যেদিন জিদানের ছায়ায় ঢাকা পড়েছিলেন রোনালদো
ফাইনাল শুরু হতে তখনো ৭২ মিনিট বাকি। কিন্তু হট্টগোল বেধে গেলে ধারাভাষ্যকক্ষে। কারণটাও স্বাভাবিক বটে! চার গোল ও পাঁচ অ্যাসিস্ট করা রোনালদো নাজারিওকে ছাড়াই কিনা ফাইনালের একাদশ সাজিয়েছে ব্রাজিল! তখন কেউই জানতো না এর পেছনে কারণ কী।
কয়েক বছর পর অবশ্য রহস্যের জট খুললো, ফাইনালের দিন বিকেলে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন রোনালদো। শরীরে খিঁচুনি উঠায় হাসপাতালে কাটাতে হয় প্রায় তিন ঘন্টা। তবে সব নাটকীয়তা পেছনে ফেলে ফাইনালের কিছুক্ষণ আগে ম্যাচ খেলতে রাজি হন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ব্রাজিলও তাই পরিবর্তিত একাদশ জমা দেয় ম্যাচ অফিসিয়ালদের কাছে। কিন্তু স্তাদে দে ফ্রান্সে রাতটা যে ছিল তার জন্য দুঃস্বপ্নের। সেই রাতের সবটুকু আলো কেড়ে নেন অন্য একজন।
নাম তার জিনেদিন জিদান। ফুটবল শৈল্পিকতার বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ দেন ফ্রান্সকে। তার একক আধিপত্যের ছায়ায় ঢাকা পড়ে যান রোনালদো। কিংবদন্তি এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের জোড়া গোলে ব্রাজিলকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের শিরোপাটা ঘরেই রেখে দেয় আয়োজক ফ্রান্স। ফাইনালের বাকি গোলটি আসে ইমানুয়েল পেতিতের পা থেকে।
মরক্কোকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আয়োজকস্বত্ব পেয়েছিল ফ্রান্স। প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ২৪ থেকে নেওয়া হয় ৩২-এ (এবার কাতার বিশ্বকাপ দিয়ে অবশ্য ইতি ঘটছে ৩২ দলের বিশ্বকাপের)। দলের সংখ্যা বাড়ায় প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার স্বাদ পেয়েছে চার মহাদেশের চার দেশ ক্রোয়েশিয়া, জ্যামাইকা, জাপান ও অনেক বছর নিষিদ্ধ থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এরপরও বাছাইপর্ব পেরোতে পারেনি পর্তুগাল, সুইডেন, চেক প্রজাতন্ত্র ও উরুগুয়ের মতো বড় বড় দল। নতুনত্বের কমতি ছিল না সেই আসরে। ‘গোল্ডেন গোল’ নিয়মের সঙ্গে সেবারই প্রথম পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। যাতে করে অতিরিক্ত সময়ে আক্রমণাত্মক খেলার অনুপ্রেরণা পায় দলগুলো।
রাজনৈতিক বৈরিতা চলা সত্ত্বেও একে অপরের বিপক্ষে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে মাঠে নেমেছিল ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। রিকি মার্টিনের গাওয়া ‘দ্য কাপ অফ লাইফ’ থিম সংটি হৃদয় জয় করে নিয়েছিল প্রায় সবারই।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি দুর্দান্ত ফর্মে থাকায় শিরোপার বড় দাবিদার ছিল ব্রাজিল। '৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের অনেকেই বুটজোড়া তুলে রাখলেও সেলেসাওরা ছন্দ হারায়নি। আরো নির্দিষ্ট করে বললে রোনালদো তা হতে দেননি। '৯৪ বিশ্বকাপে দলে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু মাঠে নামার সুযোগ পাননি এক ম্যাচও। তারই যেন ঝাঁজ মেটালেন '৯৮ বিশ্বকাপে এসে।
গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে স্কটল্যান্ড, মরক্কোকে হারালেও শেষ ম্যাচে নরওয়ের কাছে ২-১ গোলে হেরে অঘটনের শিকার হয় ব্রাজিল। কিন্তু ফাইনালে উঠার পেছনে আর কেউই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। শেষ ষোলোয় চিলিকে ৪-১ গোলে, কোয়ার্টার ফাইনালে ডেনমার্ককে ৩-২ গোলে ও সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখে সেলেসাওরা।
অন্যদিকে ফ্রান্স ছিল দুর্বার। অপরাজিত দল হিসেবেই ফাইনালে উঠে তারা। যদিও কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েছিল। তবে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলের জয়ে সেই বাধা পার করে স্বাগতিকরা। কিন্তু তাই বলে ব্রাজিলকে এত সহজেই হারিয়ে ফেলবে তা হয়তো কেউই ভাবেনি। স্তাদে দে ফ্রান্সে ২৭ মিনিটে দারুণ হেডে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন জিদান। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবারো টেকো মাথার স্পর্শে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল ফিরে আসার খুব একটা সুযোগ পায়নি। রেফারির বাঁশি বাজার ঠিক আগ মূহূর্তে সেলেসাওদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন পেতিত।
ফাইনালে নিজের সেরাটা দেখাতে না পারলেও 'গোল্ডেন বল' জেতার পথে রোনালদো ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। সর্বোচ্চ ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জেতেন ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ডেভর সুকের। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসেই ক্রোয়েশিয়ার সেমিফাইনালে উঠা এবং সুকেরের অসাধারণ কীর্তি; এখনো রুপকথার মতোই লাগে! তবে সবাইকে ছাড়িয়ে বিশ্বকাপের আকাশে সেবার সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা হয়ে জ্বলে ওঠেন জিদান।
প্রীতি / প্রীতি
একই বাসে চড়ে মাঠে গেলেন ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা
হালান্ডের জোড়া গোলে বিশ্বকাপে নরওয়ে, আবারও প্লে-অফে ইতালি
সেঞ্চুরিয়ান মিচেলকে নিয়ে অনিশ্চয়তা
মিচেলের সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাল নিউজিল্যান্ড
রিয়াল মাদ্রিদকে চার গোল দিলো বার্সেলোনা
১১ ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিলো চেন্নাই
ছোট ইনিংসেও রেকর্ড পান্তের
দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশকে জেতালেন সোহান
শততম টেস্টে ‘স্পেশাল’ সম্মাননা পাচ্ছেন মুশফিক
সিলেট টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ
দিনের শুরুতেই তাইজুলের আঘাত, জয়ের আরও কাছে বাংলাদেশ
দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ীকে নিয়ে শক্তি বাড়াল কলকাতা