দেয়া হচ্ছে যততত্র অ্যান্টিবায়োটিক
তানোর ও বরেন্দ্র অঞ্চলের গ্রামে ওষুধের দোকানিরাই চিকিৎসকের ভূমিকায়
রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দেওলা গ্রাম। এ গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে এরশাদ আলী। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই শেষ করেছেন শিক্ষাজীবন। নিজ গ্রাম দেওলা-ভিমপাড়া মোড়ে পাকা ঘর তুলে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে করছেন ওষুধের দোকান। নেই দোকানের ড্রাগ লাইসেন্স, নেই কোনো চিকিৎসার প্রশিক্ষণের সনদ। শিশু-কিশোর-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছেন নিজেই। ডায়াবেটিস, হাইপ্রেশার, কাটা, ব্যথা, জ্বর-সর্দি হলেই নিয়মিত ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন রোগীদের।
একই উপজেলার বাধাইড় ইউপির বদলপুর গ্রামের জহরুল ইসলাম। প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন তিনি। এরপর কৃষিকাজে যুক্ত হন। কৃষিকাজ ভালো না লাগায় গত ৬ বছর আগে গ্রামের মোড়ে টিনের ঢপে করেছেন মুদির দোকান। দোকানে চাল, ডাল, তেল, লবণসহ চা-পানের ব্যবস্থা আছে। তার দোকানঘরের সদা্ইয়ের মধ্যে এক পাশে সাজানো অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা রোগের ওষুধ। মুদি দোকানি জহরুল ইসলামের বেশি রোগী এলাকার আদিবাসীসহ শ্রমজীবী মানুষ। রোগের কথা শুনে নিজে দিচ্ছেন ওষুধ।
জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ভয়ংকর ব্যবহার ও চিকিৎসার গল্প দুটি শুধু তানোর উপজেলার দেওয়া ও বদলপুর গ্রামের নয়; রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ পুরো বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রতিটি গ্রাম ও মোড়ে এমন হাজারও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকান গড়ে উঠেছে। আর মুদি দোকানে ওষুধ রাখার সংখ্যা আরো বেশি। এসব দোকানে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক, যার বেশিরভাগ নকল ওষুধ।
রাজশাহী জেলা ড্রাগিস্ট অ্যান্ড কেমিস্ট সমিতির আওতায় মুন্ডুমালা বাজারে রুবেল ফার্মেসির মালিক হালিমুজ্জামান রুবেল সকালের সময়কে জানান, দেশের অনেক নামিদামি কোম্পানির নাম ব্যবহার করে অ্যান্টিবায়োটিকসহ অনেক রকম নকল ওষুধ তৈরি করা হয়। এসব নকল ওষুধ কোম্পানির লোকজন লোভ দেখিয়ে গ্রামের ফার্মেসিগুলোকে তাদের ওষুধ বিক্রিতে উৎসাহ দেন। আর বেশি লাভের আশায় দোকানিরা নকল ওষুধ গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছে উচ্চদামে বিক্রি করেন।
সরেজমিন গত এক সপ্তাহ রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গ্রামঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, এমন কোনো গ্রামের মোড় নেই যেখানে একাধিক ওষুধের দোকান গড়ে ওঠেনি। এসব ওষুধের দোকানিরা নিজেই চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে নানা ওষুধ দিয়ে থাকেন রোগীকে।
এসব বিষয়ে ড্রাগ লাইন্সেসবিহীন দেওয়া গ্রামের এরশাদ আলী ও বদলপুর মুদি দোকানি জহরুল ইসলামসহ একাধিক দোকানি সকালের সময়কে বলেন, জ্বর-সর্দিতে নাপা ও স্যালাইন, গ্যাসের ওষুধ আমরা বিক্রি করে থাকি। হাতের কাছে ওষুধ পেয়ে গ্রামের মানুষের উপকার হয় বলে দাবি করেন তারা।
বাংলাদেশ ড্রাগিস্ট অ্যান্ড কেমিস্ট সমিতি রাজশাজী জেলা শাখার সহ-সভাপতি শামিম চৌধুরী সকালের সময়কে বলেন, রাজশাহী জেলায় সমিতির আওতায় ৯০০'র বেশি ফার্মেসি রয়েছে। সমিতির ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া একটিও অ্যান্টিবায়োটিক রোগীদের দেন না। সমিতির পক্ষ থেকে ড্রাগ লাইন্সেস ছাড়া গ্রামে গড়ে ওঠা ও মুদি দোকানে ওষুধ বিক্রি বিষয়ে গত মাসের ২৪ তারিখে জেলা শহরে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ওই সেমিনারে জেলা সিভিল সার্জন ছাড়াও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। নকল ওষুধ ও গ্রামে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ফার্মেসি বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
মুন্ডুমালা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্ম উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. দুরুল হুদা সকালের সময়কে বলেন, অযথা অ্যান্টাবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ দিলে রোগীর রোগপ্রতিরোধ সক্ষমতা হারাবে। লিভার, কিডনি ড্যামেজ হয়ে পড়বে। পরে জটিল রোগ হলে অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজে লাগবে না। এছাড়া আর নকল ওষুধ সেবন করলে রোগীর আরো ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।
এমএসএম / জামান
তারেক রহমানের সংবর্ধনা : চাঁদপুর থেকে যাবে ২৫ হাজার নেতাকর্মী
নাগেশ্বরীতে পূর্ব দুধকুমর পাড় মানব কল্যাণ যুব সংগঠনের শীত বস্ত্র বিতরণ
ভোলাহাট সদর ইউনিয়নে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
দূর্গম পাহাড়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসন করল সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারকালে ৩ বাংলাদেশি আটক
আধুনিকতার ছোঁয়ায় গরু দিয়ে হালচাষ এখন শুধুই স্মৃতি
গাজীপুর রেড ক্রিসেন্ট নির্বাচন: বিএনপি সমর্থিত বাবুল-টুলু প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয়
জয়পুরহাটে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ
ভূঞাপুরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানা
মান্দায় দায়সারা কাজ করে প্রকল্পের সাড়ে ৩০ টন চাল গায়েব
অভয়নগরে মাদরাসার এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে কম্বল বিতরণ
তানোরে অসহায় দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