সুনামগঞ্জে সাংবাদিক নামধারী ছদ্দবেশী নেতাদের ভুয়া সংবাদে বিভ্রান্তিতে জনগণ
সুনামগঞ্জ জেলায় দিন দিন বাড়ছে সাংবাদিকের সংখ্যা! কিছু অপেশাদার ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তি ছদ্দবেশে সাংবাদিক মহলে প্রবেশ করছে। এদের মধ্যে সরকারবিরোধী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছে। আর এদের সামান্য টাকার বিনিময়ে নিজেদের অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য আশ্রয় দিয়ে সাদরে গ্রহণ করছেন কিছু সম্পাদক নামধারী প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিকরা। এ কারণে দিন দিন সাংবাদিক সমাজ কলঙ্কিত হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলায়। সুশীল সমাজের কাছে এখন সাংবাদিকরা গেলে সাংবাদিক নাম শুনলেই ভয়ে ক্ষেপে ওঠেন তারা।
লোকসমাজে প্রতিনিয়ত ঘঠে চলেছে সাংবাদিক নামধারী অসাংবাদিকদের চাদাঁবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড। ফলে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন প্রশাসনসহ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষজন। অন্যদিকে মূল ধারার সাংবাদিক পেশার গণমাধ্যমকর্মীরা পড়ছেন নানান প্রশ্নের মুখে। সাংবাদিক সমাজ হয়ে উঠছে এখন ক্ষমতার আরেক নাম? রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা এখন প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা কাটানোর জন্য কিছু স্বার্থলোভী সম্পাদককে টাকা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে পরিচয়পত্র। আর এসব পরিচয়পত্র কার্ড গলায় ঝুলিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাদাঁবাজি যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এছাড়াও সাংবাদিক সামাজে ছদ্দবেশে প্রবেশ করছে মাদকাসক্ত ও দেশবিরোধী চক্রের আমলারা। এদের আশ্রয় দিচ্ছে সম্পাদক নামধারী কিছু অর্থলোভী সম্পাদক, যারা অনৈতিকভাবে সাংবাদিকতা করে অল্পদিনে বনে যাচ্ছেন কোটিপতি! বানাচ্ছেন বিশাল বাড়ি ও কিনছেন লাখ টাকার গাড়ি। সাংবাদিকতা করে অল্পদিনে কিভাবে লাখপতি হওয়া যায়- এমন প্রশ্ন এখন সমাজে রিতিমতো চলছে প্রতিনিয়ত?
সাংবাদিকতা হচ্ছে মহান পেশা যে পেশাকে মানুষ সম্মানের চোখে দেখে সম্মান করবে কিন্তু সুনামগঞ্জ জেলা এখন সাংবাদিক পেশা যেন এক ভয়ঙ্কর পেশায় রূপ ধারণ করছে! সাংবাদিক নাম শুনলেই মানুষ এখন ভয় পায় এবং ঘৃণার চোখে দেখে! কিছুদিন পর দেখা যায় চাদাঁবাজি করতে গিয়ে মাতাল অবস্থায় সাংবাদিক নামধারী কিছু অসাংবাদিকদের জনগণ আটকে গণপিটুনি দেয় আর সাংবাদিক নামের সম্মান বজায় রাখতে কিছু অসাংবাদিকদের জন্য সাংবাদিক সমাজ মানববন্ধন, আন্দোলন করে অসাংবাদিকদের ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করে দেন।
অন্য দিকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিপাকে পড়ে সাংবাদিক সমাজের সম্মান অক্ষুন্য রাখতে অসাংবাদিকদের সহযোগিতা করেন তেমনটি চলছে বর্তমানে? প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় দেখা যায় সাংবাদিক নামধারী অসাংবাদিকদের তথ্যবিহীন সংবাদ প্রকাশের ধুম্রজাল যার কারনে হয়রানির শিকার হচ্ছে জনগনসহ কিছু সরকারী অফিস ও নিরপরাধ কর্মকর্তারা। পত্রিকার পাতায় দেখা যায় আগের দিন নিউজ পরদিন প্রতিবাদ। এ যেন এক নতুন ব্যবসা শুরু হয়েছে? ঐ সমস্ত অসাংবাদিকতা থেকে সাংবাদিক সমাজকে বেড়িয়ে আসতে হবে? অন্যতায় এভাবে চলতে থাকলে দিন দিন সাংবাদিক সমাজ যেমন কলঙ্কিত হচ্ছে তেমনি সাংবাদিকতার মহান পেশা একদিন ধ্বংস হয়ে দেশ ও জনগণের অকল্যাণ বয়ে আনবে।
