চৌগাছায় মৃত্যুর চার মাস পর কবর থেকে তোলা হলো জাহিদুলের লাশ
যশোরের চৌগাছায় মৃত্যুর প্রায় সাড়ে চার মাস পর কবর থেকে জাহিদুল ইসলাম (৩০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গুঞ্জন বিশ্বাসের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় কবরস্থানসহ ওই এলাকাতে উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ করা যায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের মৃত আয়ুব হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত শরীয়তপুর জেলাতে থাকতেন। সেখানে থাকার একপর্যায়ে শরীয়াতপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার পাঠান বাড়ি কালিকাপ্রসাদ গুদারাঘাট এলাকার মোকলেছ খালাসীর মেয়ে ফারজানা আক্তারকে (২৬) সে বিবাহ করে। দাম্পত্ত জীবনে তারা দুই সন্তানের জনক জননী।
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি কুড়িগ্রাম জেলাতে বেড়াতে যান। ২৫ জানুয়ারী দিবাগত রাতের কোন এক সময় ফারজানার স্বামী জাহিদুল ইসলাকে নিজ শয়নকক্ষে হত্যা করা হয়। ২৬ জানুয়ারী সকালে ফারজানার ভাই আল ইসলাম মোবাইল ফোনে জাহিদুলের মৃত্যুর বিষয়টি জানানো মাত্রই তারা কুড়িগ্রাম হতে শরীয়তপুর ফিরে আসেন। ওই দিন রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে স্থানীয়রা নিহত জাহিদুল ইসলামকে গোসল করাতে যেয়ে শরীরে চিহৃ ও মুখের ভিতরে রক্ত দেখতে পান। কিন্তু কোন ধরনের ময়নাতদন্ত না করেই প্রতিবেশিরা মরাদেহ চৌগাছায় জাহিদুলের স্বজনদের কাছে দিয়ে দেন। স্বামী হারা ফারজানা কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর দেখতে পাই এনজিও হতে তোলা ৩০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ঘরে নেই। সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে, একপর্যায়ে সে সন্দেহভাজন ছাড়াও অজ্ঞাতদের আসামী করে মামলা করেন।
ফারজানা মামলায় আরও উল্লেখ করেন, তার স্বামীর মৃত্যুর কয়েক দিন আগে আসামীদের সাথে জাহিদুল ইসলামে একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। যার রোকডিং ওই মোবাইল নাম্বরে আজও আছে। তার ধারনা বাড়িতে স্বামী জাহিদুল ইসলামকে একা পেয়ে আসামীরা তাকে স্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং ময়না তদন্ত ছাড়ায় দ্রæত গোসল সম্পন্ন করে স্বামীর স্বজনদের কাছে মরাদেহ বুঝিয়ে দেন। এ ঘটনার কিছু দিন পর তিনি মামলা করেন পাশাপাশি মরাদেহ কবর হতে তুলে ময়নাতদন্তের আর্জি জানান। তার আর্জির ভিত্তিতে শরীয়াতপুর আদালত মরাদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিন। আদালতের নির্দেশক্রমে মঙ্গলবার দুপুরে চৌগাছার হোগলডাঙ্গা গ্রাম হতে মরাদেহ তুলে ময়না তদন্তে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজষ্ট্রেট গুঞ্জন বিশ্বাস বলেন, প্রায় সাড়ে চার মাস আগে ঘটনাটি শরীয়পুর জেলাতে ঘটে। মামলা হওয়ার পর মহামান্য আদালত লাশ তুলে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন। আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে এসেছি, আমার সাথে শরীয়পুর থানা পুলিশের কর্মকর্তারও উপস্থিত আছেন।
এমএসএম / এমএসএম