ঢাকা শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

শীর্ষ আদালতেও বহাল নাজিব রাজাকের ১২ বছরের কারাদণ্ড


আশিক ইসলাম, মালয়েশিয়া  photo আশিক ইসলাম, মালয়েশিয়া
প্রকাশিত: ২৩-৮-২০২২ বিকাল ৫:৪২
মালয়েশিয়ার শীর্ষ আদালতেও বহাল থাকল দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ১২ বছরের কারাদণ্ড। রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল (ওয়ানএমডিবি) আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় মঙ্গলবার তার শাস্তি বহাল রেখে রায় দিয়েছে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট। 
 
পাঁচ সদস্যের বিচারক প্যানেলের পক্ষে বহুল আলোচিত মামলাটির রায় দেন প্রধান বিচারপতি মাইমুন তুয়ান মাত। রায়ে তিনি বলেন, ‘মামলার আপিল আবেদনের কোনো ভিত্তি নেই। মামলার আগের রায় ও দণ্ডকে সঠিক।’
 
বিচারপতি আরো বলেন, ‘আগের পর্যবেক্ষণের ওপর ওপর ভিত্তিতে আমাদের সর্বসম্মত মত হচ্ছে, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রমাণ সাপেক্ষে সাতটি অভিযোগের সব আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।’
 
চলতি সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় আদালত নাজিব রাজাকের দাবির পক্ষে নতুন করে তথ্য উপাত্ত হাজিরের নির্দেশ দেন আদালত। এরপরই চূড়ান্ত রায় দিলেন দেশটির শীর্ষ আদালত। এ রায়ের মাধ্যমে এই মামলার চূড়ান্ত আপিলের নিষ্পত্তি হলো। এখন শিগগিরই কয়েদি হতে হবে নাজিব রাজাককে। 
 
এর আগে ২০২০ সালে জুলাই মাসে নাজিবের বিরুদ্ধে আনা ৭ অভিযোগের প্রত্যেকটিতেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে ২১ কোটি রিঙ্গিত জরিমানা করেন।
 
কুয়ালালামপুর হাইকোর্টের বিচারক মোহাম্মদ নাজলামন মোহাম্মদ গাজালি মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বিচারক বলেন, ‘বিচারের সব সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনার পর আমি দেখেছি কৌঁসুলিরা সফলভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে এই মামলা সন্দেহের ঊর্ধ্বে।’
 
পরে প্রতিটি অভিযোগের জন্য আলাদাভাবে সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে একটি অভিযোগে নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়। এছাড়া দায়িত্বে থেকে বিশ্বাসভঙ্গের তিনটি অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে ১০ বছর করে এবং মুদ্রা পাচারের তিনটি অভিযোগের প্রতিটিতে আর ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়।
 
রায়ে বলা হয়, নাজিবের সব কটি ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে। ফলে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১২ বছর জেল খাটতে হবে তাকে। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নাজিবের আইনজীবীরা।ওয়ানএমডিবির পূর্ণরূপ ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ। এটা মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তহবিল। কিন্তু এ তহবিলের কোটি কোটি মার্কিন ডলার নয়-ছয় করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিক রাজাক।
 
এ আর্থিক কেলেঙ্কারি শুধু মালয়েশিয়ায় নয়, সারা বিশ্বেই আলোচিত। নাজিক রাজাক পরিবার ছাড়াও এই তহবিলের অর্থ তছরুপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে মার্কিন ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের বিরুদ্ধেও।
 
যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করা নাজিব মালয়েশিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও প্রধানমন্ত্রী আবদুল রাজাক হুসেইনের সন্তান। প্রভাবশালী রাজনীতিক বাবার সূত্রে রাজনীতিতে আসেন নাজিব। ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
 
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেশের ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে’ রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ানএমডিবি গঠন করেন নাজিব। গঠনের সময় বিদেশে অংশীদারির ব্যবসা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ত্বরান্বিত করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য বলে দাবি করা হয়।
 
