সুফল প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সুফল প্রকল্পের ৩২০ হেক্টর বাগানের পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের পদুয়া রেঞ্জ ও হাংগর বিটের কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুর মোরশেদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, সুফল প্রকল্পের বাগান পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য হেক্টর প্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় বনবিভাগ। কাগজে কলমে কাজ দেখিয়ে মাঠ পর্যায়ে কোন প্রকার কাজ না করে বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকা বন বিভাগের কর্মকর্তা মঞ্জুর মোরশেদ আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা।
শুধু তাই নয়, সুফল প্রকল্পের বাগানের পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল হাংগর বিটের দেড়শো'র অধিক জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকার কথা থাকলেও এ কার্যক্রম না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।স্থানীয় সচেতন মহল জানান, মোঃ মঞ্জুর মোরশেদ হাংগর বিটের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পদুয়া রেঞ্জের দায়িত্বেও নিয়োজিত। যার কারণে বিটের যে কোন বৈধ ও অবৈধ কাজ করতে রেঞ্জ কর্মকর্তার অনুমতির প্রয়োজন পড়ছে না। তিনি বিটের অবৈধ কাজের অনুমতি দিয়ে পরবর্তীতে বৈধতা দেয়ার দায়িত্বও তিনিই পালন করছেন। ফলে অনিয়ম করলেও শাস্তি হওয়ার কোন সুযোগ থাকছে না বলেও জানান তারা।
পরিবেশবিদরা বলছেন, সুফল প্রকল্পের যে টাকা বিশ্ব ব্যাংক দিয়েছে তা ঋণ হিসেবে দিয়েছে। যদি এভাবে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয় উক্ত ঋণের দায়ভার বন বিভাগ কি বহন করতে পারবে? তাহলেই বলতেই হয় এ যেন ঋনের টাকায় ঘি খাওয়া।
সরেজমিনে দেখা যায়, পদুয়া রেঞ্জের হাংগর বিটের সারাসিয়া ও আশপাশের এলাকায় ২০২১-২২ অর্থবছরে সুফল প্রকল্পের আওতায় ৮০ হেক্টর করে ৩২০ হেক্টর বাগান করা হয়েছে। সুফলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেলেও পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। পরিচর্যার অভাবে প্রথম বছরেই মারা গেছে ৪০ শাতাংশ চারা। দ্বিতীয় বছরে কম্পোস্ট সার দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। দ্বিতীয় বছরেও পরিচর্যার অভাবে মারা গেছে ২০-৪০ শতাংশ চারা। মাঠ পর্যায়ে প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণমূলক পরিবীক্ষণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়াও বাগানের সাইনবোর্ডে গামার, চিকরাশি, আকাশমনি, পিতরাজ, ধারমারা, সোনালু, কাজুবাদাম, ছাতিয়ান, সিভিট, রক্তচন্দন, খয়ের, আমলকি, হরিতকী, বহেরা, অর্জুন,কাঞ্চলভাদী, নিম, বকাইন, শিমুল, পলাশ, কাঞ্চন, চাকুয়া কড়ই, তেতুয়া কড়ই, কড়ইসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৮ লাখ গাছের চারা লাগানোর কথা থাকলেও সরেজমিনে সাইনবোর্ডের প্রজাতির সাথে বাস্তবতার কোন মিল পাওয়া যায়নি। কয়েকটি প্রজাতির দেখা মিললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লাগানো হয়েছে আকাশমনি ও অন্য গাছ।
এছাড়াও কথা হয় হাঙ্গর বিটের জঙ্গল পদুয়া এফসিপির আহবায়ক নুরুল হক, ধলিবিলা এফসিপির আহবায়ক আলী নেওয়াজ ও পদুয়া এফসিপির আহবায়ক রফিকুল ইসলামের সাথে। তারা জানিয়েছেন , সুফল প্রকল্পের জীবিকা উন্নয়ন তহবিল কর্মসূচীর মাধ্যমে ১৮৩ জন উপকারভোগীকে হাস-মুরগী ও গরু-ছাগল ক্রয়ের জন্য ২৫ হাজার ২০০ টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও ৯০ জন এখনো টাকা পায়নি। এছাড়াও গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৩টি কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট ফান্ডের (সিডিএফ) অধীনে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা করে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। সুফল প্রকল্পের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও জীবিকা উন্নয়ন তহবিল ও সিডিএফ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
সরেজমিনে গেলে হাংগর বিটের পেট্রল মনিটরে থাকা সরওয়ার কামালের সাথে দেখা হয়। তিনি জানিয়েছেন, সুফল প্রকল্পের কেয়েকটি বাগান করা হলেও রক্ষাণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও অজানা করানে নীরব হয়ে আছে বনবিভাগের কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুর মোরশেদ। তিনি যোগদানের পর নাম মাত্র একবার পরিদর্শনে আসলেও আর কখনোই দেখা মেলেনি তার। সবকিছু আমরা উপকারভোগীরাই দেখাশোনা করি। বিনিময়ে প্রতিমাসে নামমাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচের টাকা দেয়। এছাড়া তাদের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়না বলে জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাংগর বিট ও পদুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, পদুয়া রেঞ্জের অধীনে কোন নিউজ সংগ্রহ করতে গেলে তার অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। এ নিয়মটা কবে চালু হল জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সম্প্রতি বন্যার কারনে সুফলের বাগান পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের কাজ শুরু করতে পারিনি। খুব শীঘ্রই পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণের কাজ শুরু হবে। এবং জীবিকা উন্নয়ন তহবিল ও কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট ফান্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, সুফল প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ করার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও এই দুই প্রকল্পে বেশ কিছু জটিলতার কারনে উপকারভোগীরা অনেকেই টাকা পায়নি এবং ডেভলপমেন্টের কাজ শুরু হয়নি। খুব শীঘ্রই অভিযুক্ত বিষয়গুলো সমাধান করা হবে জানান তিনি।
এমএসএম / এমএসএম
কোন লুটেরা, চাঁদাবাজ ও বল প্রয়োগকারীকে ভোট দেবেন না; গণসংযোগে রাশেদ খান
খানসামা টিটিসিতে ধর্মীয় বৈষম্য–নির্যাতনের অভিযোগ: জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে তদন্ত আবেদন
কেরুজ ভোটের দাবীতে আন্দোলনের শুরুর দিনেই দুপক্ষের মারামারি
নওগাঁয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ধলু’র উদ্যোগে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল
কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন
নৈয়াইর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাহার
রামগঞ্জে যুবদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে বিএনপি কর্মী খুন
ঠাকুরগাঁওয়ের ফকিরপাড়া থেকে মটরসাইকেল চুরি : মামলা
কলাবাড়িয়া ইউনিয়নে দিনব্যাপী গণসংযোগে সরব জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার
কর্ণফুলী'তে হত্যা'সহ একাধিক মামলার এজাহার ভূক্ত আসামি সাজু হাসান গ্রেপ্তার
শীতের আগমনে লেপ তোষকের ব্যস্ততা; পলাশবাড়ীতে জমে উঠেছে ধুনকরদের শীতের বাজার
কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান