বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রত্যাশা
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি বিশ্বমানের রাষ্ট্র ব্যবস্থা দিতে পারেন

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহন করেন। তিনি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারেন। নিচে কিছু সম্ভাব্য পদক্ষেপ আলচোনা করা হলো:
১. নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থা গঠন
- নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ: ড. ইউনূস নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ করার জন্য আইনি এবং কাঠামোগত সংস্কার করতে পারেন, যাতে তারা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারে।
- নির্বাচনী আইন শক্তিশালীকরণ: নির্বাচনী বিধিমালা শক্তিশালী করে ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ভোটগ্রহণ এবং ফলাফল ঘোষণার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
- ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (EVM) ব্যবহার: ভোটের স্বচ্ছতা এবং জালিয়াতি রোধে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রচলিত করা।
২. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন
- নিরপেক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী গঠন: পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রমকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা করা।
- সহিংসতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ: রাজনৈতিক সহিংসতা এবং দুর্নীতি বন্ধে শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তা কার্যকর করা।
৩. গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণ
- সংলাপ ও সমঝোতার উদ্যোগ: রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপ আয়োজন করে তাদের মধ্যে সমঝোতা তৈরি করা, যাতে একটি স্থিতিশীল ও কার্যকর রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হয়।
- রাজনৈতিক সংস্কার: রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আরও সুশৃঙ্খল করতে নতুন আইন প্রণয়ন করা।
৪. সুশাসন ও প্রশাসনিক সংস্কার
- প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি: সরকারি প্রশাসনের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক সংস্কার করা।
- দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স: দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের দুর্নীতি দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।
৫. অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন
- সামাজিক ব্যবসা প্রচলন: দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সামাজিক উন্নয়নে ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা মডেল প্রয়োগ করা, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।
- ক্ষুদ্র ঋণ ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি: দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ক্ষুদ্র ঋণ সুবিধা বিস্তৃত করে তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা।
- মানবসম্পদ উন্নয়ন: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।
৬. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি
- মিডিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ: সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করে দেশের সকল প্রকার তথ্য ও সংবাদ নিরপেক্ষভাবে প্রকাশের সুযোগ প্রদান।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার: জনগণকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে এবং তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানো।
৭. টেকসই উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন
- পরিবেশবান্ধব নীতি: টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহিত করা।
- গ্রামীণ উন্নয়ন: দেশের গ্রামীণ এলাকায় অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা উন্নয়ন করে শহর-গ্রামের বৈষম্য দূর করা।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ একটি কার্যকর, সুশৃঙ্খল এবং জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হতে পারে।
লেখক: কলামিস্ট।
এমএসএম / Aminur

মার্কেটিং বিক্রি বাড়ায়, যোগাযোগ ব্র্যান্ড তৈরি করে

নির্বাচনী ব্যবস্থায় গণমাধ্যম নীতিমালার প্রস্তাবিত সংস্কার ও গণমানুষের প্রত্যাশা

বাংলাদেশ সংবিধানের আলোচিত ৭০ অনুচ্ছেদ প্রেক্ষিতঃ রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত

শতাব্দির সেরা মাটির সৈনিক কৃষক যোদ্ধা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট ও জনগণের প্রত্যাশা

ট্রাম্প-সালমান কথোপকথনে বিশ্ব কী বার্তা পেল

এফবিসিসিআইর ডিজিটাল রূপান্তর : ব্যবসায়িক নেতাদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সেবা

জাতীয় ঐকমত্য কঠিন হলেও উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অনন্য উচ্চতায় তারেক জিয়া

কেমিক্যাল আতঙ্ক নয়, চাই বিজ্ঞানসম্মত আমচাষ ও প্রশাসনিক সচেতনতা

শুভ অক্ষয় তৃতীয়া: দানে ধ্যানে অনন্তকালের পূণ্যলাভ

শিক্ষা উপকরণের ব্যবহার ও গুরুত্ব, বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
