ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছে কাপ্তাই বড়ইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলা সদরেই অবস্থিত বড়ইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে প্রায় ২শত ৭০ জন কোমলমতি শিশু লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়টিতে এই ছোট্ট শিশুদের জন্য সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে পাঠদান কার্যক্রম চলমান থাকার কথা থাকলেও নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে চালাতে হচ্ছে শ্রেণী পাঠদান কার্যক্রম। বিশেষ করে বিদ্যালয়টির শ্রেণী কক্ষ সহ কয়েকটি ভবন ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আর এই ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কতৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সকালে বড়ইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির মূল ভবনের পশ্চিম পাশটি ভাঙ্গতে ভাঙতে প্রায় পাশের একটি ছড়ার কিনারে চলে গেছে। এছাড়া ভবনগুলো এতটাই ঝুঁকিতে আছে যে, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত হলে মুল ভবনটি যেকোনো মূহুর্তে ছড়ার সাথে বিলীন হবার আশংকা করছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। তাছাড়া ওই ছড়াতে পাশ্ববর্তী বিভিন্ন মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির ময়লা, আবর্জনা ও পয় নিষ্কাশন এর মলমূত্র ফেলাতে এক প্রকার দুর্গন্ধ ও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণীতে ক্লাস করতে হচ্ছে ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের।
এবিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক খালেদা আক্তার এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের মূল ভবনটির পশ্চিম এবং দক্ষিণ পাশের মাটি দিনে দিনে ভেঙ্গে যাচ্ছে। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ভবনের পেছনে মাটি সরে যেকোনো মূহুর্তে স্কুলের মুল ভবনটি পাশের ছড়ার সাথে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এইছাড়া ছড়ার অপরদিকে অপরিকল্পিত ভাবে মাঠি ভরাট করে ভবন নির্মাণের ফলে আমাদের মূল ভবনের পেছনে মাটি দিন দিন সরে ছড়ার দিকে চলে যাচ্ছে। এতে এক প্রকার আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা আতঙ্ক নিয়ে ক্লাসে পাঠদান করছি। এছাড়া প্রায় সময়, ছড়ার দুর্গন্ধে বিদ্যালয়ে থাকা দায় হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ছড়াটি থেকে এত বাজে দুর্গন্ধ আসে যে আমরা ক্লাস পরিচালনা করতে হিমশিম খেয়ে যায়। ওইসময় শ্রেণী কক্ষের দরজা, জানালা সব বন্ধ করে দিয়ে এক প্রকার বদ্ধ পরিবেশে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হয়।
দুর্গন্ধের বিষয়টির সত্যতা জানিয়ে বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইন্দ্রা আইচ, সাইসানু মারমা ও সাইচিৎ মারমা সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, যখন দুর্গন্ধ শুরু হয় তখন আমরা ক্লাসে আর থাকতে পারিনা, সবাই নাক বন্ধ রেখে, মাস্ক পরে দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে চেস্টা করি। দুর্গন্ধে আমাদের অনেক কস্ট হয়ে যায় ক্লাস রুমে থাকতে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হাই খোকন এর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্কুল ভবনের ভাঙ্গন ঠেকাতে দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন। এ নিয়ে তিনি একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এছাড়া স্কুলের মূল ভবনের পেছনে অংশ মাটি ভরাট করে ধারক দেওয়াল নির্মাণ না করলে যেকোনো সময় ভবনটি পেছনের ছড়ার দিকে ধেবে যেতে পারে। এছাড়া মাটি সরার ফলে স্কুলের খেলার মাঠটিও দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। আর ছড়াটির দুর্গন্ধ ঠেকাতে যথাযথ পয় নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবেন বলে জানান।
এবিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইদ্রিচ জানান, কাপ্তাই শিক্ষা অফিস এর পক্ষ হতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিদ্যালয়টির ভবন রক্ষায় ধারক দেওয়াল নির্মাণ করতে
চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন আসলে এর সংস্কার কাজ দ্রুত শুরু হবে করা হবে বলে তিনি জানান। এছাড়া বিদ্যালয়টির কোমলমতি শিশুদের যথাযথ স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য তিনি সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন।
এমএসএম / এমএসএম