ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

কূটনৈতিক সম্পর্কে বাইডেন-মোদীর কৌশল


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ২৬-৬-২০২৩ বিকাল ৬:১২

ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফর খুবই সময় উপযোগি বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন। গত ৬ জুন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ২০০৯ সালের পর এই প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর মোদী হোয়াইট হাউসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করলেও সেসব সফরকে রাষ্ট্রীয় সফর হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়নি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রায় ১৪ বছর পর ভারতের পক্ষ থেকে নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফর তার সাফল্যের তালিকাকে আরও ঋদ্ধ করবে। চলতি বছরের ২২শে জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকায় এমন একটি বিরল সম্মান পেতে চলেছেন, যা তাঁকে প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব উইনস্টন চার্চিল বা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে এক কাতারে বসিয়ে দেবে। আসলে সে দিনই দুপুরে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দ্বিতীয়বারের মতো ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর যে গৌরব চার্চিল, ম্যান্ডেলা বা হাল আমলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ছাড়া আর কেউই পাননি। শুধু তাই নয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি ড: জিল বাইডেনের আমন্ত্রণে মোদীর এই সফরে তাঁকে একাধিকবার হোয়াইট হাউসে আপ্যায়িত করা হবে। নরেন্দ্র মোদীর সম্মানে বাইডেন দম্পতি শুধু বিশেষ নৈশভোজই দিচ্ছেন না, প্রেসিডেন্ট তাঁর সঙ্গে একান্তে ও প্রতিনিধিপর্যায়ে একাধিকবার বৈঠকেও বসছেন। দিল্লি ও ওয়াশিংটনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফরকে ভারত যে একটি মাইলস্টোন মোমেন্ট বলে বর্ণনা করছে-তাতে তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই। আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ও এই আসন্ন সফরের পটভূমিতে লিখেছে, ভারত যদিও পশ্চিমাদের পছন্দ করে না, আমেরিকার কাছে আজ তারা অপরিহার্য-আর এই সফরে তারই প্রতিফলন ঘটতে চলেছে। 

দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টও মন্তব্য করেছে, চীনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ভারতকে আমেরিকার আজ যে জরুরি প্রয়োজন-ততটা আগে কখনোই ছিল না। বস্তুত এর আগে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্তরে অন্তত ৬ বার প্রধানমন্ত্রী মোদী আমেরিকা সফর করেছেন-কিন্তু এটাই হতে যাচ্ছে সে দেশে তাঁর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর, যা ধারে ও ভারে তাঁর আগেকার সফরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি ওজনদার ও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে আগামী ২১ থেকে ২৩শে জুন, আমেরিকায় নরেন্দ্র মোদীর তিন দিনব্যাপী এই সফরের দিকে শুধু ভারত বা আমেরিকা নয়, নজর থাকবে গোটা আন্তর্জাতিক বিশ্বেরই। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন বলেছেন, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে রাজনৈতিক স্তরে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার একটা প্রভাব অবশ্যই এই সফরে পড়বে এবং নরেন্দ্র মোদী ও জো বাইডেনের মধ্যে ব্যক্তিগত স্তরেও একটা লিডারশিপ সম্পর্ক গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে যে বিষয়গুলো, তা হচ্ছে: বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে যে সব বিষয়ে সমঝোতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল ১৮০ কোটি ডলারের ১৮টি প্রিডেটর-বি আর্মড ড্রোন ক্রয় সংক্রান্ত। আমেরিকার তৈরি এই ড্রোনগুলি দুর্গম সীমান্ত বা সামুদ্রিক এলাকায় দূর পাল্লাতেও নিখুঁত লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে এবং নজরদারি চালাতে পারে। এর পাশাপাশি, যৌথভাবে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন বানানোর জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হতে পারে। এই চুক্তি সম্পাদিত হলে ম্যাসাচুসেটসের এ্যারোস্পেস ম্যানুফ্যাকচারিং জায়ান্ট জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানি (জিই) ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্থান এরোনটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) সঙ্গে মিলে তেজস লাইট এয়ারক্র্যাফটের ইঞ্জিন বানাতে পারবে। ভারতে যে সব সংস্থা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করে থাকে, এসব সমঝোতার প্রত্যাশায় সেই সব সংস্থার অনেকগুলোর শেয়ার দর ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। 

