ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

আমিই ডিম ব্যাচতে পারি


সাহিত্য ডেস্ক photo সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০-৯-২০২২ দুপুর ৪:৩০

 হ্যারে, তোর মা কই? 
মায়রে লাগবো না, আমিই ডিম ব্যাচতে পারি। কী লাগবে কন। 
আমার চোখ গোল গোল। 

 ডিমের ডজন কত? 
 নব্বই ট্যাকা
এক ডজনে কয়টা ডিম হয়? 

উত্তর নাই। চোখ কুঁচকে গ্যাছে। পাশে বসা ছোট বোনের দিকে তাকিয়ে, "ব্যাডায় আমার পরীক্ষা লয়।"

কি রে জানোস না? 
এবার সে মহাবিরক্ত। 
বারোডায় এক ডজন। গজগজ করে তার গলা।

 ডিম পচা হবে না তো? 

উত্তর নাই। পাশে বাসা ছোট বোন এবার মুখ খোলে। না, না, মায় বাইছা বাইছা আনে। কোনো পচা নাই। বড় বোন কড়া চোখে তাকায়। ছোট বোন চুপসে যায়। আর কথা নাই। 

আমার তাড়া আছে। 
দাও এক ডজন, বড় বড় দেখে দাও। 
এবার অতি যত্নে একটা পলি ব্যাগ তোলে। ফু দিয়ে জোড়া লাগানো মুখটা মেলে ধরে। গুনে গুনে ডিম তোলে। ধীরে ধীরে ব্যাগে রাখে। ৬টা ডিম ভরার পর আবার গোনে। ৬ টা হলো তো! 

ছোট বোন টিপ্পনী কাটে, "আরে হ, ৬টাই হইছে, আমিও গুনতাছি।" বড় বোন চোখ মটকায়। আরো ৬টা ডিম ব্যাগে ঢোকে অতি সতর্কতায়। ব্যাগের মুখে একটা দক্ষ গিট্টু দেয়া হয়। এই গিট্টু সে আগেও দিয়েছে। আঙুলে ছন্দ আছে৷ মেহেদী দেয়া দুই হাত সন্তর্পনে বাগিয়ে ধরে গ্রাহকের দিকে। হাত তার কাঁপে না। এই হাতে সে সংসারের হাল ধরে রাখে৷ কাঁপলে চলবে না। 

আমি লেনদেন শোধ করি। আমার তাড়া আছে। এগিয়ে যাই। হঠাৎ পেছনে শুনতে পাই, "আমি যখন কাস্টমারের সাথে কথা কই তুমি মুখ খুলবা না, বুঝলা?" আমি মাথা না ঘুরিয়ে পারি না। ছোট বোন চুপসে আছে। বড় বোন টাকাটা গুনছে৷ তার মুখে ভোরের আলো আর বিশ্বজয়ের হাসি।


হাসিবুল ইসলাম বাপ্পি
ফেসবুক থেকে। 

এমএসএম / এমএসএম