আধুনিক সভ্যতার যুগে মানবিকতা
সমাজ এবং দেশ যখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভাসছে, তখন অন্যপ্রান্তে ডুবে যাচ্ছে মানুষের সভ্যতা, শিষ্টাচার আর সৌজন্যবোধ। হারিয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা, মানবতা আর মনুষ্যত্ব। সমাজে এখন নেই ছোট-বড় পার্থক্য। নেই সম্মান আর স্নেহ। নেই গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি আর সৌজন্যবোধ। বলা যায়, শিষ্টাচারিতার স্থানটি প্রায় লোপ পেয়ে যাচ্ছে সমাজ থেকে। মানবিকতার মূলমন্ত্র হল, মানুষের কল্যাণ, জাতির কল্যাণ, সমাজের কল্যাণ, সাংস্কৃতিক কল্যাণ। মোট কথা মানুষের ভালো ভাবা, মানুষের জন্য ভালো কিছু করা, মানুষের উন্নতি সাধন করা। এবার আসি এই মানবিকতার অবক্ষয় বলতে আমরা বুঝি, ধ্বংস বা বিলুপ্ত। আমরা দেখতে পাই, আজ আর মানুষের মধ্যে সেই চিন্তা ধারা নেই বললেই চলে। যে মানুষ তার নিজের কথা না ভেবে অন্যের জন্য কিছু ভাবছে, কিছু করছে। এর বড় কারণ হল, শিক্ষা, শিক্ষার অভাবে মানুষ তার বিচার বুদ্ধিকে ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারে না। তাই সমাজের জন্য মানুষের জন্য কিছুই করতে পারে না। মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন। মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন কমে আসছে। মানুষ আজ এত ব্যস্ত যে কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছে না ফলে তাদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান ও হয় না।ফলে মানুষের ভেতরের, যে মানবিকতা সেটা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আজ আমাদের জীবনে স্মার্টফোনের ব্যবহার এত বেশি বেড়েছে যে ,মানুষ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চায় না বললেই চলে।যদিও কখনো বা মানুষ একত্রিত হয়, কোন জায়গায় সেখানে ও তাদের নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বেশি একটা হয় না বললেই চলে। কারণ সবার হাতেই থাকে ফোন। আর ওই ফোনের মধ্যেই তারা ব্যস্ত থাকে। এই কারণটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মানবিকতা অবক্ষয়ের পেছনে। তাছাড়া,আমাদের দেশে এত বেকারত্ব বেড়েছে যে তা কল্পনা করার বাইরে। আর বেকারত্ব দেশের থেকে না গেলে মানুষ কখনো নিজের কথা ছেড়ে অন্যের জন্য ভাবতে পারবে না।
কারণ উন্নতি করতে গেলে লাগে টাকা ,তাই স্বনির্ভরতা হতে হবে মানুষকে আগে আরো অনেক কারণের জন্য, আমাদের সমাজ ও দেশ পিছিয়ে পড়ছে। মানুষের মধ্যে মানবিকতার মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছে। যেগুলো বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে শেষ হবে না। পরিশেষে একটাই কথা বলব, মানবিকতা মানুষের জীবনের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। মানুষের এই মন্ত্র কে ধরে রাখতে হবে। তাকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। মানসিক অসুস্থতা সময়ের এক বড় ব্যাধি। অন্যান্য রোগের মতো এটারও সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। যাপিত সময়ের ভাঁজে ভাঁজে কত না সময়ের অব্যক্ত কথা রয়ে যায় সবার অগোচরে। এমন অনেক নাম, এমন অনেক অপরাধ, এমন অনেক ভয়ঙ্কর ঘটনা নিরন্তর ঘটেই চলেছে, যা শুনলে গা শিউরে উঠবে। ভিকটিম ঠিকমতো বিচার পায় না। আর অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় সমাজের আনাচে-কানাচে। দিনের পর দিন এসব জঘন্য অপরাধ ঘটেই চলেছে। মানুষ মানুষকে হত্যা