ঢাকা শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

২৭তম জলবায়ু সম্মেলন এবং বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ৭-১১-২০২২ দুপুর ১:১৮

প্যারিস চুক্তির অভীষ্ট তাপমাত্রাকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত করা এবং কোনোক্রমেই ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বাইরে যেতে না দেওয়ার জন্য র‍্যাচেট পদ্ধতি।জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে বলেছেন, এ পর্যন্ত জমা দেওয়া এনডিসির মাধ্যমে বিশ্বের তাপমাত্রা এ শতাব্দীর মধ্যে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে না। স্বপ্রণোদিত কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে লক্ষ্যমাত্রা পেশ করা হয়েছে, তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলেও বিশ্বের তাপমাত্রা এ শতাব্দীর মধ্যে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো বেড়ে যেতে পারে। নিজ উদ্যোগে হওয়ায় তথা আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জবাবদিহি কতটা থাকবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। অতীতের ইতিহাস বলে, ১৯৯৭ সালে জাপানে স্বাক্ষরিত কিয়োটো প্রটোকলে শিল্পোন্নত ৩৭টি দেশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর আইনি বাধ্যবাধকতা সহ চুক্তি করেছিল। সে চুক্তিতে অঙ্গীকার পূরণ না হলে জরিমানার বিধানও ছিল। অথচ সেই চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। কপ-২৭ নামে পরিচিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন মিশরের শার্ম আল-শেখে শুরু হবে। জলবায়ু পরিবর্তন কর্মীরা সম্মেলনে বড় প্রতিশ্রুতি দেয়ার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রধান নির্গমনকারীদের চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ সেন্টিগ্রেড মাত্রার নিচে রাখার জন্য কোনো নির্ভরযোগ্য পথ নেই।কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য সরকারের পরিকল্পনা এখনো অপর্যাপ্ত। পরিবেশবাদী নেতারা উন্নত দেশগুলোকে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে বলছে। সম্মেলনটি এমন এক সময় হচ্ছে যখন হর্ন অফ আফ্রিকা নামে পরিচিত সোমালিয়ায় রেকর্ড পরিমাণ খরা এবং দুর্ভিক্ষের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণের মাত্র ৪ শতাংশ আফ্রিকা থেকে নির্গত হয় তবুও মহাদেশটি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষ এবং আরও গুরুতর আবহাওয়া সংক্রান্ত পরিণামসহ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব ভোগ করছে। 

যেহেতু এ সকল বিপর্যয়ে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তাই কপ-২৭ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে পারে এমন বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলোর জন্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার একটি সুযোগ প্রদান করছে। নাইরোবিতে প্রকৃতি সংরক্ষণের নীতি ও সরকারি সম্পর্ক বিষয়ক আফ্রিকার পরিচালক মুহতারি আমিকু কানো ৩টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বিনিয়োগের তালিকা দিয়েছেনঃ প্রযুক্তিগত স্থানান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান, কারণ এই ৩টি উপাদান ব্যতীত এই আলোচনা অর্থহীন। বিজ্ঞানীরা বলছেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সুসমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের প্রয়োজন যেখানে প্রত্যেকের ভূমিকা পালন করতে হবে। গ্লাসগোতে গত বছরের কপ-২৬ সম্মেলনে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। শারম আল-শেখ সম্মেলনের আলোচনা অনেকে নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করবে। প্রথম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জার্মানির বার্লিনে ১৯৯৫ সালে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কপ-২১ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো প্যারিস চুক্তিতে অনুমোদন দেয়। এই প্যারিস চুক্তি ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় রাষ্ট্রসমূহের করণীয় নির্ধারনে একটি যুগান্তকারী চুক্তি যার অধীনে প্রতিটি দেশ কার্বন নি:সরণের মাত্রা হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন ব্যবস্থা সম্পর্কে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করবে, যা আসলে বৈশ্বিক উঞ্চতা “প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে” নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি সম্মিলিত এবং সমন্বিত উদ্যোগ। সেসময় সরকারগুলো বৈশ্বিক উঞ্চতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় রাখার মতো একটি উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় করণীয় ঠিক করতে আসন্ন শীর্ষ এই সম্মেলন। কপ-২৭ হল জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসি) কনফারেন্স অব দ্য পার্টির ২৭তম সভা। 

এই বার্ষিক সভাটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহনের উদ্দেশে আলোচনায় বসতে ইউএনএফসিসি কনভেনশনের ১৯৮ জন সদস্যকে একত্রিত করে থাকে। বৈঠকে, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন (গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস যা আমাদের এই পৃথিবীকে ক্রমশ উষ্ণ করে তোলে), জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশগত প্রভাবগুলির সাথে অভিযোজন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে মানিয়ে নিতে আরো দুর্যোগ সহনশীল হবার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহায়তার পথ চিহ্নিত করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যেমন খরা, অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য বিপর্যয়, অনিয়মিত বর্ষা এবং হিমালয়ের মতো পরিবেশগতভাবে ভঙ্গুর অঞ্চলে পরিবর্তিত জলচক্রের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন একটি অঞ্চল হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া। ২০২১ সালে প্রকাশিত চরম আবহাওয়া সংক্রান্ত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভারত বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো কেবল আরও গুরুতর এবং আরও তীব্র হয়ে উঠছে। শুধুমাত্র ২০২২ সালে, একাধিক চরম ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ায় আঘাত করেছে। পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা কমপক্ষে ৩৩ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করেছে এবং এতে কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই বছরের শুরুর দিকে, ব্যাপক বন্যা উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকাকে বাস্তুচ্যুত ও ধ্বংস করে।বৈশ্বিক উঞ্চতা সীমিত করা তাদের জন্য একটি জীবন-মৃত্যু সমস্যার  সামিল যারা চরম বৈরী আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে নিতে নিত্য সংগ্রাম করছে, অথচ এভাবে মানিয়ে নেয়ার জন্য তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নেই বললেই চলে। 

বেশিরভাগ উন্নয়নশীল বিশ্বের মতো, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো তাদের ধনী প্রতিপক্ষের আর্থিক সহায়তার উপর নির্ভর করে প্রশমন এবং অভিযোজন ব্যবস্থা উন্নত করাসহ প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই বছর মিশরে অনুষ্ঠিতব্য কপ ২৭-এ  জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নানা ক্ষয়ক্ষতি এবং লস অ্যান্ড ড্যামেজ প্রধান আলোচনার বিষয় হবে। পাকিস্তানও এই বছরের জলবায়ু আলোচনায় লস অ্যান্ড ড্যামেজ আনুষ্ঠানিক এজেন্ডায় থাকা উচিত বলে মনে করে। কপ ২৭ এ, উন্নত দেশগুলি আলোচনার সময় লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে তাদের অবস্থান পরিস্কার করার কথা রয়েছে। গত বছর জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২৬) অনুষ্ঠিত হয় স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে এবং শেষ হয় গ্লাসগো জলবায়ু ঐক্যমতের মধ্য দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে কয়লা বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিসহ জীবাশ্ম জ্বালানিতে ভর্তুকি বন্ধ করা। কপ ২৬ এ প্যারিস রুলবুকটিও চূড়ান্ত করা হয়, যা আর্টিকেল ৬ নামে পরিচিত যার মধ্য দিয়ে কার্বন নিঃসরণ বাণিজ্যের পথ প্রশস্ত হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কপ ২৬ ছিল একটি বড় হতাশার জায়গা, কারন এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে স্থায়ী এবং অপরিবর্তনীয় ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। অথচ গত বছর এই ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতিই হয়নি। গ্লাসগো সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতি এবং লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলার প্রয়োজনীয়তা কথা স্বীকার করলেও, তা কাটিয়ে উঠতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার বিষয়ে কোনাে সুষ্পষ্ট দিক নির্দেশনা ছাড়াই শেষ হয় সেবারের আসর। কপ-২৭ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহনের ক্ষেত্রে একটি বাঁচা-মরার মুহূর্ত। পৃথিবী এই মুহুর্তে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় রাখার মতো অবস্থায় নেই। 

