ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

বৈষম্য ঘুচিয়ে মানবাধিকারের সুরক্ষা হোক 


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ৭-১২-২০২২ বিকাল ৬:১৬

মানবাধিকারের বিষয়টি মানবসভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।তবে সে সময় মানুষের মধ্যে মানবাধিকার নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করতে শোনা যায়নি। মানবসমাজ নিয়ন্ত্রিত হতো পেশিশক্তি দ্বারা। এইতো সেদিনও ইউরোপীয় উপনিবেশ অঞ্চলে, বিশেষ করে আফ্রিকায় দাস ব্যবসার কী রমরমা অবস্থাই না ছিল। আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে স্বাস্থ্যবান মানুষ সংগ্রহ করে বিক্রি করা হতো ইউরোপ আর আমেরিকার ক্রেতাদের কাছে। ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তি বা জাতি হতদরিদ্র এবং নিঃস্ব মানুষের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করত, তাদের মানুষ হিসেবে গণ্যই করা হতো না। যাই হোক, শিক্ষার বিকাশ, সাংস্কৃতিক অগ্রগতি এবং রাজনৈতিক সচেতনতার কারণে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। তবে এখন অবধি যেমনটি প্রত্যাশা করা গিয়েছিল, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা যায়নি। 

এসব ঘটনা শুধু উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোতেই যে ঘটছে তা নয়, উন্নত দেশগুলোতেও ঘটে যাচ্ছে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন কর্তৃক গৃহীত ও ঘোষিত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র সদ্য প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের প্রথম বড় অর্জন ছিল। মানবাধিকার দিবস পালনের প্রশ্নটি উত্থাপিত হয় দুই বছর পর ১৯৫০ সালে, যখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তার ৩১৭তম প্লেনারি সভায় ১০ ডিসেম্বরকে মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এর পর থেকেই সারা বিশ্বে প্রতিবছর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। 

মানবাধিকারের মূল লক্ষ্যই হলো- পরিবারে, সমাজে এমনকি বিশ্বব্যাপী ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সব মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ সংরক্ষণ করা এবং সর্বদাই সমতা-ঐক্য-শান্তি-স্বাধীনতা বজায় রাখা। আর তাই মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের সর্বমোট ৩০টি ধারায় মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের সার্বিক কল্যাণার্থে প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে; যাতে একটি মানবপ্রাণ সত্যিকারের মানুষের মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে। জাতি-বর্ণ, লিঙ্গ-ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক বা অন্যান্য মতাদর্শ, জাতীয় বা সামাজিক সূত্র ও অন্যান্য মর্যাদা-নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষই সমান। 

সব মানুষের সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং সহজাত মর্যাদার স্বীকৃতি ছাড়া বিশ্বে শান্তি-স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তি রচনা করা সম্ভব না। অভাব ও শঙ্কামুক্ত জীবনাচারের মধ্যে মানুষ ধর্ম ও স্বাধীনতা ভোগ করবে। সব মানুষ জন্মগতভাবেই স্বাধীন এটা বিশ্বাস করতে পারলে কোনো মানুষ বা জাতিগোষ্ঠীকে পরাধীন করে রাখা যায় না। অর্থাৎ, যেসব শাসকগোষ্ঠী এখনও বিশ্বের নানা প্রান্তে কোনো মানুষ বা জাতিগোষ্ঠীকে নির্যাতন-নিপীড়ন করছে, পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখতে শক্তি প্রয়োগ করছে; তারা মূলত মানুষের জন্মগত স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বর্তমান বিশ্বে যে বৈষম্য তা মানুষের সহজাত স্বাধীনতার অবিশ্বাস থেকে জন্মলাভ করেছে। 

