সলঙ্গায় পরিত্যক্ত হোটেলে রমরমা মাদক ব্যবসা
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ঢাকা বগুড়া মহাসড়কে হাটিকুমরুল বুড়ির বাড়ি নামক স্থানে বন্ধ থাকা একতা হোটেলে দীর্ঘদিন যাবৎ সাহেবগন্জ দত্তকুশা এলাকার কুখ্যাত হারুন জুয়ারুর ছেলে লিটনের বিরুদ্ধে চোরাই তেল ও ভলকানাইজিং ব্যবসার অন্তরালে রমরমা মাদক ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে।
জানা জায়, কালিপুর এলাকার আবু সাঈদ প্রফেসর এর জায়গা ভাড়া নিয়ে রুহুল আমিন হোটেল ব্যবসা শুরু করলেও তিনি কয়েক মাস আগে হোটেলটি বন্ধ করে দেয়। হোটেলটি পরিত্যক্ত হওয়াই লিটন ও একাধিক মাদক মামলার আসামি দত্তকুশা এলাকার আকবরের ছেলে রুবেল মাদকের অখড়ায় পরিণত করে। এবং হোটেল পাহারার দায়িত্বে থাকা মামুন নামের এক যুবক মাদক সেবন ও জুয়া খেলতে নিষেধ করায় সামান্য সেলাই রেঞ্জ চুরির অপবাধ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে এবং হোটেল থেকে তাড়িয়ে দেন।
প্রায় ২ মাস আগে একতা হোটেলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কোন গাড়ি সেখানে না দাড়ালে ও হারুন জুয়ারুর ছেলে লিটন সরকার সেখানেই থাকেন সবসময়। তেলের ড্রামে তেল না থাকলেও এবং ভলকানাইজিং এ চাকা কেউ না সারলেও রাত দিন চব্বিশ ঘন্টায় খোলা থাকে ভলকানাইজিং ও চোরাই তেলের দোকান । লিটন ও তার সহযোগিরা পরিত্যক্ত হোটেলটিকে মাদকের আখড়ায় পরিনিত করে এবং একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাই ও ডাকাতি চক্র ও গড়ে তোলেন।
নির্যাতনের শিকার মামুন নামের ঔ যুবক বলেন, হোটেলটি বন্ধ হওয়ার পর আসবাবপত্র পাহারার জন্য হোটেল মালিক রুহুল আমিন আমাকে দায়িত্ব দেয়। বিভিন্ন সময় লিটন বিভিন্ন লোকজন এনে মাদকসেবন ও মাদক বিক্রিসহ ফাকা ঘরগুলো জুয়ার আসর বসায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন নিয়ে এসে রাতে ছিনতাই ও ডাকাতিও করে। আমি এসব জেনে ফেলায় এবং হোটেলে মাদকসেবন ও বিক্রি বাধা দেওয়ায় আমাকে সামান্য একটি নাট খোলার চেলাই মেশিন চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বেরধরক মারপিট করে আমাকে হোটেল থেকে তারিয়ে দেয়। এ বিষয়ে আমি থানাতেও অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম কিন্তু হারুন ও কিছু লোকজন মিমাংসা দিতে চাইলে আর অভিযোগ দেয়নি।
তথ্য অনুসন্ধানের জন্য প্রতিবেদক কৌশলে গাড়ির ড্রাইভার সেজে মুঠো ফোনে তেল বিক্রি ও ইয়াবা কিনতে চাইলে লিটন অকপটে স্বীকার করেন এবং তেল বিক্রি করার পর ৫ মিনিট সময় দিতে হবে বলে জানান, যা চাইবেন তাই পাবেন শুধু মিনিট পাঁচেক সময় দিতে হবে ,তাহলেই নাকি মিলবে ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক। জায়গায় মালিক, আবু সাঈদ প্রফেসর বলেন, হারুন ও হারুনের ছেলে লিটন বাপ-বেটা দুজনই খারাপ - আমি জায়গা ভাড়া দিয়েছি আপনারা হারুন ও হারুনের ছেলেকে জিগ্যেসাবাদ করেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।বুড়ীর বাড়ি এলাকার আশরাফুল ইসলাম নামের এক দোকানী বলেন, চেলাই চুরির অপবাদ দিয়ে মামুন কে মারধর করেছে শুনেছি বিষয়টি নিয়ে হারুন জুয়ারু নাকি মামুনের কাছে মাফ ও চেয়েছেন।
আব্দুল বারিক নামের একজন বলেন, লিটন গাড়ি থেকে চোরাই তেল কেনা বেচা করেন মাদক ব্যবসা করেন কিনা আমার জানানেই তবে জুয়া তাদের পরিবারিক পেশা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দত্তকুষা এলাকার অনেকেই বলেন, হারুন এই এলাকার বিখ্যাত জুয়ারু তার ছেলে লিটন বাপ-বেটা দুজনই খারাপ। হোটেলটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় তেল ও ভলকানাইজিং ব্যবসার অন্তরালে মাদকের অখড়ায় পরিণত করেছে।সন্ধ্য হলেই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেশাখোর অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যায়। সম্প্রতি এই হোটেলের সামনে থেকেই ডাকাতির প্রস্তুতি কালে হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশ হাটিকুমরুল হাসানপুর এলাকার জুয়েলের ছেলে মোস্তফাকে দেশীয় অস্রসহ আটক করে এবং বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়।
লিটন ও তার বাবা হারুনের জন্য এলাকায় মাদক ও জুয়া খেলা, ছিনতাই বেড়ে গেছে এবং এইখানে মাঝে মধ্যে ছিনতাই ও ডাকাতির মত ঘটনাও ঘটছে।প্রসাশনের কাছে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি লিটন ও তার বাবা কুখ্যাত জুয়ারু হারুনকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরী। সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, মাদক বিক্রি ও জুয়াখেলা বন্ধে সলঙ্গা থানা পুলিশ বদ্ধপরিকর, মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকেউ ছাড় দেওয়া হবে না। বিষয়টি জানতাম না, যদি মাদকের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকে তবে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে ।
এমএসএম / জামান