করছে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করছে, এমনকি গায়ে দাহ্য বস্তু ঢেলে দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। সভ্য মানুষরা এসব নিয়ে ভাবেও না। নিজেদের স্বার্থ আর গা বাঁচিয়ে চলা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। পরিচিত কোনো মেয়ে যখন অ্যাসিড হামলায় ভয়ঙ্করভাবে জখম হয় তখন মেয়েটিকেই সবাই দোষারোপ করতে থাকে। তার চরিত্রের নানা দিক নিয়ে নানা বিশ্লেষণ শুরু হয়ে যায়, আর যে অপরাধ করল তার বিচার ঠিকমতো হয় না। সেভাবে দেখলে সে রকম কোনো শাস্তিই হয় না তার। কেস ফাইল হলো কিন্তু সে কেসের বিচার কত বছর ধরে চলবে তার কোনো ঠিকঠিকানা নেই, ততদিনে ভিকটিমের জীবনের মূল্যবান সময় শেষ হয়ে যায়। সাধারণত এই ঘটনাগুলো ঘটে থাকে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অথবা কুপ্রস্তাবে সঙ্গ না দেওয়ায়।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অ্যাসিড হামলায় আক্রান্ত মেয়েটি সমাজ সম্মুখে বের হতে পর্যন্ত পারছে না। এমনকি তার হতশ্রী রূপ দেখে মানুষ ভয় পাচ্ছে, আঁতকে উঠছে। এবং মেয়েটি লজ্জায়-অপমানে চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি থেকে জীবনের সবকিছু তিল তিল করে শেষ করে ফেলে। কিছুই করার থাকে না আর।
শুধু অ্যাসিড হামলাই নয়, মানুষ খুনের মতো ঘটনাও অহরহ ঘটেই চলেছে। অতিরিক্ত ভোগলিপ্সা ও কামনালিপ্সা মানুষকে আজ এই পথে এনে দাঁড় করিয়েছে। মানুষের চাওয়া ও পাওয়ার শেষ নেই। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই অসুখ নির্মূল করা বড্ড কঠিন। এ সময়ের এক মজ্জাগত অসুখে পরিণত হয়েছে। মানসিক সুস্থতাই একমাত্র এনে দিতে পারে এই চলমান সভ্যতার মানবিক মুখের খোঁজ। মানুষ কিছু চাইলেই যে, সেই জিনিস পেতেই হবে এমন তো নাও হতে পারে। সুন্দর চাঁদকে যদি কেউ পেতে চায়, তবে সেটা কি কারও পক্ষে সম্ভব হবে? এ ক্ষেত্রে মানসিক অসুস্থতাই প্রকট হয়ে ওঠে। মানসিক স্বাস্থ্য যদি ঠিক না থাকে তবে অপরাধ ও অপরাধী আমাদের সামনে দিয়ে এমনভাবেই ঘুরে বেরাবে। সবার আগে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। সব ক্ষেত্রে হয়তো বুঝে ওঠার আগেই ঘটনা ঘটে যায়, সেই অর্থে তখন কিছুই আর করার থাকে না কারও। তবে এটা ভেবে বসে থাকলে তো এই সমস্যার সমাধান কোনোদিনই মিটবে না। বাইরে থেকে মানুষকে দেখলে বোঝার উপাই থাকে না, কে সুস্থ বা কে অসুস্থ? এ ক্ষেত্রে নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। সব সময়ই যে পাশে থাকা মানুষটি আমাদের সমস্যা বুঝতে পারবে এমনটা নাও হতে পারে। নিজেই যদি নিজেদের আচরণ সম্পর্কে কিছুটা সচেতন হতে পারি তবে বোধ করি নিজেই নিজেদের অনেক সমস্যা সমাধান করে উঠতে সক্ষম হব। বিভিন্ন রোগের মতো মানসিক রোগ চলমান সভ্যতার একটা বড় অসুখে পরিণত হচ্ছে দিনের পর দিন। মানবিকতা আর অমানবিকতা পরস্পর একটি বিপরীতমুখী শব্দ। যেমন আলো ও অন্ধকার, ন্যায় ও অন্যায়। এগুলোর মধ্যে কোন বিষয়টাকে আমরা বেছে নেব। সেটা নিশ্চয় কারও বলে দিতে হবে না। ভালো-মন্দ বোঝর মতো বোধ ও বুদ্ধি সবারই আছে। অপরাধ আর অপরাধীর দ্বন্দ্ব বড় বিচিত্র।
সাইকোলজিক্যাল সমস্যাই মানুষকে ভুল পথে চালিত করে, অসুস্থ করে তোলে এমনকি ভয়ঙ্করতম অপরাধী পর্যন্ত হয়ে ওঠে মানুষ এভাবেই।
