ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত


শাহেদ ফেরদৌস হিরু, কক্সবাজার photo শাহেদ ফেরদৌস হিরু, কক্সবাজার
প্রকাশিত: ২৫-১০-২০২২ বিকাল ৫:৩১
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাতে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে চিংড়ি ঘের, ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি। জোয়ারের পানির তীব্রতায় ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভাঙনের কবলে পড়েছে মেরিন ড্রাইভ সড়ক। তবে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত জোয়ারের পানি থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। তবে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন।
 
জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, জেলার ৮ উপজেলার ৪১ ইউনিয়ন ও তিনটি পৌরসভার ১ লাখ ১০ হজার ৭৫৯ বাসিন্দা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছে। যেখানে ১৯১ টি ঘর সম্পূর্ণ  বিধ্বস্ত হয়েছে এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৭৩২ টি ঘরের। এবং সোমবার রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে জরুরি আশ্রয় নিয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৫৭০ জন বাসিন্দা। মঙ্গলবার  আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সবাই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন লোকজন।
 
এদিকে সকাল থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় বিমান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. গোলাম মোর্তজা হোসেন।
 
জানা যায়, গত রোববার সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’ এর প্রভাবে বাতাসের গতি বাড়তে থাকে। একই সাথে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার রাতে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো। জোয়ারের পানির তিব্রতায় টেকনাফের সেন্টমার্টিনে কোস্টগার্ড হতে নেভী ঘাট সড়ক এবং বাজারপাড়া সড়কের ৯৫ ভাগ ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে তৈরি করা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ও স্থানীয়দের প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি। এ পর্যন্ত প্রায় ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুটি ট্রলার সাগরে তলিয়ে গেছে। 
 
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, দুটি সড়কে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবত ঘর পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে খাদ্যদ্রব্য এবং বাতাসে উড়ে গেছে টিনের ছাউনি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আমরা ক্ষতি মোকাবেলার চেষ্টা করছি।
 
জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার টেকপাড়া, সমিতি পাড়া, নুনিয়ারছড়া এলাকা। এসব এলাকার বাড়িঘরে হাঁটু পরিমাণ পানি ঢুকে গৃহস্থলী জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়েছে। তবে সড়ক ব্যবস্থার তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহেশখালীর মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া, ধলঘাট এলাকায়। জোয়ারের পানির তিব্রতায় মাতারবাড়ি-চাইল্লাতলী সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একই ইউনিয়নের কুহুলিয়া নদীর ধারাখাল রাস্তা, ওয়াপদা পাড়া (বান্ডি সিকদার পাড়া), ৫ নং ওয়ার্ডের সাইটপাড়া, জেলেপাড়া, বানিয়াকাটা এবং জালিয়াপাড়া এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি। এসময় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। শুধু রাতে নয়, মঙ্গলবার সকালেও জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় এসব এলাকা। 
 
মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হায়দার বলেন, রাতে জোয়ারের পানির তিব্রতায় বেড়িবাধ ভেঙ্গে ইউনিয়নের ৬টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৫’শতাধিক ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে রয়েছে। সকালে স্থানীয়দের নিয়ে পূর্বপার্শ্বের ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ রক্ষা করেছি। তবে, যেভাবে বসতবাড়ির ক্ষতি হয়েছ তা পুষিতে নিতে প্রশাসনের সহযোগিতা জরুরি। একই সাথে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানান তিনি।
 
এছাড়া পেকুয়া উপজেলার মগনামা-রাজাখালী, কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল পাগলির পাড়া আর কাহারপাড়, লেমছিখালী হাবিউল্লাহর দোকন এলাকা, কৌয়ারবিল ঘিলাছড়ি থেকে ডিন্দাপাড়া পর্যন্ত, দক্ষিণ ও উত্তর ধ্রুং পশ্চিমপার্শ্বে সহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
 
পানি উন্নয়ন বোর্ডে কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, দু’একটি এলাকা ছাড়া এ পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য এসেছে তাতে বাঁধের মেজর কোন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে প্রকৃত তথ্য পেতে আমাদের দু’একদিন সময় লাগবে। এখন আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে বের হয়েছি। ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারের পাশপাশি সবগুলো বাঁধ উঁচু করার সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।
 
কক্সবাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আনিসুর রহমান বলেন, সকালের জোয়ারের পানি থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। তবে যে তথ্য আসছে সেখানে দেখা যাচ্ছে পেকুয়া উপজেলার মগনামা-রাজাখালী সড়ক, মহেশখালী মাতারবাড়ি এলাকার সড়ক এবং সেন্টমার্টিনের কয়েকটি সড়কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখবো আর কম হলে আমরা ব্যবস্থা করবো।
 
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানতে আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। আশা করি কাল (বুধবার) সকালের মধ্যে আটটি উপজেলার তথ্য আমরা পেয়ে যাব। তখন হয়তো ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। তবে জনস্বাস্থের ঝুঁকি হয় এমন কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই।
 
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: জাহিদ ইকবাল বলেন, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তিতে করে জেলার ৮টি উপজেলার ১৯১টি পরিবার তাদের ঘর হারিয়েছেন। আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৩২ টি পরিবার। তবে এখনো চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি। সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো তদারকি করে প্রতিবেদন দিলে বুঝা যাবে ক্ষতিটা কেমন হয়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

এমএসএম / জামান

কোন লুটেরা, চাঁদাবাজ ও বল প্রয়োগকারীকে ভোট দেবেন না; গণসংযোগে রাশেদ খান

খানসামা টিটিসিতে ধর্মীয় বৈষম্য–নির্যাতনের অভিযোগ: জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে তদন্ত আবেদন

কেরুজ ভোটের দাবীতে আন্দোলনের শুরুর দিনেই দুপক্ষের মারামারি

নওগাঁয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ধলু’র উদ্যোগে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল

কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন

নৈয়াইর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাহার

রামগঞ্জে যুবদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে বিএনপি কর্মী খুন

ঠাকুরগাঁওয়ের ফকিরপাড়া থেকে মটরসাইকেল চুরি : মামলা

কলাবাড়িয়া ইউনিয়নে দিনব্যাপী গণসংযোগে সরব জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার

কর্ণফুলী'তে হত্যা'সহ একাধিক মামলার এজাহার ভূক্ত আসামি সাজু হাসান গ্রেপ্তার

শীতের আগমনে লেপ তোষকের ব্যস্ততা; পলাশবাড়ীতে জমে উঠেছে ধুনকরদের শীতের বাজার

কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান

আত্রাইয়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে সেনা সদস্য নিহত