অনেকটা এই কারণেই ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ লিখেছে, ভারতের সঙ্গে আমেরিকা এই সব প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে মরিয়া বলেই ইউক্রেন কিংবা ভারতে গণতন্ত্রের অধোগতি নিয়ে মোদীর সফরে তারা নীরব থাকবে। তাদের ভাষায়,'তেলের জন্য তৃষ্ণার্ত ভারত যেভাবে রাশিয়ার যুদ্ধ-অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে, চীন ছাড়া অন্য কোনও দেশ ততটা করেনি। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার র‍্যাঙ্কিংয়েও ভারত যতটা নিচে নেমেছে, ততটা খুব কম দেশই নেমেছে।কিন্তু তার পরেও নরেন্দ্র মোদী ওয়াশিংটনে রাজসিক অভ্যর্থনা পাবেন এবং সেই উচ্ছ্বাসে এই সব অস্বস্তিকর প্রসঙ্গের অবতারণা হবে না-দ্য ইকোনমিস্ট সেই পূর্বাভাসও সেরে রেখেছে।ওয়াশিংটন পোস্টও পাশাপাশি মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই সফরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সর্বশক্তিতে চেষ্টা করতে হবে, কিন্তু সে দেশে মোদীর শাসনামলে গণতন্ত্রের যে অধ:পতন হয়েছে সেটা নিয়ে চুপ থাকাটাও সমীচীন হবে না।বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে বাধাপ্রদানকারীদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে বলে আমেরিকা সম্প্রতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মোদী ও বাইডেনের আলোচনায় সে প্রসঙ্গ আসবে কি না ভারত সরাসরি তার কোনও জবাব দেয়নি। তবে মিয়ানমার সংক্রান্ত রোহিঙ্গা বিষয় এবং এশিয়ার আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ যে কোনও বিষয় নিয়েই দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দিল্লিতে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলেছে,
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমেরিকা সম্প্রতি যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে দিল্লি তাদের মনোভাব অবশ্যই ওয়াশিংটনের কাছে তুলে ধরবে। ভারত ও আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এজেন্ডায় দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক রাজনীতি অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-আর সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কে উপেক্ষা করা দুই দেশের কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফর চলমান বিশ্ব বাস্তবতায় মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। 

প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমান বিশ্বের পঞ্চম এবং দ্রুত বিকাশমান। দেশটির রয়েছে বিপুল ভোক্তা শ্রেণি। তাদের ক্রমবর্ধমান ক্রয় সক্ষমতা এবং চাহিদা ভারতকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির গত কয়েক দশকের মেরূকরণ। পশ্চিমা আধিপত্যের বিপরীতে ২০০৯ সালে ভারত, চীন, ব্রাজিল ও রাশিয়া মিলে ব্রিক গঠন করে এবং পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকা যুক্ত হওয়ায় এর নামকরণ হয় ব্রিকস। যদিও আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি অর্থনৈতিক জোট, কিন্তু স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এ দেশগুলোর আরও সক্রিয় ও নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখার আকাঙ্ক্ষা থেকে তৈরি। সম্প্রতি ব্রিকসে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করায় জোটটি নিয়ে নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিকস বলয় ছাড়াও ঠান্ডা যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরের বিশ্ব বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভূ-রাজনৈতিক নীতিও ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। চীনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতিতে অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সঙ্গে ভারতেরও অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভারতের এই শক্তিশালী অর্থনীতি ও বিশ্ব রাজনীতিতে উদীয়মান অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে মিত্র হিসেবে চায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টতই দেখতে চাইবে ভারত একদিকে তার আপাত পশ্চিমবিরোধী ব্রিকস জোট এবং অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া নীতি-এমন সাংঘর্ষিক অবস্থানকে কীভাবে সমন্বয় করে।তা ছাড়া গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে কেন্দ্রে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসনের ঘোষিত নতুন পররাষ্ট্রনীতি ও ভারতের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক বিচ্যুতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিব্রতকর ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। 