অন্যান্য রোগের যেমন ধারাবাহিক চিকিৎসা হয়, মানসিক রোগেরও নিরাময় সম্ভব চিকিৎসা করিয়ে। যে কোনো অপরাধ ও অপরাধীর জন্ম এই মানসিক অসুস্থতা থেকেই ঘটে থাকে। তাই তো সব বিপন্নতা ঘুচিয়ে মানবিক মুখের খোঁজে আমাদের যাত্রা শুরু করতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাদী সমাজে মানুষের মধ্যে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদ বেড়েছে। অহেতুক ঝামেলা এড়াতে চোখের সামনে নৃশংস ঘটনা ঘটলেও তাদের বোধ কাজ করছে না। আধুনিক সমাজব্যবস্থার কারণেও মানুষ ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে।রাজনৈতিক কারণে সমাজে অস্থিরতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে অপরাধের ধরনও পাল্টাচ্ছে। সমাজে নানারকম ঋণাত্মক উপকরণ ঢুকে পড়েছে। এ কারণে নৃশংস অপরাধের মাত্রাও বাড়ছে। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার কারণে মানুষের মাঝে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদ বেড়েছে। আগের মতো ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’ নীতিবাক্য মেনে চলার প্রবণতা আর নেই। কারণ হিসেবে অপরাধ বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করছেন, নগরায়ণ বাড়ছে। মানুষের কাছে অঢেল অর্থ আসছে। প্রতিযোগিতা বাড়ছে। মানুষ নিজেকে বেশি ভালোবাসছে এছাড়া কারো বিপদে এগিয়ে যাওয়ার পর পুলিশি বা আদালতে গিয়ে হয়রানি হওয়ার উদাহরণও রয়েছে। কিংবা কেউ একটা ভালো কাজ করলে তাকে যথাযথ মূল্যায়ন না করার কারণেও কেউ কারো বিপদে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করছে না। এমনকি অপরাধের পথ খুঁজতে গবেষণা নেই। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যারা কাজ করেন তাদের সঙ্গে একাডেমিক ব্যক্তিবর্গের কোনো যোগাযোগ নেই। সমাজে হিংস্রতা বেড়েছে। হিংস্রতা মানুষের তখনই বাড়ে যখন মানুষের মধ্যে ইমোশন বা ভ্যালুজ কমতে থাকে। মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখতে পাচ্ছি। আমাদের এখন মায়া-মমতা কমে গেছে, আবেগ কমে গেছে। সমাজে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বেড়েছে। মানুষের মধ্যে সামাজিক কোনো শিক্ষা নেই।
মডার্ন সোসাইটিতে মানুষের ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তার প্রবণতা বাড়ছেই। আমাদের এখানে সমাজ পুরোপুরি আধুনিক হওয়ার আগেই আত্মকেন্দ্রিকতার চরমে গিয়ে ঠেকেছে।এখন আর মানুষের আত্মশুদ্ধির বিষয় নেই। জীবনযাত্রা ক্রমেই জটিল হয়ে পড়ছে। মানুষের রুচি, স্বভাব ও জীবনযাত্রায় বিকৃতি বাড়ছে। তাদের কোমল অনুভূতি চলে যাচ্ছে, তারা ক্রমেই পাশবিক হয়ে আপন মানুষকে হত্যা করছে। এর পিছনে অনৈতিক লোভ, প্রতিযোগিতা, পরচর্চা ও পরকীয়ার কারণেই পারিবারিক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটছে। এমনকি সামাজিক অপরাধ বাড়ার পেছনে হতাশা, পরকীয়া, আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যাওয়া, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ইত্যাদি দায়ী। একই সঙ্গে প্রযুক্তির কারণে নর-নারীর মধ্যে এখন এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা কাজ করছে। আকাশ সংস্কৃতির কারণে মানহীন অনুষ্ঠান দেখে সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। মানুষের আচরণ ক্রমেই সহিংস হয়ে পড়ছে। আর এ পরিস্থিতিতে অনেকেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ছে সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্যক্তি সুবিচার পাবে না মনে করে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে। জনতা পথের মধ্যেই শাস্তি দিয়ে দেয় অপরাধীকে, পুলিশের