ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

তাইওয়ানকে ঘিরে চীন-আমেরিকার দ্বন্দ্ব চরমে


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ৪-৮-২০২২ দুপুর ৩:৬

বিশ্বায়ন বাস্তবতা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিশ্ব রাজনীতি এখন একের পর এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংকটগুলো যেন পিছু ছাড়ছে না, ইউক্রেন সংকট, তাইওয়ান, তালেবান সংকটসহ বেশ কিছু সংখ্যক সংকট বর্তমান বিশ্বে বিরাজমান। ঠিক এমনই এক সংকটের নাম তাইওয়ান সংকট। যে সংকট এর মাত্রা সংঘাতের দিকে ধাপিত হচ্ছে। তাইওয়ানকে নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেখানে বিশ্বের দুই পরাশক্তির অবস্থান। একদিকে রয়েছে গণতন্ত্রের পূজারি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে কমিউনিস্ট পূজারি চীন। সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ান প্রণালিতে চীন নিজেদের যে আইনগত এখতিয়ার দাবি করেছে, তার প্রতিক্রিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিমান উড্ডয়ন ও বিবৃতি। পাল্টা বিবৃতিতে চীন জানিয়েছে, তাইওয়ান প্রণালির শান্তি ও নিরাপত্তাকে পদদলিত করার এই ইচ্ছাকৃত কাজের তীব্র বিরোধিতা করে চীন। আমাদের সেনাবাহিনী জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব সময়ই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, তাইওয়ান প্রণালি আন্তর্জাতিক জলসীমা। এর অর্থ হচ্ছে, তাইওয়ান প্রণালি কোনো রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডের এখতিয়ারে না পড়ায় সেখানে মুক্তভাবে নৌচালনা ও সেখানকার আকাশে বিমান উড্ডয়ন করার স্বাধীনতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনেই সেই সুরক্ষা রয়েছে। অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাইওয়ান প্রণালিতে ‘চীনের সার্বভৌমত্ব, সার্বভৌম অধিকার ও আইনগত এখতিয়ার রয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট দেশ তাইওয়ান প্রণালিকে আন্তর্জাতিক জলসীমা বলে দাবি করে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কে সঠিক? জাতিসংঘ সমুদ্র আইনবিষয়ক সনদে (ইউএনসিএলওএস) আন্তর্জাতিক জলসীমা  উল্লেখ নেই। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সমুদ্র সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। সে জন্য এর বিধিগুলোর সুবিধা দাবি করার মতো আইনই তাদের নেই। তাইওয়ান প্রণালিতে চীনের আইনগত এখতিয়ারের দাবিটি সঠিক। আন্তর্জাতিক জলসীমার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। 

এটা যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সৃষ্টি করা একটা ধারণা, যাতে তারা নৌযান চালনার স্বাধীনতা পায়।জাতিসংঘ সমুদ্র সনদ অনুযায়ী, কোনো একটা প্রণালি কাদের অধিকারে থাকবে, তা তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ভূখণ্ডগত সমুদ্রসীমা, সংলগ্ন এলাকা ও ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। একটি রাষ্ট্রের উপকূলীয় ভিত্তিভূমি থেকে কমপক্ষে ১২০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্র অঞ্চল ওই রাষ্ট্রের আওতাধীন। সেখানে তাইওয়ান প্রণালি চীনের মূল ভূখণ্ডের ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে। এ কারণে উপকূলীয় রাষ্ট্র হিসেবে এ প্রণালির ওপর চীনের সার্বভৌমত্ব থাকবে। আবার এ প্রণালির ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত চীনের সংলগ্ন এলাকা। এ কারণে উপকূলীয় রাষ্ট্র হিসেবে তাইওয়ান প্রণালিতে কোনো আইন ভঙ্গ হচ্ছে কি না, তা রোধ করা ও শাস্তি দেওয়ার অধিকার রয়েছে চীনের। এ ছাড়া রাজস্ব আদায় ও অভিবাসন পরিচালনারও অধিকার রয়েছে দেশটির। আবার এই তাইওয়ান প্রণালি ২০০ নটিক্যাল মাইলের বেশি প্রশস্ত নয়। সেখানে উপকূলীয় রাষ্ট্র হিসেবে সেখানকার সম্পদ ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে চীনের। ফলে তাইওয়ান প্রণালির কোনো অংশই রাষ্ট্রীয় এখতিয়ারমুক্ত এলাকা নয়।যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, তাইওয়ান প্রণালিতে বিদেশি যুদ্ধজাহাজের কিংবা যুদ্ধবিমানের মুক্তভাবে চলার অধিকার আছে নাকি নেই। জাতিসংঘ সমুদ্র সনদ অনুযায়ী, তাইওয়ান প্রণালির ভেতর দিয়ে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমানের স্বাভাবিক চলাচল বৈধ। কিন্তু যেসব দেশ জাতিসংঘ সমুদ্র সনদে স্বাক্ষর করেনি, তাদের ক্ষেত্রে এ অধিকারের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে প্রথাগত আইন আবার এ ধরনের যাতায়াতের পথের স্বীকৃতি দেয়। যাহোক জাতিসংঘ সমুদ্র সনদ অনুযায়ী, যাতায়াতের এই পথের সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান কী করছে, সেটার ওপর নির্ভর করে। উপকূলীয় রাষ্ট্রের অধিকার ও কর্তব্যের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করার বাধ্যবাধকতা তাদের রয়েছে। 