তাই বিশ্বে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আগে মানবাধিকারের আদর্শপাঠ জরুরি। মানবাধিকরের চেতনা ও আদর্শ উপলব্ধি ব্যতীত বিচ্ছিন্নভাবে মানবাধিকারের সূচক পরীক্ষা করা ও সে অনুযায়ী বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রকৃত অর্থে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বিশ্ববাসী মানবাধিকার, মানব দেহের মর্যাদা ও মূল্য এবং নারী-পুরুষের সমান অধিকারের প্রতি তাদের বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে। এটি একটি বৈশ্বিক অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকারই মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতাসমূহের ভিত্তি তৈরি করে। মানবাধিকারে সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৩০টি ধারা রয়েছে। মানুষের অধিকার বাস্তবায়নে বিশ্ববাসীর অঙ্গীকারগুলো সুনির্দিষ্টভাবে সেখানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। 

ঘোষণাপত্রটিকে মানবাধিকারের মৌলিক নীতিমালাও বলা যায়। জাতিসংঘের অপরাপর মানবাধিকার-সংক্রান্ত দলিলগুলোও এই সনদকে অনুসমর্থন করে। বিভিন্ন দেশও এই সনদের অনুসমর্থনে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যায়। বাংলাদেশের সংবিধানেও রয়েছে এই ঘোষণাপত্রের ছায়া। এমনকি দেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রেও মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রের আদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পাশাপাশি জনবল-সংকট ও আইনগত দুর্বলতা রয়েছে। এরপরও মানবাধিকার রক্ষায় এটি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। 

মানবাধিকার বাস্তবায়নে সরকার তথা প্রশাসনের ভূমিকাই বেশি। এটি লঙ্ঘনের ব্যাপারে এদের জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও জনবলের অভাবের কারণে, মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে দেশের সর্বস্তরে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। সাধারণভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে-এ কথা সত্য। আয়ে বৈষম্য বৃদ্ধির মধ্যেই দারিদ্র্য হ্রাসের ধারাও অব্যাহত আছে। তারপরও ছিন্নমূল মানুষ, বস্তিবাসীর দৈনন্দিন জীবনে তার ছোঁয়া কমই লেগেছে। প্রায় পাঁচ কোটি তরুণ কর্মসংস্থানহীন। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও অবহেলিত প্রসঙ্গটি সম্ভবত মানবাধিকার। ১৯৪৮ সাল থেকে জাতিসংঘের নির্দেশনামতো প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সারা বিশ্বে পালিত হয় মানবাধিকার দিবস। একদিকে যখন মানবাধিকার উন্নয়নে ব্যস্ত পুরো পৃথিবী, অন্যদিকে ঠিক তেমনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু ঘটনাও ঘটে চলেছে চারপাশে। বৈশ্বিক সব রকম অস্থিরতার জন্য মানুষই দায়ী। 

আবার এও সত্য যে, এর সবচেয়ে বড় শিকার মানুষ নিজেই! মানবাধিকার শব্দটিকে ভাঙলে দুটি শব্দ পাওয়া যাবে-‘মানব’ এবং ‘অধিকার’। অর্থাৎ, মানুষের অধিকার। সাধারণত মানবাধিকার বলতে মানুষের সেসব অধিকারকে বোঝায়, যা নিয়ে সে জন্মগ্রহণ করে, যা তাকে বিশিষ্টতা দান করে। এসব বিষয় হরণ করলে সে আর মানুষ থাকে না। অর্থাৎ, মানুষের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যে অধিকারগুলো দরকার, তা-ই মানবাধিকার। এই অধিকারগুলো সহজ, স্বাভাবিক ও সহজাত। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এবং সামাজিক জীব হিসেবে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মানবাধিকার অপরিহার্য। মানবাধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির মর্যাদাকে সম্মান প্রদর্শনের মধ্যেই নিহিত। দেশের বেশিরভাগ মা ও শিশু পুষ্টিবঞ্চিত। পরিবারে কন্যাশিশু এখনো বৈষম্যের শিকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনন্দের মাধ্যমে অনুকূল পরিবেশে শিক্ষা লাভের অধিকার থেকে শিশু এখনো বঞ্চিত। প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর জন্য দুপুরের খাবার প্রদান কর্মসূচি প্রতীকীভাবে চালু হলেও তার ব্যাপ্তি খুবই সীমিত। 