কিন্তু নাজিবের লাগামহীন দুর্নীতি পুরো তহবিল উইপোকার মতো খেয়ে ফেলে। ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে তার বিরুদ্ধে ওয়ানএমডিবি থেকে সাড়ে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে।
 
এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ তোলা হয় নাজিবের বিরুদ্ধে। সরকারি আইনজীবীদের অভিযোগ, নাজিব ওই তহবিলের ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নেন।
 
দুর্নীতির কারণে দেউলিয়া হয়ে যায় ওয়ানএমডিবির শাখা এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল। প্রায় এক কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি নাজিবের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। মামলায় বিশ্বাসভঙ্গের অপরাধ, অর্থ পাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। যথারীতি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন নাজিব।
 
দুর্নীতির কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে নাজিবের দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) নেতৃত্বাধীন জোটের ভরাডুবি হয়। অপ্রত্যাশিতভাবে জিতে যায় ইউএমএনওর সাবেক নেতা মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন নতুন জোট পাকতান হারাপান।
 
সাবেক রাজনৈতিক শিষ্য নাজিবের দুর্নীতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ান ইউনাইটেড ইন্ডিজেনাস পার্টি গঠন করে আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পিপলস জাস্টিস পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করেন মাহাথির। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নাজিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মাহাথির।
 
কিন্তু দুই বছর পর জোট সরকারের মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হলে মাহাথির প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ক্ষমতায় ফেরার জন্য তৎপরতা চালালেও তিনি ব্যর্থ হন। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নাজিব রাজাকের দলের সমর্থন নিয়ে জোট সরকার গঠন করেন মাহাথিরের দলের উপপ্রধান মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। অনেকটা মাহাথিরকে পাস কাটিয়েই প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। এতে নাজিবের দল আবারও সরকারের অংশ হয়ে যায়।
 
ফলে নাজিব পার পেয়ে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছিল। কারণ মালয়েশিয়া সরকারকে সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে নাজিবের সৎ ছেলে রিজা আজিজকে ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়। নাজিবের ঘনিষ্ঠ মিত্র মুসা আমানকেও একাধিক অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হয়।
১০ বছর দাপটের সঙ্গে দেশ চালিয়েছিলেন নাজিব রাজাক। দীর্ঘদিন তাকে রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণির সদস্য হিসেবে গণ্য করা হতো। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই রাজনীতিতে তার প্রভাব নিম্নমুখী হতে শুরু করে।
 
ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুই বছরের তদন্ত ও শুনানি শেষে ২০২০ সালে জুলাইয়ে তাকে ৫ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা ও ১২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। সবশেষ মঙ্গলবারের রায়ে আগের সেই দণ্ডই বহুল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্ট।

এমএসএম / জামান

জেদ্দায় উদ্বোধন হলো 'মেইড ইন বাংলাদেশ' একক এক্সপো- ২০২৫

জেদ্দায় বাংলাদেশ সহ ১৬টি দেশের অংশগ্রহণে উদ্বোধনী হলো অ্যাগ্রোফুড এক্সপো ২০২৫

সৌদি আরবের ওয়ার্ল্ড ট্রেড এক্সপো -২০২৫ এ বাংলাদেশের সগৌরব অংশগ্রহণ

জেদ্দায় উদ্বোধন হলো ৩য় সৌদি ফ্যাশন এন্ড টেক্স এক্সপো

কাতার মাইজারে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

কাতারে লক্ষ্মীপুর জেলা সমিতি উদ্যোগে বিনামূল্যের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়েছে

সৌদিআরবের ফ্যাশন এক্সপোতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণে বাড়ছে ব্যানিজ্য সম্পর্কের সম্ভাবনা

জেদ্দায় নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

প্রথমবারের মতো সৌদিতে একক "মেইড ইন বাংলাদেশ " এক্সপো মেলা ডিসেম্বরে

বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের মর্যাদা ও স্বীকৃতি সংক্রান্ত স্মারকলিপি প্রদান

মরহুম হারিছ চৌধুরীর ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কাতারে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল

কাতার যুবদলের সাথে কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নার মতবিনিময়

কাতারে ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও নবীন সদস্য সম্মেলন