গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের বদলির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুলের অন্যত্র বদলির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন জানানো হয়েছে। রবিবার দুপুরে ডাকযোগে এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের দপ্তরিক ইমেইলে এ আবেদন পাঠান গাইবান্ধার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এতে আইনজীবি, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষর করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুল স্থানীয় সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে অসহযোগিতা মূলক আচরণ করে আসছেন। তিনি জনগণের সেবক না হয়ে শাসক হিসেবে ভুমিকা পালন করছেন।
নানা প্রশাসনিক কাজে তাঁর কক্ষে দেখা করতে গেলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির জেলায় জেলা প্রশাসক একজন সহকারি কমিশনারকে এপিএস নিয়োগ দিতে পারবেন। কিন্তু গাইবান্ধা একটি দ্বিতীয় শ্রেণির জেলা। তারপরও জেলা প্রশাসক প্রভাব খাঁটিয়ে একজন সহকারি কমিশনারকে এপিএস নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁর জন্য পৃথক কক্ষ স্থাপন করেছেন। দর্শনার্থীরা তাঁর নিয়োগকৃত এপিএস (সহকারি কমিশনার) এর কাছে স্লিপের মাধ্যমে সাক্ষাতের কারণ উল্লেখ করতে হয়। স্লিপ পাঠিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও তাঁর সাথে স্বাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া যায় না।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সাংবাদিকরা সরকার ও প্রশাসনের নানা উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড জাতির সামনে তুলে ধরেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক যোগদানের পর থেকে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতে গণমাধ্যম কর্মীকে অবগত করেন না। ফলে সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায় না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করেন। পাশাপাশি উন্নয়নের স্বার্থে প্রশাসনকে পরামর্শ মূলক গুরুত্বপুর্ণ তথ্য কেউ তাঁকে জানাতে পারছেন না।
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের নির্বাচনী ব্রিফিং করেন। ব্রিফিংয়ের এক পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানার সামনে স্থানীয় সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের নানা অসহযোগিতার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
এনিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে হৈচৈ শুরু হয়। এতে ইসি রাশেদা সুলতানা এবং রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ক্ষুব্ধ হন। পরে তাদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসময় জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল সবার উদ্দেশ্যে জানান, বক্তব্য প্রদানে সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সরাসরি বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের অনুমতির প্রয়োজন হয়। অথচ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সরকারের পক্ষে কথা বলে থাকেন।
এনিয়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে বদলির দাবি জানিয়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার ২১ জন সাংবাদিক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আবেদন জানান। যা প্রতিবেদন আকারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
আবেদনে বলা হয়, জেলা প্রশাসকের এমন আচরণের কারণে তার কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির আচরণও নেতিবাচক পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া সপ্তাহে একদিন অর্থাৎ প্রতি বুধবার গণশুনানি করা বাধ্যতামূলক। তিনি যোগদানের পর থেকে অদ্যাবধি প্রায় ৩০টি গণশুনানি হবার কথা থাকলেও বেশিরভাগ সময় তিনি গণশুনানি করেননি। অল্প সংখ্যক গণশুনানি করলেও সাত-আটজনের বেশি অভিযোগ শোনেন না। অনেকে শুনানি দিতে এসে ফিরে যান। অনেক সময় অন্য কর্মকর্তাদের দিয়েও গণশুনানি করান।
তিনি যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে আইন প্রয়োগে শীথিলতা এসেছে। বর্তমানে জেলায় শতাধিক অবৈধ ইটভাটা চললেও অজ্ঞাত কারণে দুই-চারটি ছাড়া বেশিরভাগ ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর তাঁর কার্যালয়ের ৮৪ জন কর্মচারি নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা ভোররাত পর্যন্ত চালানোর কারণে দুরের নারী প্রার্থীরা বিড়ম্বনায় পড়েন। অনেকে বারান্দায় নিরাপত্তাহীনতায় রাত্রীযাপন করে সকালে বাড়ি ফেরেন।
তিনি তাঁর অধীনস্ত কর্মচারি ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে প্রায়ই খারাপ আচরণ করেন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তিনি প্রেসক্লাব সভাপতিকে তাঁর সম্মেলন কক্ষ থেকে বের করে দেন। আইনজীবিদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ আছে। গাইবান্ধাবাসির কাছে জেলা প্রশাসক এখন আতংকের বিষয়। কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। অনেক কর্মকর্তা তাঁর ভয়ে অতিষ্ঠ হয়ে অন্যত্র বলদির চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এসব কিছুর মুলে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলের বাবা (সাবেক জেলা ও দায়রা জজ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের খুনিদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বলে দম্ভ প্রকাশ করে অন্যদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে অপমান করেন। জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে সরকার ও জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই তাঁকে বদলি করা গাইবান্ধার মানুষের কাছে সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এমএসএম / এমএসএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাচোলে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ প্রায় ২০ জন আহত

কুড়িগ্রামে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

গোপালগঞ্জে ৫৬তম বিশ্ব মান দিবস পালিত

ঠাকুরগাঁওয়ে থানা বিএনপির বর্ধিত সভায় মির্জা,ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বীরগঞ্জে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন.

দোহারে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

এসকেএএল ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রিদে সদস্যপদ পেলেন ডাল্টন জহির

ঝুঁকিপূর্ণ না হওয়ায় পুরাতন যমুনা রেলসেতু লাইনের ব্যালাস্ট পাথর ব্যবহার করে আর্থিক সাশ্রয় পাকশী বিভাগে

সারা দেশের ন্যায় নাগরপুরে সকল এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ মিছিল

শান্তিগঞ্জে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারাভিযান

গোপালগঞ্জে লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রমে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন অসহায় মানুষ

আদমদীঘি উপজেলা অটোচার্জার মালিক ও চালক সমিতির নতুন কমিটি গঠন
