মিরসরাইয়ের সরকারি বনাঞ্চলে হরিলুট
উজাড় হচ্ছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাটের সরকারি বনাঞ্চল। এক শ্রেণির কিছু বনখেকো মানুষের থাবায় সাবাড় হচ্ছে এই সরকারি বনাঞ্চল। উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়নের সবুজ বনায়ন নিধন যেন থেমে নেই। রাতের আঁধারে কেটে নেয়া হচ্ছে সবুজ বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছ। বিট কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেটে নেয়া গাছগুলো নিয়ে আসা হচ্ছে বিভিন্ন স’ মিল ও কাঠের দোকানে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বনদস্যুদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
গত ৩ আগস্ট রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফটিকছড়ি উপজেলার হোয়াকো এলাকা থেকে ৪৫ পিস সেগুন কাঠ আটক করে করা হয়। এছাড়াও জুলাই মাসের ৮ তারিখে অবৈধ কাঠসহ (১১-৭৮৯৯) নাম্বার প্লেটের একটি ট্রাক ফরেস্ট গেট দিয়ে অনায়াসে চলে যায়। অথচ ওই ট্রাকের বিষয়ে আগে থেকে তথ্য দেয়া হয়েছিল বলে জানা যায়।
জানা গেছে, করেরহাট রেঞ্জের আওতায় ১২ হাজার ৯৪ একর বনভূমি রয়েছে। এই বনে সেগুন, মেহগনি, আকাশমণি, চাপালিশ, গামারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। গত মে মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৯৫০ ঘনফুট কাঠ উদ্ধার করেছেন বন কর্মকর্তারা। এগুলোর মধ্যে ৮০.৯৮ ঘনফুট সেগুন, ৩.১৫ ঘনফুট জ্বালানি কাঠ, ৭২৪.৪৬ ঘনফুট আকাশমণি ও ৮৬.১ ঘনফুট বিবিধ কাঠ রয়েছে।
এছাড়া সরকারি বনের গাছ কাটা সংক্রান্ত দুটি পুলিশি মামলাসহ মামলা হয়েছে ১০টি। সর্বশেষ চলতি মাসের গাছ কাটা সংক্রান্ত মামলায় দুজনকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে করেরহাট বিট কাম চেক স্টেশনের বন কর্মকর্তা ময়েন উদ্দিন সাংবাদিকদের বসিয়ে রেখেও বক্তব্য প্রদান করতে রাজি হননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে করেরহাট রেঞ্জের ফরেস্ট গেটের স্টেশন অফিসার সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, আপনাদের যা মন চায় লেখেন। সাংবাদিকদের সৌজন্যমূলক বসার জন্যও বলেননি। অথচ তার পাশে দুটি চেয়ারে দোকানদার আব্দুল গফুর ও কাঠ ব্যবসায়ী আফসারকে নিয়ে বসেছিলেন। এমনকি উক্ত ব্যক্তিদ্বয় সাংবাদিকদের সাথে স্টেশন অফিসার ময়েন উদ্দিনের হয়ে কথা বলেন।
করেরহাট রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এজেএম জসিম উদ্দিন এলাহী জানান, বনদস্যুদের সাথে বন কর্মকর্তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। করেরহাট চেক স্টেশনের মাধ্যমে সড়কে যাতায়াতকারী সকল কাঠের গাড়ি চেক করা হয়ে থাকে এবং অবৈধ কাঠ পেলে জব্দ করে থাকি।
এমএসএম / জামান