ওপর আস্থা না থাকার কারণে। সমাজ যদি মানুষকে মানুষ করে না তোলে তবে সে অপরাধী, রাষ্ট্রও অপরাধী সেই সঙ্গে। সমাজে যদি অন্যায় থাকে এবং অন্যায়ের যদি শাস্তি না হয়, তাহলে মানুষের মানুষ হওয়া কঠিন হয়। সহজ হয় অপরাধী হওয়া। জেলখানা সংশোধনের প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে না। বরঞ্চ উল্টো দায়িত্ব পালন করে। কয়েদির গায়ে এমন দুরপনেয় ছাপ মেরে দেয় যে সে যখন বেরিয়ে আসে তখন উন্নত নয়, অবনত হয়েই বের হয়। সমাজে সে সম্মান পাবে আশা করে না। কেউ তাকে বিশ্বাস করতে চায় না। কাজ দেয় না। ফলে আবার সে অপরাধ করে। আবার জেলে যায়। আর নিবারণ? কারাভোগীর সংখ্যা তো শুধু বাড়ছেই, তাতে তো প্রমাণিত হচ্ছে না যে দণ্ড পেয়ে কয়েদি ভীত হচ্ছে কিংবা অন্যরা অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছে।
কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বললে বলতে হয়, সন্তানকে সময় ও সঙ্গ দিতে হবে, বয়ঃসন্ধিকালে তাদের চলাফেরা, সঙ্গীদল, আচরণ, কথাবার্তার দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে হবে। স্কুলে তাদের আনন্দময় সৃজনশীল চর্চার অবকাশ দিতে হবে। সমবয়সীদের সঙ্গে সুস্থ বিনোদন, নির্মল আনন্দ ও সৃজনশীল দলীয় কাজে উৎসাহ দিতে হবে। সরকারকে পরীক্ষামুখী মুখস্থবিদ্যার শিক্ষা থেকে সরে এসে সত্যিকারের পঠনপাঠনের জগৎ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অভিভাবককে অভিভাবকত্বের যথার্থ সমসাময়িক পাঠ নিতে হবে। পুলিশ বা বিচারক, বিধান বা উপদেশ, আইন বা ধমক, জেল বা বেতের বাড়ি বর্তমান সংকট থেকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে না বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত। এই সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে গেলে মানবিক মুখের প্রয়োজন সবার আগে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছু যদি ভেবে দেখতে শিখি এবং আমাদের উত্তরসূরিদের ভাবতে শেখায়, তবে দিন দিন সুস্থ সমাজ গঠনের দিকে সমাজ এগোতে পারবে। এবং এটা তখনই সম্ভব হবে যখন সম্মিলিতভাবে মানুষ সচেতন হতে শিখবে এবং মানবিক মূল্যবোধকে একে অপরের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হবে। মানবিকতাহীন আজকের এই সভ্য সমাজে দাঁড়িয়ে সত্যিই বড় লজ্জা হয়। এ কোথায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা? এত উন্নয়ন, এত উত্তরণ, এত চাকচিক্য, এত জৌলুস সব যেন এক মুহূর্তে ফিকে হয়ে যায়। একজন পিতামাতা তার আদরের সন্তানকে সর্বস্ব দিয়ে, স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানুষ করে তোলেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় সেই সন্তান বাবা-মায়ের খোঁজ পর্যন্ত রাখে না বা সামান্য টাকার বিনিময়ে বোঝাস্বরূপ মা-বাবাকে কোনো বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে দায়-দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে। সেই বৃদ্ধ বাবা-মায়েরও যে সন্তানদের কাছ থেকে মায়া-মমতা, ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার আছে তা তাদের তথাকথিত সুযোগ্য সন্তানরা ভুলেই যান। তাদের সুন্দর সাজানো গোছানো ফ্ল্যাটে বৃদ্ধ বাবা-মা বড্ড বেমানান হয়ে ওঠে। এটাও সেই অর্থে একটা জঘন্য ক্রাইম।সুতরাং বিভিন্ন বিশ্লষণ থেকে বলাই যায়, মানবিকতাহীন সমাজ কখনই সুন্দরের সোপান হতে পারে না।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
এমএসএম / এমএসএম