বনফুল টাওয়ারে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রবাসীর মায়ের সংবাদ সম্মেলন
টাঙ্গাইল জেলা শহরের সাবালিয়া এলাকায় বনফুল টাওয়ারে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক প্রবাসীর মা। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে ওই টাওয়ারের ডেভেলপার ইতালি প্রবাসী একেএম কাইয়ুম কবীর ছোটনের পক্ষে তার মা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লতিফা বেগম (৭৫) বিভিন্ন অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, টাঙ্গাইলের সাবালিয়ায় নির্মাণাধীন দশতলা বনফুল টাওয়ারের কাজ শেষ না হতেই ২০১৯ সালে কিছু ফ্ল্যাট বিক্রি করা হয়। ওই সময় শম্ভু চক্রবর্তীর ছেলে পুলিশের চাকরিচ্যূত কনস্টেবল উজ্জ্বল চক্রবর্তী টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট কেনেন। এরপর তিনি টাওয়ারের ডেভেলপার একেএম কাইয়ুম কবীর ছোটনের কাছ থেকে এক প্রকার প্রভাব খাটিয়ে টাওয়ারের উন্নয়নের জন্য নানা মালামাল ক্রয়ে তদারকির দায়িত্ব নেন। উন্নয়নকাজে প্রয়োজনীয় দামের চেয়ে বেশি দামে মালামাল ক্রয় করায় তার সঙ্গে ডেভেলপারের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
ইতোমধ্যে উজ্জ্বল চক্রবর্তী বনফুল টাওয়ার উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। এরপর থেকে উজ্জ্বল চক্রবর্তী নানা ছলছুতোয় ডেভেলপারের কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করেন। কয়েক দফায় তিনি দাবিকৃত চাঁদার টাকা আদায়ও করেন। পরে ধারাবাহিকভাবে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে মিথ্যা ও সাজানো ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেন এবং টাকা দেয়ার পর মীমাংসা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রবাসীর মা বলেন, বিগত সরকারের শেষ সময়ে উজ্জ্বল চক্রবর্তী ডেভেলপারের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় টাওয়ারের উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দেন। উন্নয়নকাজে নিয়োজিত শ্রমিক ও মিস্ত্রিদের মারপিট করে তাড়িয়ে দেন। তারপর থেকে টাওয়ারের উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হয়। টাওয়ারের অন্য বাসিন্দারাও তার দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা বলেন, উজ্জ্বল চক্রবর্তীর চাঁদাবাজি, হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ভয়ে ডেভেলপার একেএম কাইয়ুম কবীর ছোটন ইতালি থেকে দেশে আসতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো জানান, উজ্জ্বল চক্রবর্তী একজন প্রতারক ও নৈতিকতাবিবর্জিত ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দিয়ে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ প্রতারণার বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। বনফুল টাওয়ারের অন্যান্য ফ্ল্যাট বাসিন্দা ও মহল্লায় তার অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বনফুল টাওয়ারের ভুক্তভোগী ফ্ল্যাটের মালিকরা ও উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দ্বারা পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়া মহল্লাবাসী সম্মিলিতভাবে বিল্ডিংয়ের সেক্রেটারি উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তার অপকর্মের জন্য শান্তি ও ভবন পরিচালনা কমিটি থেকে তার প্রত্যাহার দাবি করেন। এছাড়াও সদর থানাসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে উজ্জ্বল চক্রবর্তী ডেভেলপারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।