কয়েক মাস সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে জানা যায় কিছু সাংবাদিক নামধারী অসাংবাদিকদের অনৈতিক কর্মকান্ডের ইতিহাত। অনেক জায়গায় গিয়ে লজ্জায় অনেক সাংবাদিকদের মাথা নিছু হয়ে ফিরে আসতে হয় ঐ সমস্ত অসাংবাদিকদের কারনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীসহ জনপ্রতিনিধিরা জানান, ইদানীং নাকি কিছু নতুন সাংবাদিক বিভিন্ন অফিসে গিয়ে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে তাদের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় পত্রিকায় মিথ্যা নিউজ করে জনগনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছে প্রতিনিয়ত। অনেকে জানান কয়েক মাস আগে সুনামগঞ্জ শহরে কলেজে রাস্তাঘাটে যাদের দেখেছেন কিছু দিন পরপর সরকারবিরোধী আন্দেলন করে ছাত্রদের নিয়ে নিয়মিত রাজপথে স্লোগান দিয়ে জনগণের মাঝে এবং প্রশাসনের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছিল, তারা এখন সাংবাদিক হয়েছে। কয়লা ধুয়ে যেমন ময়লা যায় না তাদের বেলায়ও ঘটে চলেছে এখন তেমনটি। কতিপয় সাংবাদিকের হাত ধরে সাংবাদিকতার কার্ড গলায় ঝুলিয়ে দেশ ও জাতির মধ্যে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে জনগনের মাঝে ভিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাদের এখন নিত্যদিনের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, কিছুদিন আগে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এক ক্ষতিপয় সাংবাদিক নামধারী ছাত্র ইউনিয়নের এক চিহ্নিত নেতা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সদর হাসপাতালে তার এক আত্নীয়কে নিয়ে চিকিৎসার জন্য গেলে অধীক রোগী থাকায় থাকে রোগীদের একটি বেড (সিট) দিতে না পাড়ায় সে নার্সদের সাথে অসাধআচরণ করে এবং কি ভাবে চাকুরী করে দেখে নিবে বলে সাংবাদিকতার দাপট কাটিয়ে আসে। পরের দিন একটি জাতীয় পত্রিকায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে মিথ্যা কাল্পনিক নিউজ করে। যা সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
এছাড়াও যানা যায়, দীর্ঘদিন যাদু কাটা নদী বন্ধ থাকার পর সরকার শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে কর্মহীন শ্রমিকদের জন্য যাদুকাটা নদী ইজারাদারের মাধ্যমে খুলে দিয়েছেন সেখানে গিয়ে শ্রমিক বিরোধী চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে হাজারো শ্রমিকদের ভাগ্যে কুড়াল মারার ফন্দি করে করোনা কোভিড-১৯কে পুজিঁকরে করোনার দোহাই দিয়ে (ভারতের নাগরিকরা এসে বাংলাদেশে কাজ করে এমন একটি মিথ্যা কাল্পনিক বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করে, যা সাধারণ মানুষসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে চলেছে।
কিছুদিন আগে আদালত বিভ্রান্তিকর নিউজের জন্য সুনামগঞ্জ কয়েকজন সাংবাদিককে তলব করেছেন বলেও জানা যায় এবং সেই সমস্ত বিভ্রান্তিকর সাংবাদিকদের মাঝে সেও আছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করে। এভাবে চলতে থাকলে সাংবাদিক সমাজ ধংশ হয়ে যাবে এমনটি যানা যায় মুল ধারার সাংবাদিকদের কাছ থেকে। এদেরকে খুজে বের করে সাংবাদিক সমাজ থেকে বিতাড়িত না করলে দেশ ও সামাজের উন্নয়ন কাজে বারবার বাধাগ্রস্ত হবে এমনটাই সমালোচনা করছেন সূশীল সমাজ ও প্রকৃত সাংবাদিক মহল । প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমটি দাবী ভোক্তভোগী মানুষের।
এমএসএম / জামান