ্রাম আদালতকে আরও গতিশীল করতে চেয়ারম্যানদের নিয়ে ২ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণের চেষ্টা চলবে-নেত্রকোনায় দেলাওয়ার হোসেন আজিজী

চট্টগ্রামের ৫টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ

কটিয়াদীতে পুকুরের পানিতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

কেশবপুরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

কেশবপুরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

নওগাঁয় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পৌরবাসী