শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও আবর্জনার স্তুপ অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ,দি বার্ডস রেসিডেনসিয়্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ময়লার ভাগাড়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল পালন করে।
পরে কলেজের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে চৌমুহনী চত্বরে এসে অবস্থান নেয়। পরে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তারের কাছে স্মারকলিপি পত্র জমা দেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ আমরা আমাদের নৈতিক দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। আশা করি সবাই আমাদের দাবিগুলো বুঝতে পেরেছেন। আমাদের একটাই দাবী, দীর্ঘ একযুগেরও বেশী সময় ধরে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে যে ময়লার ভাগাড়টি রয়েছে, সে ময়লার ভাগাড়টি সরানোর দাবি। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্টানের সামনের ময়লা ভাগাড়টি আজকালকের নয়, এটি অনেক বছর ধরে। আমাদের বড় ভাই-আপুরা এটা সরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু এই ময়লার স্তুপ সরানোর কোন ফলাফল এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। এই ময়লার ভাগাড়ের জন্য আমাদের ক্লাস করতে কি পরিমাণ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি, সেটা একমাত্র আমরাই বলতে পারি।’
দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান চৌধুরী বলেন, ‘বিগত ১৩ বছর ধরে এই কলেজে পড়াশোনা করছি। কিন্তু আমার ছোট ভাই একদিন আসলে দু'দিন আসতে পারে না। কারণ হচ্ছে, সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন রোগবালাই তার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় ওর ফুড পয়জনিং হয়ে যায়। ক্লাসের মধ্যে হঠাৎ বাতাসে দুর্গন্ধ আসলে আমরা ক্লাস ঠিক ভাবে করতে পারি না। দিন দিন শিক্ষার্থীদের কলেজে আসা কমে যাচ্ছে, একমাত্র এই ময়লার ভাগাড়ের জন্য। আমাদের দাবি, এই ময়লার ভাগাড়টা যেনো দ্রুত এখান থেকে সরানো হয়।
মানববন্ধনে কলেজ শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার সাথী বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, আমাদের দাবি যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করা হোক। আর আমাদের দাবি যদি বাস্তবায়ন বা পূরণ না করা হয়, তাহলে অবস্থা কিন্তু বেশী ভালো হবে না। আমাদেরকে অনেক দিন ধরে আশা দিয়ে রাখছে, আমরা তুলে রাখছি। কথা কেউ রাখেনি। আমরা চাই, দ্রুত এই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করা হোক। আমরা আর এই ময়লার ভাগাড়ে থাকতে চাই না। ময়লার ভাগাড়ের সামনে দিয়েও আর আসতে চাই না।
পথচারী মো:আলম মিয়া সকালের সময় কে বলেন, প্রতিদিন বাজার এবং বাসাবাড়ির ময়লা এখানে ফেলা হচ্ছে। আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে প্রবেশ এবং বের হতে নাকে দুর্গন্ধ পাই। ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান ইমা জানায়, স্কুল চলাকালে বাতাসে দুর্গন্ধ ভেসে আসে। স্কুলে পাঠগ্রহণে মনোযোগ বিনষ্ট হয়।
একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমাদের দাবি একটাই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করতে হবে। ময়লার দুর্গন্ধের জন্য শারীরিক ভাবে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমাদের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ প্রাচীন একটি বিদ্যাপীঠ, কিন্তু এখন শুধু ময়লার ভাগাড় দেখতে পাই। বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে চায় না। এই ময়লার স্তূপ দ্রুত অপসারণ করা প্রয়োজন। শ্রীমঙ্গলের মতো মঙ্গল শহরে একটি অমঙ্গল কাজ করা হচ্ছে। তারই একটা প্রমাণ হচ্ছে স্কুল কলেজের সামনে একটি ময়লার ভাগাড়। আমরা আমাদের দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. মো. ইউনুসের কাছে অনুরোধ ও জোর দাবি জানাই। যাতে তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিকৃত এই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করে আমাদের ভালো ভাবে, সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দেবেন।’
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার বলেন, ‘তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে দীর্ঘদিন যাবৎ ময়লার ভাগাড় রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীসহ যারা আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এটি অপসারণের জন্য একটি পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে পৌরসভা থেকে, আমি যতটুকু জেনেছি। একটি জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, সেটি দখল হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পৌরসভা কাজটি সমাপ্ত করতে পারেনি। আমি এখানে নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থী যারা এসেছেন, সকলের বক্তব্য শুনেছি। অবশ্যই এটি একটি যৌক্তিক দাবি। এবং দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার উচিত বলে আমিও মনে করি। এটি যুক্তিসঙ্গত একটি দাবি।’
তিনি বলেন, ‘আগে নানা কারণে করা হয়নি, এখন আমরা এটি করতে চাই এবং আমার যে আবেদন থাকবে এলাকাবাসীর প্রতি- ময়লার ভাগাড়টি সরিয়ে যেখানে নেওয়া হবে বা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে সরানোর জন্য যাতে আমরা এলাকাবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা পাই। কেউ যেনো আমরা না বলি, যে আমার এখান থেকে সড়ে যাক, কোথায় যাবে জানি না। অনেকেই যাতে না বলে, যে আমাদের এখানে রাখা যাবে না। কোথায় যাবে আমি জানি না।’
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ময়লার ভাগাড়টি স্থানান্তরের জন্য ২০১৭ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জেটি রোড এলাকায় এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা দিয়ে নতুন ভাগাড়ের জন্য ২.৪৩ একর জমি ক্রয় করা হয়েছিল। সে সময় জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় ওই এলাকার ফয়েজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ২০২৩ সালের ১৩ মে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি দুর্গন্ধের কারণে এখানকার তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছেন।ময়লার ভাগাড়টির পাশেই তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। অসহনীয় দুর্গন্ধের কারণে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের।
এমএসএম / এমএসএম

ধামইরহাটে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

বিজয়নগরে আসামী গ্রেফতার করায় অতর্কিত হামলায় এএসআই শেখ সাদী আহত

টেকনাফে মাদক সাম্রাজ্য: কাদের নিয়ন্ত্রণে ভয়ংকর চোরাচালান চক্র

হিট প্রজেক্ট প্রাপ্ত যবিপ্রবির জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের দুই শিক্ষককে সংবর্ধনা প্রদান

রাণীনগরের সেই শিক্ষক আনোয়ারকে সাময়িক বরখাস্ত

মাদারীপুরে ১৮০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১৬ জন

টাঙ্গাইলে ৩৩১২ প্রার্থী থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকায় ৫০ জনের পুলিশে চাকরি

উত্তরবঙ্গ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিস উদ্বোধন

নতুন শপথের মাধ্যমে বরগুনায় বিএনপি'র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

শ্রীনগরে রেলওয়ে আন্ডারপাস থেকে নারীর কাটা লাশ উদ্ধার

হাটহাজারীতে জশনে জুলুছ উদযাপিত

গলাচিপায় প্রকল্প বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
