৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ খুলনার আলোচিত কপিলমুনি মুক্ত দিবস

৯ ডিসেম্বর। টানা চারদিন মুখোমুখি যুদ্ধের পর এই দিন বেলা ১১টায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পন করে রাজাকার বাহিনী।খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি রাজাকার মুক্ত হয়েছিল ১৯৭১ সালের এ দিনে। দ্বিতীয় দফায় দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার সম্মুখ সময় যুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর রাজাকারদের আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে পতন ঘটেছিল দক্ষিণ খুলনার সবচেয়ে সমালোচিত ও বড় রাজাকার ঘাঁটিটির। এসময় উপস্থিত হাজার হাজার জনতার রায়ে ১৫৬ জন রাজাকারকে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। যুদ্ধকালীন এত সংখ্যক রাজাকারদের জনতার রায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা সম্ভবত সেটাই প্রথম।
তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর দোসররা সারা দেশব্যাপী সাধারণ নিরিহ মানুষের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার নির্যাতন চালাতে থাকে। আর এ অত্যাচারে অতিষ্টি হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মত পাইকগাছার সর্বত্র প্রতিরোধ দুর্গ গড়ে ওটে। এ সময় পাক দোসররা বিশাল অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কপিলমুনিতে ঘাটি করে। অত্যাচারী বহু পরিবার সে সময় বিদেশে পাড়ি জমায়। কপিলমুনি শহরে পরিত্যাক্ত রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর সুরম্য বাড়িটি পাকিস্তানি দোসররা ঘাঁটি হিসেবে বেছে নেয়। তখন এলাকায় নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে ভোর ৬ টা নাগাদ কারপুজারী করা হত। এলাকার নিরিহ মানুষদের ধরে এনে কপোতাক্ষ নদীর তীরে ফুলতলা নামক স্থানে শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে লবন দেয়া হত। এসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে পাইকগাছার রাড়–লী, বাঁকা, বোয়ালিয়া ও গড়ইখালী প্রতিরোধ দুর্গোকে মুক্তিফৌজের ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়। তাগিদ পড়ে কপিলমুনি শত্রু ঘাটি পতনের। কারণ খুলনাঞ্চলের মধ্যে কপিমুনির শত্রু ঘাঁটি ছিল সবচেয়ে বড় ঘাঠটি। সাড়ে ৩ শ’র বেশী পাক সেনা ও তাদের দোসররা এখানে অবস্থান নেয়। ছাদের উপর তাক করা হয় ভারী কামান ও মেশিন গান। ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর খুলনাঞ্চলের সকল মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারগণ একত্রে মিলিত হন মাগুরার শান্তি বাবুর দোতলায়। সিদ্ধান্ত হয়, যে কোন মূল্যে কপিলমুনিকে মুক্ত করতেই হবে। এর আগে আরো একবার শত্রু “ঘাটি আক্রমন হলেও জনতার অসহযোগিতায় সেবার ব্যর্থ হয় পাইকগাছার রাড়ুলী ও হাতিয়ারডাঙ্গা ক্যাম্প কমান্ডারগণ যুদ্ধের একটি পরকল্পনা প্রণয়ন করেন। নৌ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী রহমত উল্লা দাদু, স.ম বাবর আলী, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, গাজী রফিক, ইউনুস আলী ইনু, ইঞ্জিনিয়ার মুজিবর, শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, মোল্যা আব্দুস সালাম, আবুল কালাম আজাদ কপিলমুনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন।
অবশেষে ৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে চারিদিক থেকে কপিলমুনি শত্রুঘাটি আক্রমন করা হয়। হঠাৎ রাইফেলের গুলির ঠাশ-ঠাশ আওয়াজ মুহুর্তে ভারী অস্ত্র কামান, মেশিনগানের বিকট শব্দে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। আচমকা ঘুম ভেঙ্গে যায় মানুষের। যার যার মত বাড়ির বারান্দার নীচে পজিশন নেয় প্রাণ ভয়ে। স্থানীয় প্রতাপকাটি কাঠের ব্রীজের উপর ৮ জন রাজাকার, তার একটু পেছনে আরো ৫ জন রাজাকার যুদ্ধে মারা যায়। একেরপর এক মরতে থাকে পাক দোসর রাজাকারদলের সদস্যরা।
দীর্ঘ যুদ্ধ শেষে ৯ ডিসেম্বর বেলা ১১ টার দিকে অস্ত্র ফেলে সাদা পতাকা উচিয়ে ১৫৬ জন পাকিস্তানি দোসর আত্মসমার্পণ করে। সাথে সাথে পতন ঘাটি খুলনাঞ্চলের বৃহত্তর শত্রু“ ঘাটির। শত্রুদের বন্দী করে নিয়ে আসা হয় কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দিরের ঐতিহাসিক ময়দানে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে, এলাকার হাজার হাজার জনতার ঢল নামে। ব্যাপক জনতার দাবির প্রেক্ষিতে তাদেরকে প্রকাশ্য জনতার আদালতে গুলি করে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়। এযুদ্ধে শহিদ হন দু’জন মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ার হোসেন। আহত হন মোহাম্মদ আলী, তোরাব আলী সানাসহ অনেকেই। আজ মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম

বাঘায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

নরসিংদীর পাইকারচর ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

মনোহরগঞ্জে যাত্রীবাহী ইজিবাইকের উপর বাসের চাপ নিহত ২ আহত ২

শারদীয় দূর্গাৎসব উপলক্ষে মান্দায় আনছার ও ভিডিপি সদস্য যাচাই-বাছাই

কুড়িগ্রামে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন আলু অবিক্রিত

সীতাকুণ্ডে শিপইয়ার্ডের আগুনে আট শ্রমিক দগ্ধ

রাজশাহীর গুদামে পচা চাল সরবরাহকারীদের নামের তালিকা উধাও

সাতকানিয়ায় হত্যা মামলার আসামির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি

রৌমারীতে ডিলার ও ব্যবসায়ীর চালের গুডাউন সিলগালা করলেন ইউএনও

সিংগাইরে ৭৭টি পূজা মন্ডপে শিল্পপতি অনিরুদ্ধ কুমার রায়ের আর্থিক সহায়তা

শান্তিগঞ্জে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

বেনাপোল দিয়ে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু

চরবাগডাঙ্গায় নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
Link Copied