গাছে বাঁধা অবস্থায় কাটচ্ছে শুভর ১৫ বছর
নেত্রকোনার বারহাট্টায় হারিয়ে যাওয়া ও দূর্ঘটনাার ভয়ে ১৫ বছর ধরে গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন দরিদ্র পরিবারের সন্তান শুভ। দারিদ্র্যের কষাঘাতের মধ্যে জন্ম হলেও স্বাভাবিকই ছিল শুভ'র বেড়ে উঠা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সুস্থ সুন্দর জীবন নিয়ে চলা হলো না তাঁর। সুস্থ স্বাভাবিক জন্ম হলেও ৩ বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায় শুভ চন্দ্র দাস।
শুভ চন্দ্র দাস নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলাধীন আসমা গ্রামের মৃত সুভাষ চন্দ্র দাসের ছেলে। পিতা সুভাষ চন্দ্র দাস ৯ বছর আগে মারা যান। সুভাষ চন্দ্র দাস তার চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল নিজের বসবাসের জায়গাটুকুও বিক্রি করে দিয়েছেন।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি সুভাষ চন্দ্র দাস মারা যাওয়ার পর স্ত্রী কল্পনা রানী দাস দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। ছোট মেয়েটি ৪র্থ শ্রেণিতে ও বড় মেয়েটি ৯ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। বড় ছেলে সোহাগ চন্দ্র দাস গ্রামের ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের পড়িয়ে মাস শেষে যা পায় তা দিয়ে কোনরকম দিন কাটে তাদের।
নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় বর্তমানে অন্যের জায়গায় প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় একটি ঘর বানিয়ে চার সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন কল্পনা। বসবাসের ঘরটি পুরনো হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে চাল বেয়ে ঘরে পানি পড়ে। প্রতিবন্ধী ছেলে শুভ ঘরের মেঝেতে খড় চাটাইয়ের বিছানায় মাটিতে থাকে। কল্পনার নিজের নামে একটি বিধবা ভাতা কার্ড ও শুভ চন্দ্র দাসের নামে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড রয়েছে, কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর বেশ কিছুদিন যাবৎ টাকা পাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
কল্পনা রানী দাস বলেন, আমার ছেলেটিকে বিগত ১৫ বছর ধরে এই ভাবে গাছের সাথে বেঁধে রাখি। নইলে সুযোগ পেলেই শুভ এদিক-ওদিক চলে যায়। সে কথা বলতে পারে না। ক্ষুধা পেলে তার হাতে বাঁধা দড়িটি দাঁত দিয়ে কামড়িয়ে ছিঁড়ে ঘরে এসে খাবার প্লেট নিয়ে টানাটানি করে। পানির পিপাসা পেলে গ্লাস নিয়ে টানাটানি করে। তখন আমি বুঝতে পারি তার কি প্রয়োজন। খাওয়া দাওয়া করিয়ে আবার তাকে গাছের সাথে বেঁধে রাখি।
তিনি কাঁদতে কাঁদতে অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলেন, আমার শুভ ৩ বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এমন হয়ে গেছে। স্বামীর চিকিৎসা করাতে নিজেদের শেষ সম্বল বসবাসের জায়গাটুকুও বিক্রি করে দিয়েছি এখন মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় অন্যের জায়গায় একটি ঘর বানিয়ে বসবাস করছি। ঘরটি অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় এখন চাল বেয়ে উপর থেকে পানি পড়ে। বড় ছেলে সোহাগের আয়ের উপরই নির্ভর করে চলছে আমাদের সংসারটা। ঠিক মতো খেতে পারি না। টাকার অভাবে শুভর ভাল কোন চিকিৎসা করাতে পারিনি। যা ছিল তা দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার শুভ আর সুস্থ হলো না। এখন ৪ ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমি খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
উপজেলার আসমা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আশরাফুল আলম রিপন বলেন, দীর্ঘ ৯ বছর আগে সুভাষ চন্দ্র দাস মারা যায়। এরপর থেকেই পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে যায়। বড় ছেলেটি নিজে এখনও ছাত্র। এরপরও সে টিউশনি করে কিছু রোজগার করে সংসারের চাহিদা পূরণ করছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুভ ও তার মাকে প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অসহায় এই পরিবারটি কোনরকম বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসাবে সরকারি খাস খতিয়ান জায়গায় একটি ঘর নির্মান করে দেয়ার জন্য আমি উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
T.A.S / T.A.S
আদমদীঘির কাঞ্চনপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম ৯ আসনে শামসুল আলমকে বিএনপি’র মনোনয়নের দাবি ১৫ সংগঠনের
গোপালগঞ্জে গ্রাম আদালত উন্নয়নে ডিএমআইই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
সিরাজদিখানে প্রবাসীর স্ত্রী শিউলি আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু
ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে সাবেক ছাত্রনেতাদের মতবিনিময়
নরসিংদীর চরাঞ্চলে খেয়াঘাটে টাকা আদায় নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১০
ভোলায় ৬৭৮ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ
মহেশপুরে আলমসাধুর ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক কলেজ ছাত্র নিহত
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান
সংবাদ প্রকাশের পর ডালারপাড়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসনসহ নৌপুলিশ
হাতিয়ায় ৬ হাজার ৪০০ কেজি জাটকা জব্দ করেছে কোস্টগার্ড
আল্লাহ ও রাসূলকে নিয়ে কটুক্তি করায় চাঁদপুরের পুরাণবাজারে বিক্ষোভ মিছিল