পাঁচলিয়ায় সমাজচুৎ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারী সাজমিন আক্তার টুনির কান্না
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাঁচলিয়া রাণীনগর গ্রামের সদরুল ইসলামের কন্যা দৃষ্টি প্রতিবদ্ধী সাজমিন আক্তার টুনি জন্মের তিন বছর পরে চোখের দৃষ্টি হারায়, তার কিছুদিন পরে ক্যান্সারজনিত কারনে মাকে হারান টুনি ।
দৃষ্টি প্রতিবদ্ধী সাজমিন আক্তার টুনি তার মাকে হারানোর পর থেকেই নানা বাড়ী পাইকশাতে নিজেকে তিল তিল করে গড়ে তুলতে থাকেন, গড়ে উঠতে থাকেন জিবনের সাথে সংগ্রাম কর্।ে টুনির নিজ গ্রাম পাঁচলিয়ার রানীনগরে আসা যাওয়ার মাঝে পরিচয় হয় একই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আমিনুল ইসলামের সাথে । দীর্ঘ দিন পরিচয়ের এক পর্যায়ে মনের আদান প্রদান হয় আমিনুল ও টুনির মাঝে।
প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী টুনিকে তার জীবন সুন্দর ও সুখি করার হাজারও স্বপ্ন দেখাতো আমিনুল ইসলাম। সুখের আশায় আবুল কালাম এর ছেলে আমিনুল ইসলাম কে ২লক্ষ ৫ হাজার টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে গত ২৩ জানুয়ারি ২০২০ইং তারিখে র্কোট ম্যারিজ এর মাধ্যমে ঢাকায় বিবাহ করেন তারা দুজন । কে জানে এই বিবাহই হবে টুনির জিবনে কাল ।
টুনি ও আমিনুল এর দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটছিল। কিন্তু কিছু দিন পর থেকে শুরু হয় যৌতুকের টাকার দাবিতে আমিনুল সহ স্ব=পরিবারের শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন। টুনি স্বামী আমিনুল কে প্রতিবন্ধী ভাতার জমানো টাকা দিয়ে কিনেও দেন ২ টা অটোরিক্সা । তারপর ও থামেনি দৃষ্টি প্রতিবদ্ধী সাজমিন আক্তার টুনির উপর শারীরিক নির্যাতন । নির্যাতনের এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে অন্তঃসত্তা অবস্থায় বের করে দেন সাজমিন আক্তার টুনিকে ।
অবশেষে গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং তারিখে জোর পূর্বক ভাবে ৩ মাসের অন্তঃসত্তা অবস্থায় টুনি কে দিয়ে শালিশী বৈঠকের মাধ্যমে জোর পূর্বক ভাবে তালাক নামায় টিপসই নেয় আমিনুলের স্ব-পরিবারসহ গ্রাম প্রধানরা ্পরে কাবিনের ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা জমা রাখা হয় গ্রাম প্রধান মোকসেদ হাজী ও শহিদুল প্রামানিকের কাছে। সাজমিন আক্তার টুনি তালাকের বিষয় টি না মেনে নিলেও জোর পূর্বক ভাবে টাকা নিতে বাধ্য করা হয় তাদেরকে গ্রাম প্রধানগন ।
এ বিষয় নিয়ে দফায় দফায় কয়েক দফা দরবারও করেছেন গ্রাম প্রধান মোকছেদ হাজী ,শহিদুল ইসলাম,সেরাজুল ্ইসলাম,আবুল হাসেম,সোরহাব আলি,শফি,কামরুল, হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ৬নংওর্য়াডের মেম্বর নুরুল ইসলাম ও ৬নংওর্য়াডের বিএ নপি নেতা বর্তমান মেম্বর শাহ-আলী সহ অনেকেই ।
শালিশী বৈঠকে গ্রাম প্রধানদের একপাক্ষীক বিচারের কারনে আমি (টুনি) নিরুপাই হয়ে গ্রাম প্রধান মোকছেদ হাজী ইউপি সদস্য শাহ আলি,আবুল হাসেম, শহিদুল ইসলাম, শফিস ও তার স্বামীসহ শশুর বাড়ীর লোকজন দের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি ।
লিখিত অভিযোগের কারনে দীর্ঘ দিন যাবত টুনির পরিবারকে সমাজচুৎ করে রেখেছে গ্রাম প্রধানরা। মাথা গোজার মত জায়গা টুকুও নেই টুনির। ১১ মাসের শিশু সন্তান নিয়ে থাকেন চাচার বাড়িতে। এদিকে মামলা চলমান অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করে সুখের সাগড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে আমিনুল ইসলাম।
এ বিষয়ে সাজমিন আক্তার টুনি বলেন, আমার কোন আয়ের উৎস নাই। প্রতিবন্ধী ভাতার যে টাকা পাই, তা দিয়ে আমরা চলতে পারি না। আমার বাবার অন্য আর একটি পরিবার আছে। আমার আর আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ কি। কি দোষ ছিল আমার, কি দোষ আমার সন্তানের কে নিবে আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ এর দায়িত্ব। আমি একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রশাসনের কাছে আমার আকুল আবেদন, আমি যেন এর সঠিক বিচার পাই ও এই গ্রাম প্রধানদেও দৃষ্ঠান্ত মুলক শাস্তির দাবি করছি ॥
এমএসএম / এমএসএম