মানবাধিকার সংক্রান্ত পাশ্চাত্যের প্রাধান্যপ্রাপ্ত বিশ্বঘোষণা এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ একদিকে যেমন যৌক্তিক ও দৃঢ় দার্শনিক ভিত্তিবর্জিত, তেমনি অন্যদিকে তা সংকীর্ণ বস্তুবাদী ধ্যান-ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই তাত্ত্বিকভাবে তা অপূর্ণ। এরপর তা ব্যবহারিকভাবে তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতেও পারছে না। কারণ, এই ঘোষণার রূপকার পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রসমূহই বিশ্বের দুর্বল জাতিগুলোকে টুকরো টুকরো করে তাদের সহায় সম্পদ লুণ্ঠন করেছে এবং অবিরত করে যাচ্ছে। এর চেয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জঘন্যতম চিত্র আর কী হতে পারে? পাশ্চাত্য আজ মানবাধিকারের বোল তুলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেনে ইসরায়েল ও পাশ্চাত্যের, বিশেষ করে আমেরিকার মানবাধিকার লঙ্ঘন আজ কার অজানা? পাশ্চাত্যের এই দ্বিমুখী নীতি বিশ্ববিবেকের কাছে মোটেও বিস্ময়কর ঠেকছে না। 

এই দ্বিমুখী নীতির ফলেই পাশ্চাত্য ইসরায়েলকে গণতান্ত্রিক দেশ বলে বিবেচনা করে, অথচ যেসব দেশ পাশ্চাত্যের আধিপত্য ও বশ্যতা স্বীকার করে না, তাদের মানবাধিকার বিরোধী বলে চিহ্নিত করছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গুটিকতক পরাশক্তির ভেটো প্রদানের অধিকার আসলে মানবাধিকারের নির্লজ্জ লঙ্ঘন। এমন পরিস্থিতিতে সংকটের গভীরে প্রবেশ করা অতি আবশ্যক মনে করি। না হলে সমস্যার উৎস সন্ধান, ব্যাপকতা নিরূপণ ও প্রতিকারের পন্থা নির্দেশ সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে আমি সবার সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। বলাই বাহুল্য, শিক্ষা তথা মানবাধিকার শিক্ষা এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, যে শিক্ষা শিশুকাল থেকে প্রতিটি মানুষকে তার অধিকার সম্বন্ধে শিক্ষা দেবে, সচেতন করবে। ইউরোপ, এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকায় স্কুল শিক্ষাব্যবস্থায় মানবাধিকার শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই এর উত্তম চর্চার দৃষ্টান্তগুলো উপস্থাপন করা হয়ে আসছে। ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে তা বেশ আগে থেকেই চলে আসছে। 

উন্নত বিশ্ব বলে পরিচিত বিভিন্ন দেশে বাস্তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ধারণা ও মতামত প্রাসঙ্গিকভাবে বিবেচনায় এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথাই ধরা যাক। ১৯৯৭ সালে হিউম্যান রাইট্স ইউএসএ নামের একটি সংগঠন পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, মাত্র ৮ শতাংশ বয়স্ক মানুষ এবং ৪ শতাংশ তরুণ সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা সম্বন্ধে অবহিত। ওই জরিপে আরো দেখা যায়, ৮৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করে, মানবাধিকার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমেরিকার অনেক কিছু করার আছে। ওই জরিপের তথ্যমতে, ৮৩ শতাংশ মনে করে, দরিদ্র মানুষেরা বৈষম্যের শিকার। ৬১ শতাংশ প্রতিবন্ধী, ৫৪ শতাংশ প্রবীণ এবং ৪১ শতাংশ আফ্রিকান-আমেরিকান অনুরূপ মত পোষণ করে। মানবাধিকার ব্যক্তির স্বাধীনতা, সমতা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করে। 