সর্বশেষ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের বিপরীতমুখী অবস্থান গ্রহণ করে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চীনকেন্দ্রিক যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ভারতের প্রকৃত উপযোগিতা আসলে কী হবে কিংবা ভবিষ্যতের কোনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভারত প্রকৃতই কী ভূমিকা পালন করবে-তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তিত। ভুটানের দোকলাম কাণ্ডে চীনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণে ভারতের দ্বিধা দৃশ্যত এ সংশয়কে জোরালো করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে ভারতের সঙ্গে তার নীতি সমন্বয় করছে এবং ভবিষ্যতে আরও করবে। যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত উপলব্ধি করছে, ভারত চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের চোখে দেখবে না। যদিও চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে; ভারত সম্ভবত এ বিরোধ নিয়ন্ত্রণে রাখাকেই ধর্তব্য হিসেবে নিয়েছে। পারস্পরিক সীমারেখার এ উপলব্ধি সত্ত্বেও দুই দেশের জাতীয় স্বার্থেই কিছু বিষয়ে তারা ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত  উভয়েই সম্ভবত আশা করবেন দেশে আরও অনুকূল সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক, যা তাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর করতে পারে। উভয় দেশই নিজস্ব হিসাব থেকে অন্য দেশে তার নির্ভরযোগ্য মিত্র খুঁজছে।মোদি যেভাবে ২০১৯ সালে টেক্সাসের হিউস্টনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী র‍্যালিতে অংশ নিয়ে অকূটনৈতিক ভাষায় ‘আভ কি বার, ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান তুলে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে চেয়েছেন; তেমনি ডেমোক্র্যাট বাইডেনও ভারতের কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা নিয়েছে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে-তারা কীভাবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সঙ্গে তাদের বৈশ্বিক আকাঙ্ক্ষার সমন্বয় করবে। যুক্তরাষ্ট্র যদি ভারতকে নিঃশর্ত সমর্থন দিতে চায়, সে ক্ষেত্রে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকেন্দ্রিক তাদের বৈশ্বিক এজেন্ডা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস পাবে। ভারতে যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার অগ্রাধিকার হারাচ্ছে, তার প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিচারিতা হিসেবে গণ্য হবে। 

এটি বাকি বিশ্বের পশ্চিমাদের প্রতি অবিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করবে। যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নিতে পারে। তারা ভারতের বর্তমান শাসকদের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখে সামরিক-বেসামরিক ক্ষমতা কাঠামো ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক সবল করায় মনোযোগী হতে পারে। এতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারত যাতে পুরোপুরি পশ্চিমা বলয়ের বাইরে না যায় এবং ব্রিকস কিংবা নতুন বৈশ্বিক মেরূকরণে পশ্চিমাদের পুরোপুরি না হলেও কিছুটা পক্ষে থাকে, সেটি নিশ্চিত করা যাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতি কতটা টেকসই হবে, তা নির্ভর করবে তাদের আগামী নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। অন্যদিকে ভারতের জন্য পশ্চিমা বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ কিছু মাত্রায় বজায় থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সামরিক সম্পর্কের লক্ষ্য চীনের সঙ্গে বিরোধ বাড়ানোর চেয়ে বরং নিয়ন্ত্রণে রাখা। ভৌগোলিক প্রতিবেশী হওয়ায় ভারত সম্ভবত অবগত চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো সরাসরি সংঘাত তার স্বার্থের অনুকূল নাও হতে পারে। ভারত ক্রমাগত তার এই বাস্তববাদ উদ্ভূত পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখবে এবং ব্রিকসসহ অন্যান্য বৈশ্বিক ফোরামে নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করে যাবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে; ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের এই জটিল সম্পর্ক দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর জন্য কী বার্তা বহন করে। ভারত যেভাবে চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের চোখ দিয়ে দেখছে না, যুক্তরাষ্ট্রও দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোকে ভারতের চোখ দিয়ে দেখতে চাইবে না। ভারত সহ বিশ্ব রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদি অন্যতম এক আলোচিত নাম। বিশ্লেষকদের মত, মোদির শক্তিশালী নেতৃত্ব এবং আত্মবিশ্বাস তাকে বিশ্বের শক্তিধর নেতাদের কাতারে নিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের নেতৃত্ব দেয়া মোদি এখন পশ্চিমা বিশ্বের কাছে অতি কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিত্ব। কারণ তাদের কাছে মোদির ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক খেলোয়াড় যার রয়েছে চীনকে প্রতিহত করার সক্ষমতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে মোদি ভারতকেই এগিয়ে নেয়ার কাজ করেছেন। 

লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক 

এমএসএম / এমএসএম

বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনে শহীদ জিয়াউর রহমান

জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংস্কার করতে হবে

গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলো কি করছে

জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯) ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

গনতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাজনীতিতে গুরুত্ব বেড়েছে শহীদ নূর হোসেনের

রাজনৈতিক নির্বুদ্ধিতার পরিণাম ভালো হয় না

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও বিশ্বে তার প্রভাব

অতীত ব্যর্থতা কাটিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে চায় মানুষ

আধুনিক প্রযুক্তির বিশ্বে বদলে যাচ্ছে চাকরির বাজার

বিকল্প বাজারজাত না করে পলিথিন নিষিদ্ধ বাস্তবায়নের অন্তরায় হতে পারে

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে মানুষের শেষ আশাটাও হারিয়ে যাবে

মার্কিন নির্বাচন রাজনৈতিক সংঘাতের আরেকটি অধ্যায়

আলোর উৎসব দীপাবলিতে কেটে যাক সব আঁধার