মুখ থুবরে পড়ে আছে খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা

মুখ থুবরে পড়ে আছে খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা। জিমনেশিয়ামে ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি থাকলেও তা পরিমানে কম এবং সবগুলোই প্রায় অচল অবস্থায় পড়ে আছে। সুইমিংপুলটিও নয় মানসম্মত । বর্ষা মৌসুমে জঙ্গলে রূপ নেয় ক্রীড়া সংস্থার মাঠ। প্রায় নয় একর জমির ওপর নির্মিত এ মহিলা ক্রীড়া সংস্থাটি খুলনা বিভাগের মধ্যে নারীদের খেলাধুলা ও ক্রীড়া বিষয়ক সুযোগ সুবিধার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ন হস্তক্ষেপ করার কথা থাকলেও নানান জটিলতায় অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় এবং দপ্তরের চলেছে লুটপাট। এই জন্যই এই সংস্থাটির এরুপ বেহাল দশা।
কেন অচল অবস্থা: জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা অচল অবস্থায় পড়ে থাকার মূল কারন বিগত সরকারের আমলে সরকারিভাবে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর নির্মান কাজ শুরু হয় এই কমপ্লেক্সের। উদ্ধোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পরবর্তীতে সামনের দিকে আগায়নি নতুন কোন প্রজেক্ট। খেলাধুলার প্রতি কোন বড় ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতেও দেখা যায়নি। মন্ত্রনালয় এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বাজেটের জন্য প্রস্থাবনা পাঠালেও অজ্ঞাত কারনে বাজেট অনুমোদন হয়নি । আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে একটানা ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত উপপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন মো.গোলাম সরওয়ার। ২০২২ সালে তিনি অবসরে যান। তার এই দীর্ঘ সময়কালে খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কোন অগ্রগতি হয়নি। বন জঙ্গলে রুপ নেয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থাটি। খুলনা বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ন সংস্থাটি এখনো মুখ থুবরে পড়ে আছে। নইে কোন নতুন কার্যক্রম।
নেই কোন কার্যকর কমিটি: খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা পরিচালনার জন্য কমিটি থাকার নিয়ম থাকলেও কোন কার্যকর কমিটি নেই। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক বাধা দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে কোন কমিটি করতে দেয়া হয়নি। ক্রীড়া বিষয়ক জ্ঞানী এবং আগ্রহীদের রাখা হয়েছে দূরে। যার দরুন ক্রীড়া বিমুখতায় পরিনত হয়েছে খুলনার যুব সমাজ। নারীদের খেলাধুলা, সাঁতার শেখাসহ জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরীর বদলে এই ক্রীড়া সংস্থা আওয়ামী রাজনৈতিক নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতায় রুপ নিয়েছিল। গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণেও দলীয় বাধা এবং দলীয়করণ করেছেন খুলনা আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা। এমনকি পূর্ববর্তী কমিটিগুলোর অনিয়ম এবং দুর্নীতি থাকলেও সেখানে কোন ব্যবস্থা নেয়ার কোন উদাহরণ এ যাবৎকালে দেখা যায়নি।
সরেজমিনে খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা: প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই গার্ডরুমের অবস্থা বেহাল। প্রায় এক যুগ ধরে জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে। মাঠের চারপাশ বন-জঙ্গলে পরিনত হয়েছে। পরিস্কার পরিচ্ছনতারও অভাব। দপ্তরে ওয়েটিং রুমের কোন গোছালো ভাব নেই। বাহিরের জেলা থেকে খেলাধুলা করতে আসা নারীদের জন্য আবাসিক হল থাকলেও তা মানসম্মত নয়। নয়টি রুমে ৩৬ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। রুমগুলো ঘুরে দেখা যায় আলমারি, ওয়ারড্রব