‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’ শান্তি প্রতিষ্ঠার এক বিরল দৃষ্টান্ত

‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’ শান্তি প্রতিষ্ঠার এক বিরল দৃষ্টান্ত। দীর্ঘ সময় ধরে এই সঙ্কটটি কখনই রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কখনও দমন নিপীড়ন এবং কখনও অগণতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে কয়েক দফা সংলাপের পর পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি একটি ঐতিহাসিক এবং যুগান্তকারী চুক্তি।
দীর্ঘ সময় ধরে এই সঙ্কটটি কখনই রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কখনও দমন নিপীড়ন এবং কখনও অগণতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সুদীর্ঘকাল বিরাজমান সঙ্কট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ সালে প্রথম বারের মতো পার্বত্য জেলায় দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন। তারই ধারাবাহিকতায় পাহাড়ি-বাঙালি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখার স্বার্থে শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে আরও অনেক কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়।
শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে জনসংহতি সমিতির প্রায় দুই হাজার সদস্য অস্ত্র সমর্পণ করে। সরকার তাদের পুনর্বাসন করাসহ পুলিশ ও আনসারে ৬৮৫ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন পদে তাদের নিয়োগ দেয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর পরই পর্যায়ক্রমে চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাশাপাশি চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার বিগত ২৬ বছরে শান্তিচুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে অধিকাংশ উল্লেখযোগ্য ধারা সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন করেছে। চুক্তির অবশিষ্ট বেশ কিছু ধারা বর্তমানে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন। বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে বাকি ধারাগুলো বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছে।
অনেকের মতে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক অগ্রগতি হয়নি। একটি কুচক্রি মহল পাহাড়কে অশান্ত করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল রাখতে নানা উস্কানি দিয়ে চলেছে। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি জেলা থেকে এই মহলটি শফিকুল ইসলাম রাসেল নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেন। এছাড়াও প্রতিনিয়তই চলছে গুম, খুন, অপহরণ হত্যার মতো জঘন্ন কাজ। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর গত ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তির যে উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে সেগুলো হল:
ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে ভূমি কমিশন গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ভূমি কমিশন কমিশনের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার ভূমি সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন ২০১৬ জাতীয় সংসদে অনুমোদিত হয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ‘ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিধিমালা’ প্রণীত হলে ভূমি কমিশনে জমা পড়া বিরোধসংক্রান্ত আবেদনগুলোর শুনানি শুরু হবে। শান্তিবাহিনীর সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা এবং পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিল-২০১০ জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট গড়ে উঠেছে। ১৯৭৬ সালে জারি করা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অধ্যাদেশ বাতিল করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন ২০১৪ জাতীয় সংসদে পাস করা হয়েছে। চাকরির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নির্ধারিত কোটা অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একজন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মাননীয় সংসদ সদস্যকে প্রতিমন্ত্রী সমমর্যাদায় নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
১৯৯৮ সালে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়েছে। শান্তিচুক্তির পর পার্বত্য অঞ্চলের জেলাগুলোয় স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে টেলিযোগাযোগ, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের আওতা বৃদ্ধি এবং ইন্টারনেট ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে।
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি, সেটি সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। চট্টগ্রামের পার্বত্যাঞ্চলে রক্তক্ষয়ী সংঘাতময় পরিস্থিতি যুগের পর যুগ বিরাজমান ছিল। সমস্ত উদ্বেগ, শঙ্কা, উৎকণ্ঠা এবং রক্তক্ষয়ী সেই সংঘাতময় পরিস্থিতির সমাপ্তি ঘটে ১৯৯৭ সালের ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মাধ্যমে।
এই ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে সবাই যৌথভাবে একযোগে কাজ করতে পারলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথ সুগম হবে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের নাম বিশ্ব ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