সেই অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে ঘোষিত হয় সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা। ১৯৫০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১০ ডিসেম্বরকে মানবাধিকার দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত সব রাষ্ট্র সভা, আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে। মানবাধিকার সনদে এসব ঘোষণা থাকলেও কেবল ঘোষণা হিসেবেই থেকে গেছে অনেক ক্ষেত্রে। মানবাধিকার দিবস যেন পরিণত হয়েছে নিছক আনুষ্ঠানিকতায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাঙালি জাতির কী দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন অন্যের অধিকার সুরক্ষা করতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনের, নিজের আরাম-আয়েশের কথা ভাবেননি। অথচ তাঁর জীবন কেড়ে নেওয়া হয় মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের মাধ্যমে। পাকিস্তানিরা যেখানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাহস করেনি, সেখানে এ দেশেরই একদল বিপথগামী সেনাসদস্য কল্পনাকেও হার মানিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর এই হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম ঘটনা এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তা কখনই পূরণযোগ্য নয়। পদাঙ্ক অনুসরণ করে মানবাধিকার সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছেন এবং ২০০৯ সালে তাঁর শাসনামলে প্রণীত হয় মানবাধিকার কমিশন আইন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আইন অনুযায়ী এর প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালিত করছে। তবে বর্তমানে পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে সমাজে এক ধরনের অস্থিরতা ও অনাচার তৈরি হয়েছে। 

মানবিক মূল্যবোধ সৃজনের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সবার মাঝে মানবাধিকার সুরক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টিতে একযোগে-একমনে কাজ করে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পাশাপাশি মানবিক বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে পরিচিত করতে সমর্থ হবো। যদিও স্বাধীনতার ৫১ বছর পর আমরা শিক্ষা-স্বাস্থ্য-অর্থনীতিতে অনেকাংশেই এগিয়েছি! সেই অনুপাতে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন জাতি হিসেবে কতখানি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি? এটি যেন আজ একটি জাতীয় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়ছে। সত্যিকারের মানুষ হলে নিশ্চয়ই, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি আমাদের বিবেককে নাড়া দেবে! সমস্বরে চিৎকার দিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে চাইবে সবাই! ১০ ডিসেম্বর ক্যালেন্ডারের পাতায় শুধু একটি দিনই নয়, বরং মানব জাতির ব্যক্তিত্ব, মূল্যবোধ তথা সার্বিক উন্নয়নের জন্য এটি একটি নতুন প্ল্যাটফর্মও বটে! মানুষ হয়ে আরেক মানুষের সেবা করা বা তাদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি, মতামত, দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাই যেন প্রকৃত মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য! তাই আজকের দিনের প্রত্যয় হোক, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব আমাদের সবার। আর এজন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। কেননা প্রকৃত মানুষ ছাড়া মানবাধিকার সংরক্ষণ কোনভাবেই সম্ভব নয়! মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে সবাই মিলে ছুটে চলি মানুষের কাছে! এমনি করেই একদিন সার্থক হবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। 

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট 

প্রীতি / প্রীতি

বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনে শহীদ জিয়াউর রহমান

জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংস্কার করতে হবে

গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলো কি করছে

জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯) ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

গনতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাজনীতিতে গুরুত্ব বেড়েছে শহীদ নূর হোসেনের

রাজনৈতিক নির্বুদ্ধিতার পরিণাম ভালো হয় না

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও বিশ্বে তার প্রভাব

অতীত ব্যর্থতা কাটিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে চায় মানুষ

আধুনিক প্রযুক্তির বিশ্বে বদলে যাচ্ছে চাকরির বাজার

বিকল্প বাজারজাত না করে পলিথিন নিষিদ্ধ বাস্তবায়নের অন্তরায় হতে পারে

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে মানুষের শেষ আশাটাও হারিয়ে যাবে

মার্কিন নির্বাচন রাজনৈতিক সংঘাতের আরেকটি অধ্যায়

আলোর উৎসব দীপাবলিতে কেটে যাক সব আঁধার