ডেভেলপার ওই প্রবাসীর মা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিটি অভিযোগের যে ব্যাখা তুলে ধরেন, তা হলো- ১) টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলী কর্তৃক ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর অনুমতিস্বাপেক্ষে পৌর মেয়র ৬ অক্টোবর প্ল্যান মঞ্জুর করেন, ২) সাপ্লাইয়ের পানির ব্যবস্থা করা হয় কিন্তু পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে দেয়া হয়েছে, ৩) সরকারিভাবে গ্যাসের অনুমোদন না থাকায় প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার কিনে দেয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রেও উজ্জ্বল চক্রবর্তী প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। এছাড়া জমির মালিকের নামে একটি চুলার অনুমোদন ছিল, সেটা চক্রান্ত করে নিজে ব্যবহার করছেন, ৪) সাব-স্টেশন ক্রয় করা হয় বে-পাওয়ার টেকনোলজি লিমিটেড কোম্পানির কাছ থেকে। 200 KVA (11/0.415 KV) বিগত ০১/০৩/২০১৮ ইং তারিখ এবং টাঙ্গাইল PDB-এর মাধ্যমে স্থাপন করা হয়, ৫) ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক অনুমোদনের জন্য সাবমিট করার পর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ আল খালিদ টাঙ্গাইল কর্তৃক ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সুপারিশক্রমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ঢাকা কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদিত হয় ২০১৯ সালের ২১ মার্চ।
৬) দুটি লিফট স্থাপন করা হয় ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি, যা ক্রয় করা হয় নেপচুন লিফট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাছ থেকে (৩৮০ ভোল্ট/৩ P ফেজ/৪০ অ্যাম্পিয়ার), ৭) সোলার ক্রয় করা হয় ৩০/০৪/২০১৯ ইং তারিখ ৩৩০ W। এই সোলার স্থাপন করতে না দিয়ে নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রেখেছেন, ৮। আর্থিং কপার ক্রয় করা হয় বে-পাওয়ার টেকনোলজি লিমিটেড থেকে ৩০/০৩/২০১৯ ইং এবং স্থাপন করা হয়, ৯) অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাস্বরূপ প্রতি ফ্ল্যাটে দুটি করে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করা হয়, ১০) বনফুল টাওয়ারে জেনারেটর স্থাপনের নিমিত্তে উজ্জ্বল চক্রবর্তী ডেভেলপারের কাছ থেকে জোরপূর্বক মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে নিজের নামে উক্ত জেনারেটর ক্রয় করে ভবনে স্থাপন করেন।
ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর বিভিন্ন অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এছাড়াও বনফুল টাওয়ারের পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারির পদ থেকে তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এসব বিষয়ে জানতে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন আগে ফ্ল্যাট কিনলেও এখন পর্যন্ত ডেভেলপার বুঝিয়ে দেননি। তার বিরুদ্ধে আনা সবগুলো অভিযোগ মিথ্যা।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লতিফা বেগমের সঙ্গে তার ছোট ছেলে মো. রাসেল কবির, নাতি রাফিউল সিয়াম ও জিহান তালুকদারসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনসহ বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএসএম / জামান
সুবর্ণচরে শ্রমিকদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ
শাল্লায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর এক ডিলারের বিরুদ্ধে সরকারী জায়গায় ঘর নির্মাণের অভিযোগ
ছয় লেন প্রকল্পে জীবিকা হারানোর শঙ্কা: দোকানদারদের মানববন্ধন
‘‘সহিংসতা এড়িয়ে সংবাদ সংগ্রহের কৌশল” কর্মশালায় নিরপেক্ষ থাকা ও প্রকৃত সাংবাদিকদের ঐক্যের তাগিদ
কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিবগর্কে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান
রৌমারীতে খেলার মাঠ দখল করে আশ্রয়ন প্রকল্পের ভবন নির্মাণের চেষ্টা
মাগুরা ২ আসনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
প্রবাসির কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি, হত্যাচেস্টা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে
দু'পা হারিয়ে কর্মহীন রায়গঞ্জের রফিকুল, সংকটে শিশুপুত্রের পড়াশোনা
পঞ্চগড়ে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
লাকসামে তারেক রহমানের নির্দেশে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি আসনটি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
মোরেলগঞ্জে বিশ্ব ডায়াবেটিসে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প
অবশেষ একাধিক ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত “সোর্স রেজাউল” গ্রেফতার
Link Copied