বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও কমেনি দাম
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজি। ফলে পাইকারি বাজারে বেড়েছে সব ধরনের শীতকালীন সবজির সরবরাহ। তবে সেই তুলনায় দাম কমেনি খুচরা বাজারে। খুচরা বিক্রিতে বেশি দাম রাখছে অভিযোগ ক্রেতাদের। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা সব ধরনের সবজির দাম এখনো বাড়তি বলে অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের। বাড়তি দামের কারণ হিসেবে যোগানে সংকট থাকার কথা জানিয়েছেন আড়তদাররা। তবে দ্রুতই সবজির দাম আরও কমবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আজ (৮ নভেম্বর) শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলা সদরের আসমা বাজার, গোপালপুর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি প্রায় ১০-২০ টাকা কমেছে সবজির দাম।
উপজেলা সদরের গোপালপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা রুবেল মিয়া ও জামাল মিয়ার সাথে কথা বললে সকালের সময়কে তারা জানান, পাইকারিতে প্রায় সব সবজির দাম ১৫-২০ টাকা কমেছে। তাই খুচরা বাজারেও ১৫-২০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে পটল বিক্রি করেছি ৮০ টাকা, যা এখন ৬০ টাকা কেজি। এখন প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০-৫০ টাকা, পাকা টমেটো ১১০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে শীতের আগাম সবজি শিমের দাম কিছুটা বেশি। বর্তমানে সিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৩০০ টাকা কেজি। ছোট আকারের ফুলকপি প্রতি পিস ৪০-৪৫ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০-৬০ টাকা, পাকা টমেটো ১১০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০-২৫০ টাকা দরে এবং পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজি প্রতি ছিল ৮০-৯০ টাকা।
আসমা বাজারের সবজি বিক্রেতা সুবল দাশ ও কাজল চৌধুরী জানান, বেগুন গত সপ্তাহের চেয়ে প্রতি কেজি ১০ টাকা কমে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধনিয়া পাতা ১০০ টাকা, লাল শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মুলা শাক ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা, আলু ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ফুলকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজল সরকার সকালের সময়কে জানান, পেনশনের টাকা দিয়ে খুব হিসাব করে মাস চলতে হয়। কাচা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের মাস চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। বাজারে গেলেই জিনিস পত্রের দাম শুনেই নিজেকে অসহায় মনে হয়।
গোপালপুর বাজারে বাজার করতে আসা ভ্যান চালক আজমল হোসেন বলেন, আমি নিম্ন আয়ের মানুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যান চালিয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ১০০০ টাকা আয় করে মালিকের ভ্যান জমার টাকা পরিশোধ করে ৫০০-৬০০ টাকার মতো পকেটে থাকে। বর্তমানে বাজারে আসলেই জিনিসপত্রের বেশি দামে নাজেহাল হয়ে গেছি।
আসমা বাজারের ক্রেতা সবুজ মিয়া বলেন, গরিব মানুষের সস্তার খাবার হলো শাক সবজি। সেটার দামও যদি এমন থাকে তাহলে আমরা খাবো কি? যে টাকা নিয়ে আসলে আগে ব্যাগ ভরে সবজি নিয়ে বাড়িতে যেতাম, এখন সেই পরিমাণ টাকায় ব্যাগের অর্ধেকও ভরে না।
পাইকারী ব্যবসায়ী মো. সেলিম ও জামাল মিয়া জানান, যেদিন বাজারে সবজি কম আসে, সেদিন কিছুটা দাম বাড়তি থাকে। এ ছাড়া স্থানীয় সবজিগুলো এখান থেকে কমে কিনে খুচরা দোকানিরা বাড়িয়ে বিক্রি করে। খুব শিগগিরই দাম আরও কমবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
T.A.S / T.A.S