চট্টগ্রাম রেলওয়ের ভুয়া আদেশে প্রকাশ্যে গাছ কেটে পাচারের চেষ্টা, ট্রাকসহ গাছ জব্দ
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড স্কুলমাঠ এলাকা থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকসহ গাছ জব্দ করা হয়েছে।গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন চৌকস সদস্য কাটা গাছ গুলো পিকআপ ভ্যানে করে পাচার হওয়ার সময় বাধা দিয়ে তিনি তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেন। এরপর পরই বিষয়টি খোলাসা হয়। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাছ কেটে সারি সারি ভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে পাচারের উদ্দ্যেশ্যে।
রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই বিষয়ে উনারা কেউ কিছু জানেন না এবং সরকারি বিধি বিধান অনুসারে গাছ কাটার কোনো তথ্য নেই উনার কাছে। কে বা কারা প্রত্যক্ষ ও পারদর্শীভাবে জড়িত বিষয়টি নিয়ে উনারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
সূত্র জানা যায়, নগরীর পলোগ্রাউন্ডে অবস্থিত রেলে টি এ ব্রাঞ্চের আঙ্গিনায় সৌন্দর্য বর্ধনের নামে ঝোপঝাড় কাটার কথা বলেই মূলত সরকারি ছুটির দিনে দেদার গাছ কাটা হচ্ছিল সেখানে। এই বিষয়ে জানার জন্য অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা (টিএ) রাজীব বড়ুয়ার কাছে গেলে তার পক্ষে মো. আবুল হাসান আখন্দ টিএওএন্ডএও (পূর্ব) সাংবাদিকদের জানান, এখানে ঝোপঝাড় পরিষ্কার ও ভবনের মাঝের ফটকের সামনে হাটার জায়গা করতে এমন চেষ্টা করেছে উনারা। এভাবে এতগুলো গাছ কাটার কোনো কোনো পারমিশন বা টেন্ডার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা উনার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডিইএন-২ এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
জানা যায় বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্পদ দেখভাল করার জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্ব থাকলেও তা যথাযথভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পেরে উঠছে না। নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু অসাদু কর্মকর্তার অসচ্ছতা ও জনবল ৪০ শতাংশ হওয়ায় রেলের সম্পত্তি ঠিকমতো দেখে রাখা ও চুরির হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হলে বাস্তবে তা আর পেরে উঠা যায় না। ৬০ শতাংশের উপরে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর জনবল শূন্যতাকে যেমন বহিরাগত চোরেরা কাজে লাগায় রেলের সম্পদ চুরিতে, ঠিক তেমন জনবল কম থাকায়, কিছু অসাদু কর্মকর্তাও লোভে পড়ে বারবার একই অপকর্মে জরাচ্ছেন।
এই বিষয়ে আরএনবির সিআই মাসুদ জানান, কর্তন করা ট্রাক বোঝাই গাছ আটক করা হয়েছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলের প্যাডে মো. আবুল হাসান আখন্দ টিএওএন্ডএও (পূর্ব) এর স্বাক্ষরিত ভুয়া আদেশে লিখা আছে, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা/পূর্ব এর কার্যালয়ের কাঠের আসবাবপত্র মেরামতের প্রয়োজনে কিছু গাছ চিরাই করার জন্য ছমিলে পাঠানো হলো। এব্যাপারে ডিইএন-২ এবং জি এম পূর্বকে ফোন করা হলে কাউকেই মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
এমএসএম / এমএসএম