ঢাকা রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫

তাড়াশে বাঁশশিল্পের কদর কমে যাওয়ায় দুর্বিষহ কারিগরদের জীবন


তাড়াশ প্রতিনিধি photo তাড়াশ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৩-৭-২০২১ দুপুর ৩:১৮

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের পল্লীতে বাঁশের তৈরি সামগ্রীর কদর কমে যাওয়ায় কারিগরদের জীবন চলছে দুর্বিষহ যন্ত্রণায়। বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে ধীরে ধীরে এই শিল্পের ঐতিহ্য কমতে শুরু করেছে। কেননা বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের পরিবর্তে মেশিনে তৈরি প্লাস্টিকসামগ্রীর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে গৃহিণীদের। তাই জনজীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশশিল্প। ঠিক এমনটাই দেখা গেছে উপজেলার বিনসাড়া, গুণ্টা, বস্তুলসহ কয়েকটি গ্রামে।

পূর্বে থেকেই আধুনিক মেশিনে তৈরি প্লাস্টিকসামগ্রী ও বর্তমানে ‘কোভিড ১৯’ করোনা ভাইরাসের কারণে এই শিল্পের অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় কারিগরদের সংসার চালাতে হচ্ছে অনেক কষ্টে। বাজারে এই পণ্যগুলোর কদর না থাকায় এই শিল্পের সাথে জড়িত জনগোষ্ঠীর লোকজন জীবনযাপন করছেন দুর্বিষহ যন্ত্রণায়। তাই অনেকেই বাপ-দাদার আমলের পেশা ত্যাগ করে ঝুঁকছেন অন্য পেশায়। বাঁশশিল্প আমাদের দেশীয় লোকসংস্কৃতি ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য বহন করে। সরকারি সহায়তা পেলে হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে পারে এ শিল্পের সাথে জড়িত থাকা এই উপজেলার কারিগররা।

উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাঁশের পণ্যসামগ্রী বানানো চলছে। গ্রামীণ একটি পরিবারের বিভিন্ন বয়সী লোক এ কাজ করছেন। এই উপজেলায় বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে অন্তত ৮০ থেকে ১০০টি হিন্দু ও মুসলিম পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। চালনা, কুলা, ডালি, টোপা, পাখা, ঝুড়ি, ঝাড়ুসহ চাঁই, টে‍ঁটা, বৃত্তি, খারি প্রভৃতি সামগ্রী তৈরি করছে বিক্রি করার জন্য।

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত বিনসাড়া গ্রামের মৃত কোরবান আলীর স্ত্রী শিউলী খাতুন জানান, আমরা এ পেশা করেই আমাদের সংসার চালাই। এই পরিবারগুলোর দরিদ্রতা নিত্যদিনের সঙ্গী। সব সময় অভাবে থাকি। বাঁশশিল্প বদলাতে পারেনি আমাদের ভাগ্য। আমাদের অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়। গত কয়েক বছরে বাঁশের দাম অনেক বৃদ্ধি পয়েছে। যেখানে একটা বাঁশ ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় কেনা হতো, এখন তা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় কিনতে হয়। ১টি বাঁশ দিয়ে ৩-৪টি ঝুড়ি তৈরি করা যায়। বাঁশের সামগ্রী বানানোর জন্য মুলিবাঁশ, তল্লাবাঁশ ও বইরাবাঁশ প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বাঁশের উৎপাদন কমে গেছে। বাঁশ সংগ্রহ করে কাজ করা এখন বেশ কঠিন। সারাবছরই বাঁশের তৈরি বিভিন্ন প্রকারের পণ্য হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়। এগুলো বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে আমাদের সংসার। 

শওকত আলীর স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, কাঠ ও বেতের পাশাপাশি আগে থেকেই বাঁশের জিনিস ব্যবহার করার অভ্যাস ছিল বাঙালিদের। বাঁশশিল্পের পণ্য ব্যবহার করত এই এলাকার মানুষজন । গ্রাম ও শহরে বাঁশের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা ছিল। বাঁশ দিয়ে প্রয়োজনীয় ও সৌখিন বিভিন্ন জিনিস বানানো হয়। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিকসামগ্রী থাকায় আমাদের এই জিনিসগুলোর কদর কমে গেছে। বর্তমানে আমাদের জিনিসগুলো বাজারে কম বিক্রি হওয়ায় আমরা অভাবে দিন কাটাচ্ছি।

ওই গ্রামের আরো একজন বুলবুল আহম্মেদ বলেন, সারাদিন পরিশ্রম করে দুজন মানুষ ১০টা ডালি তেলি করতে পারি। ১টা ডালি ১০০ টাকায় বিক্রি করি। ১০টা ডালি বিক্রি করে ১ হাজার টাকা পাই। তার মধ্যে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ হয়। বর্তমানে এলাকায় মাটি কাটার মেশিন ভেকু থাকায় এই ডালি বিক্রি হচ্ছে না। আবার করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা এ কাজকর্ম করছি না। তাই  আমাদের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এ কাজের সাথে জড়িত থাকা লোকজনের জীবন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। 

এ ব্যাপারে বারুহাস ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মোক্তার হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নের হিন্দু ও মুসলিম পরিবারের মধ্যে হস্তশিল্প ও কুটিরশিল্পের তৈরি করা জিনিসপত্রগুলোর ব্যাপক চাহিদা ছিল। কিন্তু এই সমস্ত হস্তশিল্প ও কুটিরশিল্পগুলো পৃষ্ঠপোশকতার অভাবেই আজ বিলুপ্তি হতে চলেছে। তাই এই হস্তশিল্প ও কুটিরশিল্পের শিল্পীদের দাবি- যদি সরকারিভাবে তাদের সহায়তা দেয়া হয় তাহলে তারা তাদের ঐহিত্যবাহী নানা বৈচিত্র্যের সামগ্রী তৈরিতে আবারো মনোযোহী হয়ে উঠবে। সরকারী সহযোগিতা পেলে হয়তো এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকদের টিকিয়ে রাখা সম্ভব। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারলে দেশের চাহিদা মেটনোর পর বাঁশের তৈরি সৌখিন পণ্যসামগ্রী বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন বিলুপ্ত শিল্পের প্রাণ ফিরে পাবে, তেমনি বহু বেকার পরিবারের কর্মসংস্থানের পথ উনন্মুক্ত হবে।

এমএসএম / জামান

মেহেরপুরে রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবসে আলোচনা সভা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান

বড়লেখায় দিনদুপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ২, টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার

কুতুবদিয়ায় সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা অর্ধগলিত মরদেহটি সনাক্ত হয়েছে

সিংড়ায় রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা রোধ করলেন সাব রেজিস্ট্রার

দাউদকান্দিতে খাল পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন

হাতিয়ায় নদী ভাঙ্গনের কবলে দুটি বিদ্যালয়, রক্ষার দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

রাণীনগরে চাকু ধরে ব্যবসায়ীর ৫লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ

কক্সবাজারে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, প্রাণ গেল চারজনের

মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছধরা উন্মুক্ত

বন রক্ষায় বন বিভাগকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে; পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

সিংড়ায় অজ্ঞাত লাশের রহস্য উদঘাটন, র‍্যাবের অভিযানে গ্রেফতার ২

হাটহাজারীতে সালিশি বৈঠকে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা অভিযোগ ; আটক ২

মনোহরগঞ্জে মডেল মসজিদ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন দুর্ভোগে মুসল্লিরা