আর গত বছরের প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির পরে এই বাস্তবতা আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। কোভিড-১৯ এর ফলে সৃষ্ট চলমান অর্থনৈতিক প্রভাব, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ, এবং বিভিন্ন দুর্যোগের আকারে জলবায়ু পরিবর্তনের বাড়তি প্রভাবের ফলে জলবায়ুতে কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে আনাসহ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য বিশাল বাধা সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় প্যারিস চুক্তিটি অপ্রাসঙ্গিকতার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।একটি সফল কপ ২৭ যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলিকে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য অপরিহার্য। প্যারিস চুক্তিতে সর্ব প্রথম উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষতির কথা গৃহীত হয়। নিঃসরণ হ্রাসের মাধ্যমেই যে এর সমাধান করা সম্ভব, তারও স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ধনী দেশগুলো তখন ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে সম্মত হয়েছিল। উন্নত দেশগুলোর সহায়তার প্রতিশ্রুতিটিই এবারের কপ সম্মেলনের কার্যতালিকায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। ২০০৯ সালে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি প্রশমনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উন্নত বিশ্ব বছরে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেবে। ২০২০ সালে ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু প্রায় তিন বছর পর এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর ভয়াবহ বন্যা ও দাবদাহের কবলে পড়েছে পাকিস্তান। বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনই এর কারণ। এর সুবাদে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩৪টি উন্নয়নশীল দেশের জোটের সভাপতি দেশ হিসেবে পাকিস্তান ক্ষতিপূরণের বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছে। যুদ্ধে উন্নত বিশ্ব কত অর্থ ব্যয় করছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার প্রত্যাশা করছে অনেক দেশ। আয়োজক মিসর সতর্ক করে দিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পেলে সম্মেলনকে ঘিরে আস্থার সংকট তৈরি হবে। নিরাশ হয়ে এবারের সম্মেলনে যাচ্ছেন না সুইডেনের তরুণ কিন্তু প্রভাবশালী জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। 

অন্যদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব এবারের সম্মেলনকে উন্নত বিশ্বের জন্য লিটমাস পরীক্ষার সঙ্গে তুলনা করেছেন। ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্ব জলবায়ু ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করলেও নগদ সহায়তার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানায়নি। আগামী বছর গুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষতিপূরণ নিয়ে উন্নত বিশ্ব চিন্তিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ইউক্রেনে রুশ সামরিক আগ্রাসনের জেরে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা সমস্যা দেখা দেওয়ায় উন্নত দেশগুলো নিজ নিজ অর্থনীতির দিকেই বেশি দৃষ্টি দিচ্ছে। শীর্ষ দুই দূষণকারী যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় দেশের ভূমিকা সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ হবে, যা আগেও ছিল যাইহোক জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে এবং বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান বাড়ছে।কোনও একটি জায়গায় আবহাওয়ার চরম আচরণ যেমন অতিবৃষ্টি বা অতিরিক্ত গরমের সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের যোগাযোগ খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা এখন সমর্থ হচ্ছেন। ফলে, এধরনের চরম আবহাওয়ার পূর্বাভাস ভবিষ্যতে সহজতর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কপ২৭ সফল হয়েছে তা বুঝার সময় এখনো হয়নি। তবে আয়োজক দেশ হিসাবে ব্রিটেন চাইবে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমাতে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমনের জন্য সমস্ত দেশ যেন নতুন করে অঙ্গীকার করে।অন্যদিকে, উন্নয়নশীল দেশগুলো আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য উল্লেখ যোগ্য পরিমাণ অর্থ চাইবে।এগুলোতে কোনো সুরাহা না হলে, কপ২৬-এর সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা নিশ্চিত করার জন্য হাতে খুব বেশি সময় নেই। তবে অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, বিশ্ব নেতারা জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্ব, ভয়াবহতা বুঝতে ইতিমধ্যেই অনেক দেরি করে ফেলেছেন।ফলে,মিশর সম্মেলনে যে প্রতিশ্রুতিই দেয়া হোক না কেন, তাপামাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেন শিল্প-বিপ্লব পূর্ববর্তী বিশ্বের তাপমাত্রার তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট 

এমএসএম / এমএসএম

জিনিস যেটা ভালো , দাম তার একটু বেশি

মব জাস্টিসের প্রভাবে বর্তমান বাংলাদেশ

সুস্থ জাতি গঠনে দরকার নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা

রাষ্ট্রভাষা বাংলা ও একুশে বইমেলা

বিশ্ব জলাভূমি দিবস: টিকে থাকার জন্য জলাভূমি সুরক্ষা এখন সময়ের দাবি

দেবী সরস্বতী: বিদ্যা, জ্ঞান, ও শুভ্রতার বিশুদ্ধ প্রতীক

স্বাস্থ্যসেবায় বায়োকেমিস্টদের অবদান: এক অপরিহার্য দৃষ্টিভঙ্গি

আতঙ্ক আর হতাশার মধ্যেই ট্রাম্পের যাত্রা

কন কনে শীতে অযত্নে -অবহেলায় কাটছে পথশিশুদের জীবন

দাবি আদায়ের প্রশ্নে আপসহীন ছিলেন সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদ

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ২০২৫: স্থায়ী শান্তির জন্য শেখা

জেন-জির হাত ধরে আগামীর নেতৃত্ব: সম্ভাবনা ও করণীয়

ব্রিটেনের রাজনীতিতে ছোট ভুলেও কড়া শাস্তি