উল্লাপাড়ার ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম আব্দুস সাত্তার আজাদের অনিয়ম দুর্নীতি ও জাল স্বাক্ষরে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ধরইল বাজারে বাঙ্গালা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করে সচেতন এলাকাবাসীর ব্যানারে।
এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবু সাইদ তালুকদার, বাঙ্গালা ইউনিয়ন স্বেচ্চাসেবকলীগের সভাপতি সোহেল রানা, বাঙ্গালা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আতিক তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠুসহ প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম আব্দুস সাত্তার আজাদ অনিয়ম দুর্নীতি ও জাল স্বাক্ষরে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে করেন ২০১৫ সালে তার শালীকা, ভাতিজা ও স্বজনকে গোপনে তিনটি পদে আফরোজা খনম (আইসিটি), সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম (জীব বিজ্ঞান) ও শাহাদত হোসেন (সহকারী গন্থাগার) সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে গোপনে নিয়োগ প্রদান করেন। কিন্তু এই তিন জন শিক্ষক গত ৭ বছরে এক দিনও কোন প্রকার ক্লাস নেননি এবং বিদ্যালয়ে কোনোদিন উপস্থিত থাকেননি।
গত কয়েক দিন হলো এই তিন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে দেখে এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষককে বল্লে প্রধান শিক্ষক বলেন তারা নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক। ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম আব্দুস সাত্তার আজাদের অনিয়ম দুর্নীতি ও জাল স্বাক্ষরে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে করেছে বলে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী । এমন দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তারা। সেই সাথে জাল স্বাক্ষকের ৩ জন শিক্ষকর নিয়োগ বাতিল না করলে বড় ধরনের আন্দলনে যাবেন বলেও এলাকাবাসী হুসিয়ারী প্রদান করেন।
নাম প্রাকাশ না করা শর্তে একাধিক শিক্ষক, ছাত্রী ও ছাত্রী অবিভাবক জানায়, যে তিনজন শিক্ষক নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তারা বিগত ৭ বছরে কোনোদিন বিদ্যালয়ে পাঠদান করাননি। এবং বিদ্যালয়ে কোনোদিন দেখাও যায়নি তাদের। গত ২২ জুন থেকে তাদের বিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে। এতদিন আগে যদি তাদের নিয়োগ দেয়া হয় তা হলে তারা কী কারণে বিদ্যালয়ে আসেননি তা প্রধান শিক্ষক ও ওই তিন শিক্ষকই ভালো জানেন।
ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার জানান, আমি যখন ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলাম তখন আমি এই তিন জন শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করিনি। আমার স্বাক্ষর জাল করে হয়তো নিয়োগ প্রদান করেছেন এই দূূনীর্তিবাজ প্রধান শিক্ষক। আমি এই তিন জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ও আমার স্বাক্ষর জাল কারার অপরাধের শাস্তি চাই।
ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম আব্দুস সাত্তার আজাদ বলেন, তিন জন শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ম মেনেই প্রদান করা হয়েছে। কারোর স্বাক্ষর জাল করা হয়নি। তিনজন শিক্ষক নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থেকে ক্লাস নিচ্ছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম শামসুল হক জানান, ধরইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক আফরোজা খানমের নিয়োগ বিষয়ে আমাদের কাছে জাল স্বাক্ষরে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। আইসিটি শিক্ষক আফরোজা খনমের জন্য এমপিও আবেদন করেছিল, তা আমরা বাতিল করেছি। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম (জীব বিজ্ঞান) ও শাহাদত হোসেন (সহকারী গন্থাগার ) এর জন্য এমপওি’র আদেন করেননি। তদন্ত করে সব বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত যে বিষয়ে অভিযোগ উঠছে তা এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তাদের পাঠদানের অনুমতি দেয়া ঠিক হয়নি। প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে তাদের পাঠদান বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং নিয়োগ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমএসএম / জামান