ঢাকা শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫

শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ বললেন রাবি অধ্যাপক


অর্পণ ধর, রাবি photo অর্পণ ধর, রাবি
প্রকাশিত: ১১-৩-২০২৩ দুপুর ১:১৩

শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলে সম্বোধন, একাডেমিক অসহযোগিতা ও স্বেচ্ছাচারীতাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে। বিভাগের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গ্রুপে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ সম্বোধন করে নানা হুমকি প্রদান করা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে গ্রুপ তৈরিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভাগের শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের কারণে একাডেমিক কার্যক্রম পিছিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি গ্রুপে শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলে সম্বোধন করার স্ক্রিনশট ও ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে অভিযোগগুলোকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক।

শিক্ষার্থীরা জানান, যেসব শিক্ষার্থীরা তার কথা মেনে চলেন না, তাদের তিনি নানাভাবে লাঞ্ছিত করেন। এছাড়া রুটিন অনুযায়ী ক্লাস না নিয়ে নিজের সুবিধার জন্য তিনি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্লাস নেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি কোনরকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে আসছেন। অনুগত কিছু শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলনের নামে বিভাগে তালা দিয়ে, বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছেন। ২০২১ সালের ১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টার ও ২য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের সকল কোর্স শেষ হওয়ার পরেও পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ ও পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করছেন না বলেও জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উর্দু বিভাগের মোট ৮ জন শিক্ষকদের মধ্যে দুটি  গ্রুপ রয়েছে। যাদের মধ্যে একটি গ্রুপে রয়েছে ৬ জন শিক্ষক। অন্যদিকে বিভাগের বর্তমান সভাপতি ও বিভাগের একজন মিলে রয়েছে আরেকটি ক্রিয়াশীল গ্রুপ। এই দুই গ্রুপ সর্বদাই নিজেদের মধ্যে বিপরীতমুখি আচরণ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতিটি বিভাগের পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যেই পরবর্তী ক্লাসের ভর্তির শেষ তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু ২০২০ সালের ১ম বর্ষের ২য় সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল ৭ মাস পূর্বে প্রকাশিত হলেও সভাপতি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তির ব্যবস্থা করেননি।

সর্বশেষ গত ৯ মার্চ তাঁর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারীতা, একাডেমিক কার্যক্রমে অসযোগিতার লিখিত অভিযোগ বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিয়েছেন ৫ জন সহকর্মী।  অভিযোগকারী শিক্ষকেরা হলেন, অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন, অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক উম্মে কুলসুম আকতার বানু, মো. মোকাররম হোসেন মণ্ডল ও মো. সামিউল ইসলাম।

অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, ‘তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। সভাপতি যেসব পরীক্ষা কমিটিতে থাকেন তাতে ধারাবাহিক অসহযোগিতা করেন। বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তিনি বিভাগের তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করেছেন। বারবার বলার পরেও তিনি উক্ত টাকা ফেরত দেননি। এছাড়া তিনি অনুগত শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে বিভাগকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে আন্দোলনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সভাপতি স্যারের ইন্ধন রয়েছে। উনি উনার কোন সুবিধা এখান থেকে আদায় করতে চেয়েছেন। পরে আমাদের ভুল বুঝতে পেরে আমরা ২৬ জন ক্লাসে ফিরে যাই। কিন্তু বাকীরা এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘আমরা চাই শিক্ষকরা শিক্ষকসূলভ আচরণ করবে। কিন্তু একজন শিক্ষক তার অনুগত কিছু ছাত্র-ছাত্রী লেলিয়ে দিয়ে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এছাড়া শিক্ষকদের মধ্যে যে দ্বন্ধ তা রাজনৈতিকভাবে আমাদের উপর বর্তায়। আমরা চাই, শিক্ষকরা তাদের জটিলতা নিরসন করবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শুরু থেকেই কতিপয় শিক্ষার্থীর অবৈধ আন্দোলনে মদদ দিয়ে আসছেন বিভাগের সভাপতি ড. আতাউর রহমান। তিনি প্রশাসনের অংশ অথচ তার ভূমিকা বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি ও স্বার্থ পরিপন্থী। তিনি ২য় বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া ৬ মাস ধরে আটকে রেখেছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ ১ম বর্ষে ফলাফল তৈরীতে অসহযোগিতার কারণে ফলাফল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। ইনকোর্স পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে দিচ্ছেন না। তাঁর আচরণ শিক্ষকসূলভ নয়।’

এ বিষয়ে অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের বি.এ. (সম্মান) প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা ও ফলাফল সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম কলা অনুষদের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক পরিচালনা করা হয়েছে। ফলাফলে কোন প্রকার অসঙ্গতি নেই । ফলাফল সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। ইচ্ছাকৃতভাবে বা পরিকল্পিতভাবে কাউকে ফেল করানোর সুযোগ নেই। আমার মনে হয় শিক্ষার্থীরা কারো দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এক সময় তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে।’

শিক্ষার্থীদের রাজাকার ডাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের ভিত্তিহীন কথা আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন না। আমার বিরুদ্ধে এ সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। একটা কুচক্রী মহল আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছে।’

এমএসএম / এমএসএম

মাতামুহুরি নদীতে গোসলে নেমে সাবেক চবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রাজনৈতিক দুষ্টচক্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলে নিয়েছে: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এনটিআরসিএর বড় সিদ্ধান্ত

সাইবার বুলিং ও নিরাপত্তাহীনতায় চাকসু নির্বাচনে সীমিত নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর লক্ষাধিক টাকার টাইলস আত্মসাত

পিডি নিয়োগে প্রথম হয়েও বাদ শেকৃবি অধ্যাপক , নিয়ম ভেঙে প্রকল্প পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা

পবিপ্রবির নতুন উদ্যোগে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ী নামাজ রুম

ডিআইইউতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সম্পন্ন

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি মৃদুল, জিএস রায়হান

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি