পাবনায় যাতায়াত সড়কপথ সংস্কার কাজে বাধা ও পাউবোর কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকিতে থানায় অভিযোগ

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রকৌশলীকে শুধু প্রাণনাশের হুমকিই দিয়ে ছাড়েননি; পাউবো নিয়ন্ত্রিত খননকৃত খালের পাড়ে যাতায়াতকৃত সড়ক মাটি ভরাট ও মেরামত কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপায়ন্তর না পেয়ে কর্মকর্তারা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। পাড় ভেঙ্গে যাওয়ায় স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে গৃহিত মাটি ভরাট ও মেরামত কাজ করতে গিয়ে এ বাধার সম্মুখিন হন পাউবো’র কর্মকর্তারা।
সরকারি কাজে বাধা না দেয়ার জন্য অনুরোধ করায় অবৈধ দখলদার ও প্রভাবশালীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রকৌশলীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় পাবনা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের মনোহরপুর বড় ব্রীজ থেকে আটঘরিয়া উপজেলার তারাপাশা স্লুইচগেট ও মনোহরপুর বড় ব্রীজ থেকে মক্কেল ফারাজীর বাড়ি পর্যন্ত একটি পানি নিস্কাশন খাল খনন করা হয়। যা সরকারি খাস খতিয়ান সম্পত্তি এবং ম্যাপে খাল হিসেবে বিদ্যমান। খাল খননের পর অতিবৃষ্টিতে খালের পাড় অর্থাৎ মানুষের যাতায়াতের সড়কটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে ও মাটি ধসে যায়। স্থানীয় সুবিধাভোগীরা মালিগাছা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ মুন্তাজ আলীকে বিষয়টি অবগত করেন। গত বছর ২৯ ডিসেম্বর সকালে চেয়ারম্যান সরেজমিন তা পরিদর্শন করেন। এরপর ১ জানুয়ারি সকালে ১৫ জন মাটি কাটা শ্রমিক ওই রাস্তা সংস্কার করার জন্য পাঠান। এ সময় উক্ত সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেন মৃত মোসলেম সরদার মুসলুর ছেলে খলিলুর রহমান সরদার ও তার ছেলে সিরাজুল ইসলাম সরদার, মৃত বাজুরদ্দিন মোল্লার ছেলে হামিদ মোল্লা ও তার ছেলে আসাদ মোল্লা, তারই ভাতিজা মৃত- ওমেদ মোল্লার ছেলে আব্দুর রহিম মোল্লা ও সেলিম মোল্লা। এ সময় বেশ কিছু নারীও উপস্থিত ছিলেন। তারা সরকারি এই সম্পত্তি নিজেদের দাবি করে সরকারি এই কাজে বাধা প্রদান করেন। বাধা পেয়ে মাটি কাটা শ্রমিকেরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন বলেন, সরকারি কাজে বাধাদান করা হয়েছে এমন খবর আমাকে মোবাইলে জানান স্থানীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ মুন্তাজ আলী। বিষয়টি নিয়ে আমি বাধাাদানকারীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকি তারা আমার চাকরি খেয়ে ফেলারও হুমকি প্রদান করেন। বিষয়টি লিখিতভাবে আমি থানায় জানিয়েছি। ইতোপূর্বেও সরকারি এই খাল খননের সময়েও তারা বাধা প্রদান করেন বলে প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন অভিযোগ করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী রফিকুল ইসলাম, মোতালেব হোসেন, বাবু মেকার, সাফাজ আলী, রমজান আলী, আব্দুল মতিন, আব্দুল আওয়াল, মফিজ উদ্দিন, আব্দুল হাশেম, ইকবাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, এই সড়কটি আমাদের জন্য বিশেষ প্রয়োজন ও যোগাযোগ সহজ হয়। আমরা চাই দ্রুত সড়কটি ইট বিছানো হলে সামনের বৃষ্টির আগে ভালো হবে।
মালিগাছা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম বলেন, পূর্ব পুরুষের কাছ থেকে জেনে এসেছি এই খাল পাড়ই ছিল মনোহরপুর থেকে ঘরনাগগড়া গ্রামে যাওয়ার একমাত্র পথ। নতুন করে খাল খনন হওয়ায় পথটি আবার চালু হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি স্থানে মাটি সড়ে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়ায় সড়কটি মেরামত জরুরী। শুনেছি চেয়ারম্যান লোক পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু সরকারি এই কাজে বাধা দেয়া হয়েছে। কাজটি মোটেও ভালো হয়নি বলে মনে করছি।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মুন্তাজ আলী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ মানেই সরকারি কাজ। আর সেই সরকারি কাজে সহযোগিতার জন্য আমি লোক পাঠিয়েছিলাম। কিন্ত সরকারি সম্পত্তি নিজেদের দাবি করে একটি চক্র বাধা দিয়েছেন। প্রভাবশালীরা আমাকে ফোনেও অশালিন ভাষায় কথা বলেছেন। বিষয়টি সুরাহা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি। তিনি বলেন, শুনেছি এটি অনেক আগেই মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল। নতুন করে খাল খনন হওয়ায় রাস্তাটি আবার ব্যবহারের উপযোগ হয়েছে। সে কারণেই এলাকার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে সংস্কারের জন্য লোক পাঠানো হয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতোপূর্বে এই সড়কটি মাটি ভরাট ও মেরামতের জন্য খননকৃত ইছামতি নদীর মাটি চেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সুপারিশে ভূক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর আব্দেন করলে জেলা প্রশাসন থেকে ইছামতি নদীর খননকৃত মাটি এই সড়কে ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুমতি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মনোহরপুর বড়ব্রীজ সংলগ্ন তরিকুল ইসলামের বাড়ির উপর খাল খনন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় পাউবো ও স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের যাতায়াতের জন্য খননকৃত খালের উভয়পাড়েই উদ্বৃত্ত মাটি বিছিয়ে মাটির সড়ক তৈরি করা হবে। কিন্তু পরবর্তীতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে এই সড়ক তৈরিতে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে সড়ক না হওয়ায় উভয়পাড়ের মানুষ খুব বিড়ম্বনার শিকার হয়ে আসছেন।
এমএসএম / এমএসএম

আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন এখন বিএনপি সভাপতি প্রার্থী

আপনার এসপি’ নামে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের বিশেষ সেবা চালু

ভূরুঙ্গামারীতে দুই মাদক সেবনকারীকে জেল ও জরিমানা ভ্রাম্যমান আদালতের

বরগুনায় সওজ’র সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরোতী

কুমিল্লায় সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ কিশোর গ্যাং সদস্য গ্রেফতার

ঝিনাইদহে বিশ্ব ও জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত

সিংড়ায় অনলাইন জুয়ায় বিরোধে প্রান গেলো ব্যবসায়ীর

মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর মাসুমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

সাটুরিয়ায় ডোবা থেকে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার

'জুলাই বিপ্লব' শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোচিত হবে, শহীদরাই আজকের মহানায়ক: মাহমুদুর রহমান

৫ হাজার টাকা চাদাঁ না দেওয়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা ও লুঠপাট থানায় মামলা দায়ের

বিয়ে বাড়িতে হামলা, আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