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়,পসাইডন পি-৮-এর কথা। 
এটি সাবমেরিন যুদ্ধ, পানির উপরিভাগের যুদ্ধ, গোয়েন্দা, নজরদারি ও শত্রু পরিবেষ্টিত এলাকা পর্যবেক্ষণের উপযোগী যুদ্ধবিমান। টর্পেডো, হারপুন ও জাহাজবিধ্বংসী মিসাইল সজ্জিত। এ উড়োজাহাজ থেকে ড্রোন চালনা করা যায়। যদি কোনো যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমানের সাইবার অথবা ইলেকট্রনিক যুদ্ধের সক্ষমতা থাকে, তবে সেটা হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়। জাতিসংঘ সমুদ্র সনদ এ ধরনের হুমকি সৃষ্টিকারী জাহাজ বা বিমানের চলাচলকে স্বীকৃতি দেয় না। প্রকৃতপক্ষে এ রকম কিছু সাইবার ও ইলেকট্রিক হামলা যুক্তরাষ্ট্র যে চালাতে পারে, সে রকম কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে নিরাপত্তা চুক্তি করেছে, তাতে ‘সাইবার হামলা’কে মিসাইল বা বোমা হামলা বা সরাসরি হামলার সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ সমুদ্র সনদে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কোনো যুদ্ধজাহাজ কিংবা যুদ্ধবিমানের সাইবার কিংবা ইলেকট্রনিক যুদ্ধের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হয়।বিশেষ করে যেসব জাহাজ ও বিমান সংকেত গোয়েন্দাগিরির সঙ্গে জড়িত, সেগুলো সুচিন্তিতভাবেই প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ড করে। চীন মনে করে এসব কর্মকাণ্ড জাতিসংঘ সমুদ্র সনদের প্রবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সামুদ্রিক গবেষণার জন্য অবশ্যই উপকূলীয় রাষ্ট্রের সম্মতি নিতে হবে। কিন্তু কোনো যুদ্ধজাহাজ কিংবা যুদ্ধবিমান যদি সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, এমন কোনো যন্ত্র পরিচালনা করে, তবে সেগুলো এই প্রবিধানের আওতায় পড়বে। সামরিক ও আইনগত বিষয়কে পেছনে রেখে এখন বিতর্কটা রাজনৈতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাইওয়ানের রাজনৈতিক মর্যাদার বিষয়টিই এখন সামনে চলে আসছে।‘এক চীন নীতির’ শর্ত অনুযায়ী তাইওয়ান যদি চীনের অংশ হয়, তাহলে পুরো তাইওয়ান প্রণালিই চীনের আইনগত এখতিয়ারে পড়ে। 

যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের বিবৃতি ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এটা বোঝাতে চায় যে তাইওয়ান চীনের অংশ নয় এবং তাইওয়ান প্রণালির একটি অংশের আইনগত অধিকার ভিন্ন একটি সরকারের, তাহলে তাইওয়ানের ওপর চীনের সার্বভৌম অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করা হবে। জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী, চীন যেহেতু বিদেশি যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমানের ওপর আইনি অধিকার চর্চা করতে পারে না, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ড করছে। যা আরেক যুদ্ধের বার্তা বহন করছে কি না তা সময়ই বলে দেবে। তবে কৌশলগত অস্পষ্টতা হচ্ছে তাইওয়ান প্রশ্নে আমেরিকার ঘোষিত নীতি। চীন যদি সামরিকভাবে তাইওয়ানকে দখল করে নিতে চায়, তাহলে আমেরিকা সামরিকভাবে তাইওয়ানকে রক্ষার চেষ্টা করবে কি না, এই প্রশ্নে আমেরিকা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কোনো জবাব স্পষ্টভাবে দেয় না। আমেরিকার সব প্রেসিডেন্ট এই নীতি মেনে চললেও জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অন্তত তিনবার এই অস্পষ্টতা থেকে সরে গিয়ে স্পষ্টভাবে বলেছেন, চীন তাইওয়ানে আগ্রাসন শুরু করলে আমেরিকা সামরিকভাবে সেটা প্রতিহত করবে। এর সর্বশেষটি করেছেন তিনি কিছুদিন আগেই জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সফরের সময়। অবশ্য এটাও এখানে যুক্ত করে রাখা দরকার, বাইডেনের বক্তব্যের পরপরই আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে আবার বলা হয়েছে, তাইওয়ান প্রশ্নে আমেরিকার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।এদিকে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তা সম্মেলন ‘সাংগ্রি-লা ডায়ালগের’ মধ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে এবং সম্মেলনের বক্তৃতায় চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেঙ্গহি স্পষ্টভাবে খুব কঠোর ভাষা ও দেহভঙ্গিতে বলেন, তাইওয়ান স্বাধীনতা ঘোষণা করলে চীন যেকোনো মূল্যে যুদ্ধ করে তাইওয়ান দখল করে নেবে। এটা অবশ্য ফেঙ্গহি পুনরুল্লেখ করেছেন মাত্র, কয়েক বছর আগেই চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং স্বয়ং একই ঘোষণা দিয়েছিলেন।

দক্ষিণ চীন সাগরের সমুদ্রসীমা আর স্থলসীমা একত্রে হিসাব করলে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ আছে মোট ১৭টি দেশের। আছে জাপানের সঙ্গেও। জাপানের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থান মনুষ্যবসতিহীন সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জের। জাপানের নিয়ন্ত্রণাধীন এসব দ্বীপের মালিকানায় অবশ্য চীনেরও জোর দাবি আছে। জেনে রাখা ভালো, জাপানের সর্বদক্ষিণ প্রান্ত ইশিগাকি দ্বীপ থেকে এর দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার, আর মেইনল্যান্ড চীন থেকে এর দূরত্ব ৩৩০ কিলোমিটার। মনুষ্যবসতি না থাকলেও এই দ্বীপপুঞ্জ যে দেশের অধিকারে যাবে, সে দেশ যে সমুদ্রসীমার অধিকারী হবে, সেটা মৎস্য এবং খনিজসম্পদে খুবই সমৃদ্ধ। এটাই এই দ্বীপ নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবির নেপথ্যে। এ ছাড়া একেবারে তুচ্ছ, অব্যবহারযোগ্য, অপ্রয়োজনীয় ভূমিও ছেড়ে দেয় না কোনো পরাশক্তি; এতে তাদের ইগো বা অহং আহত হয়।২০১০ সালে এই সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জের জলসীমায় প্রবেশ করা চীনা মাছ ধরার জাহাজ আটক করে জাপানি নৌবাহিনী। এরপর চীন এমন এক পদক্ষেপ নেয়, যাতে জাপান একেবারে নত হয়ে চীনা জাহাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। চীন থেকে জাপানে রপ্তানি হতে যাওয়া এক জাহাজভর্তি ‘রেয়ার আর্থ এলিম্যান্টস’ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় চীন। এতেই জাপানকে নত হতে হয়।পৃথিবীর এখন পর্যন্ত প্রমাণিত কোবাল্ট মজুতের ৭০ শতাংশ আছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে। আর এই দেশের প্রধান ১৯টি কোবাল্ট খনির ১৫টিই চীনের নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া এখানকার পুরো কোবাল্ট প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ব্যবসার চাবিকাঠি চীনের হাতে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৪০ সাল নাগাদ কিছু মৌলের চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস এ রকম-লিথিয়াম ৪২ গুণ, গ্রাফাইট ২৫ গুণ, কোবাল্ট ২১ গুণ, নিকেল ১৯ গুণ, রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস ৭ গুণ। এসব খনিজ দ্রব্য সৌরশক্তিসহ আর যেকোনো ধরনের নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান এবং এসব পণ্যের বেশির ভাগের নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে। 

ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য জরুরি প্রায় প্রতিটা জিনিসের ওপর চীনের নিরঙ্কুশ অথবা খুব বড় নিয়ন্ত্রণ আছে। নেই শুধু একটা জিনিস, সেমিকন্ডাক্টর চিপ। যেসব ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর নির্ভর করে আজকের পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোর মূল ভিত্তি হচ্ছে এসব চিপ। সেমিকন্ডাক্টর চিপ তৈরিতে একচ্ছত্র সক্ষমতা তাইওয়ানের। কিন্ত চীনের কোম্পানি সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (এসএমআইসি) চিপ উৎপাদক কোম্পানি হিসেবে পৃথিবীতে পঞ্চম হলেও সর্বোচ্চ মানের চিপ উৎপাদনের আশপাশেও নেই। চীন বিরাট বিনিয়োগ করছে সর্বোচ্চ মানের চিপ তৈরির জন্য, কিন্তু তাইওয়ানের বর্তমান পর্যায়ে তারা পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাইওয়ান তার প্রযুক্তিকে নিশ্চয়ই এগিয়ে নেবে আরও অনেক দূর। তাই তাইওয়ানকে ধরা চীনের পক্ষে প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। নিশ্চয়ই কোনো যুদ্ধ ছাড়া তাইওয়ান যদি চীনের সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য হয় অথবা খুব স্বল্প শক্তি প্রয়োগে তাইওয়ানকে যদি কবজা করে ফেলতে পারে চীন, তাহলে তাইওয়ানের হাতে থাকা এই অকল্পনীয় বড় কৌশলগত পণ্যের একচ্ছত্র অধিকার চীনের হাতে চলে যাবে। অপরদিকে ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইন-এর কথা বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, জাপানের রিউকু দ্বীপপুঞ্জ, তাইওয়ান, উত্তর ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও ইত্যাদি। কিন্ত কৌশলগত দিক থেকে এই দ্বীপগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে ঢুকতে এই দ্বীপগুলো চীনের নৌবাহিনীর জন্য প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি করে। এই চেইনের একেবারে মধ্যভাগে অবস্থিত তাইওয়ান চীনের হস্তগত হওয়া মানে প্রশান্ত মহাসাগর চীনের কাছে একেবারে নির্বিঘ্নে উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া। এটাও আরেক অতি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিজয় হবে চীনের। সর্বোপরি তাইওয়ানকে খুব সহজে কবজা করে ফেলতে পারা পৃথিবীর আর সব দেশের সামনে এই বার্তা স্পষ্ট করবে, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থা চীনের কাছে পরাজিত হয়েছে। দুর্বল বা মাঝারি শক্তির দেশগুলোকে তখন চীনের কবজায় যেতেই হবে। চীন যদি একচেটিয়া ভাবে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করে, তার ফল কি হবে তা সময়ই বলে দেবে।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট 
raihan567@yahoo.com

এমএসএম / এমএসএম

বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনে শহীদ জিয়াউর রহমান

জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংস্কার করতে হবে

গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলো কি করছে

জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯) ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

গনতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাজনীতিতে গুরুত্ব বেড়েছে শহীদ নূর হোসেনের

রাজনৈতিক নির্বুদ্ধিতার পরিণাম ভালো হয় না

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও বিশ্বে তার প্রভাব

অতীত ব্যর্থতা কাটিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে চায় মানুষ

আধুনিক প্রযুক্তির বিশ্বে বদলে যাচ্ছে চাকরির বাজার

বিকল্প বাজারজাত না করে পলিথিন নিষিদ্ধ বাস্তবায়নের অন্তরায় হতে পারে

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে মানুষের শেষ আশাটাও হারিয়ে যাবে

মার্কিন নির্বাচন রাজনৈতিক সংঘাতের আরেকটি অধ্যায়

আলোর উৎসব দীপাবলিতে কেটে যাক সব আঁধার