ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

কক্সবাজারে আত্মস্বীকৃত ১০১ মাদক কারবারি মামলা, অস্ত্রে খালাস-ইয়াবায় কারাদণ্ড


শাহেদ ফেরদৌস হিরু, কক্সবাজার photo শাহেদ ফেরদৌস হিরু, কক্সবাজার
প্রকাশিত: ২৩-১১-২০২২ বিকাল ৫:৩৪
কক্সবাজারে আত্মস্বীকৃত ১০১ জন ইয়াবা কারবারিকে মাদক মামলায় দেড় বছরের সশ্রম  কারাদণ্ড ও অস্ত্র আইনে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস প্রদা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 
 
বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এই রায় দেন। রায় ঘোষণার আগে হাজতে থাকা ১৭ আসামীকে বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
 
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, চার্জশীটভূক্ত মোট ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে ২১ জন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্কে ইয়াবা মামলায় আসামীদের দেড় বছর সশ্রম কারাদণ্ড ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে অস্ত্র আইনের অভিযোগ প্রমাণীত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত আসামীদের খালাস প্রদান করেছেন।
 
তিনি বলেন, যেহেতু আসামীরা আত্মসমর্পণের পর দুই বছর কারাভোগ করেছেন সেহেতু হাজতে থাকা আসামীরা খালাস পেয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে। তারা জরিমানা দিয়ে মুক্তি পাবেন। আর যারা পলাতক আছে তাদেরকে অবশ্যই আদালতে হাজির হয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে খালাসের জন্য আবেদন করতে হবে।
 
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে যা বলেছেন-
 
আসামীরা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল এবং ইয়াবা ব্যবসায় বিনিয়োগ ও পৃষ্টপোষকতা করেছিল। এ অবস্থায় তাদেরকে মামলার দায় হতে খালাস দিলে সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই খালাস দেওয়া সমীচীন হবে না।
 
সাক্ষীদের সাক্ষ্য তুলে ধরে আদালত বলেন, পুলিশ ছাড়া নিরপেক্ষ সাক্ষীরা ঘটনা দেখে নাই, অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার দেখে নাই বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আত্মসমর্পন অনুষ্টান দেখেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদেরকে রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে বরন করে নেন। এই অনুষ্টান আয়োজনের জন্য তাদেরকে কয়েকদিন আগে থেকে জেলা পুলিশ লাইনে জড়ো করা হয়েছিল সেখান থেকে তাদেরকে গাড়ি বহরে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আনা হয়। আসামীরা তাদের অপরাধ বুঝতে পেরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পরিকল্পনা করেছিল এবং পরিকল্পনা মোতাবেক তারা পুলিশের নিকট আত্মসমর্পন করেন।
 
এজাহারে যা বলে আছে-
 
ইয়াবার অনুপ্রবেশ রোধ এবং মরণব্যাধি ইয়াবার হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার লক্ষ্যে সরকার ২০১৮ সালের ১৭'মে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে। ফলে কক্সবাজারে শুরু হয় ইয়াবা বিরোধী অভিযান। টেকনাফে আটক করা হয় কয়েক হাজার ইয়াবা কারবারী আর উদ্ধার করা হয় লাখ লাখ পিস ইয়াবা। অব্যাহত অভিযানের ফলে ইয়াবার গডফাদার, পৃষ্ঠপোষক ও ব্যবসায়ীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে। এরইমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে এবং অন্ত-কোন্দলে জড়িয়ে গুলাগুলিতে ৩৭ জন মাদককারবারী নিহত হয়েছেন। নিয়মিত অভিযান ও হতাহতের ঘটনায় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আতংকিত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ইয়াবার সিন্ডিকেটের সদস্যরা অপরাধ জগৎ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে মনস্থির করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি (টেকনাফ মডেল থানার সাধারণ ডায়েরী নং-৬১৭/১৯ মূলে) টেকনাফ থানা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স এন্ড কমিউনিটি পুলিশিং) শরীফ ইবনে আলমের নেতৃত্বে সাবরাং ইউনিয়নের মহেষখালীয়া পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। 
 
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লোকজন পালানোর উদ্দেশ্যে এদিকসেদিক ছুটাছুটি করতে শুরু করলে পুলিশ নিজেদের পরিচয় দিয়ে তাদেরকে ছুটাছুটি না করে আত্ম-সমর্পন করার আহবান জানান। পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে তারা আত্ম-সমর্পনের ভঙ্গিতে দাড়িয়ে গেলে চারদিক থেকে তাদে ঘিরে ফেলে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে সাড়ে তিন লাখ পিস ইয়াবা ও ৩০ টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত ইয়াবা ও অস্ত্রের নিজেদের বলে স্বীকার করলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আসামীরা অপরাধ জগৎ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টার দিকে গ্রেফতারকৃত আসামিদের টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সরকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সামনে হাজির করে আত্মসমর্পণ করা হয়।
 
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, এডঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডঃ মোঃ মোস্তফা, আবুল কালাম আজাদ এবং আবু সিদ্দিক ওসমানী।
 
 
রায় নিয়ে আইনজীবীদের মন্তব্য-
 
আইনজীবী বাপ্পি শর্মা বলেন, মামলার এজাহারে পুলিশ অস্ত্র ও  ইয়াবা উদ্ধারের যে ঘটনা দেখিছে সেটি পুলিশ ছাড়া আর কোন সাক্ষী তার সাক্ষ্যে বলেন নি। এমন কি তারা ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা দেখেন নি বলে জানিয়েছেন। যা আদালতের পর্যবেক্ষণেও বলা হয়েছে। এ অবস্থায় বিজ্ঞ আদালত আসামীদের শাস্তি না দিতেও পারতেন। কিন্তু সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করে যে রায় দিয়েছেন তা নিয়ে আদালত পাড়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 
 
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে  সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী। টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম বাদী হয়ে মাদক ও অস্ত্র আইনে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ২টি মামলা করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে নিয়োগ দেয়া হয়। একই বছর ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর  কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক তামান্না ফারাহর আদালতে ১০১ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরবর্তী সময়ে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর পর ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রয়ারি চার্জ গঠন আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। তবে আত্মসমর্পণের বিষয়কে এজাহারে পুলিশের অভিযান এবং ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার বলে মামলা সাজানো হয়।

এমএসএম / এমএসএম

কোন লুটেরা, চাঁদাবাজ ও বল প্রয়োগকারীকে ভোট দেবেন না; গণসংযোগে রাশেদ খান

খানসামা টিটিসিতে ধর্মীয় বৈষম্য–নির্যাতনের অভিযোগ: জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে তদন্ত আবেদন

কেরুজ ভোটের দাবীতে আন্দোলনের শুরুর দিনেই দুপক্ষের মারামারি

নওগাঁয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ধলু’র উদ্যোগে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল

কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন

নৈয়াইর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাহার

রামগঞ্জে যুবদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে বিএনপি কর্মী খুন

ঠাকুরগাঁওয়ের ফকিরপাড়া থেকে মটরসাইকেল চুরি : মামলা

কলাবাড়িয়া ইউনিয়নে দিনব্যাপী গণসংযোগে সরব জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার

কর্ণফুলী'তে হত্যা'সহ একাধিক মামলার এজাহার ভূক্ত আসামি সাজু হাসান গ্রেপ্তার

শীতের আগমনে লেপ তোষকের ব্যস্ততা; পলাশবাড়ীতে জমে উঠেছে ধুনকরদের শীতের বাজার

কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান

আত্রাইয়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে সেনা সদস্য নিহত