গুলো ভাঙ্গা পড়ে আছে। ষ্টিলের খাট থাকলেও দীর্ঘদিন মেরামতের কোন চিহ্ন নেই। কোন রুমের জানালায় নেই পর্দা। দেয়াল থেকে চুন খসে পড়ছে। ব্যায়ামাগারে স্বল্প কিছু জিনিসপত্র রয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারনে তাও অচল অবস্থা। অডিটোরিয়ামের ছাদের অংশ ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ছে। কোন সৌন্দর্যতা নেই বললেই চলে। টেবিল টেনিস রুম পড়ে আছে জরাজীর্ন অবস্থায়। সুইমিং পুলের অবস্থা খুবই করুন। সুইমিং পুলের ওয়াটার রিফাইনিং মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। লবনাক্ত পানির এলাকা হওয়ায় রিফাইনিং মেশিন গুরুত্বপূর্ন হওয়ার পরও কখনো মেরামতের ব্যবস্থা করা হয়নি। বর্তমানে খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা সুইমিং পুলটি লিজ দিয়েছে। লিজ দেয়া বদৌলতে প্রচার প্রচারণার কারনে অনেকে বর্তমানে সাঁতার শিখতে আসছেন। তবে পানি পরিবর্তন ব্যবস্থা ব্যয় বহুল হওয়াতে লিজ নেয়া প্রতিষ্ঠানকে অর্থের সাথে হিমশিম খেতে হচ্ছে । পুরো সংস্থাটির চারপাশ ঘুরে দেখা যায় বন জঙ্গল। অপিরষ্কার অবস্থায় দেখা গেছে সংস্থাটির বেশিরভাগ জায়গা।
সুইমিং পুল লিজ নেয়া প্রতিষ্ঠান রেজাউল সুইমিং একাডেমীর পরিচালক জি.এম রেজাউল ইসলাম বলেন, কোন বাজেট নেই। আর্থিক সহায়তা নেই। জোড়াতালি দিয়ে সুইমিং পুল চালাচ্ছি। প্রতিমাসে লিজের টাকাও পরিশোধ করতে হচ্ছে। প্রচার প্রচারণা চালিয়ে কিছ সাঁতার শিক্ষার্থী পেয়েছি। তবে লবনাক্ত এলাকা হওয়াতে পানি নষ্ট হয় বারবার। পানি রিফাইনিং মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তা সজচল করতে প্রায় ৮-১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। যা এই দপ্তরের ফান্ডে এখন নেই। তাই তিনদিন পর পর সুইমিং পুলে পানি পরিবর্তন করেই চালাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থাটি সচল অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারলে খুলনা বিভাগের ক্রীড়া প্রেমিরা উপকৃত হবে। প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে লাভবানও হবে।
একজন ক্রীড়াবিদ মহসিন হোসেন বলেন, খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থাটি গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু এই দপ্তরের কোন উদ্যোগ নেই। অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে কোন কমিটি নেই। সরকারিভাবে কোন আর্থিক সহায়তা নেই। বছরে দু একবার খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই দু একবার খেলাধুলার আয়োজন তরুন-তরুনীদের ঢালাও ভাবে আকৃষ্ট করতে পারে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সুইমিংপুলে আসা আসাদুজ্জামান জানান, খেলাধুলা বিমুখ হয়ে আজ তরুন সমাজ পথভ্রষ্ট হচ্ছে। খেলাধুলা মানসিক বিষন্নতাকে দূর করে। আমাদের এই অঞ্চলের মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি যথেষ্ট পরিমানে আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু আওয়ামলীগ সরকারের আমলে চলেছে লুটপাট। খেলাধুলার দিক থেকে জাতীয় পর্যায়ে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আওয়ামলীগ সরকার নিয়ে যেতে পারেনি। মন্ত্রনালয় থেকে টাকা লুটপাট করে দেশের বাইরে পাঁচার করেছে। যার দরুন খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার এই করুন অবস্থা খুলনাবাসী দেখছে। এখন সংস্থাটি মুখ থুবরে পড়ে আছে। তিনি আরো বলেন, দপ্তরের ভিতরের বিষয়ে জানি না। তবে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়েছে এই সংস্থাটি।
খুলনা জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার উপপরিচালক মো. আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, আমি ২০২২ সালে এখানে যোগদান করি। যোগদান করে বেহাল অবস্থায় পাই। এই ভবনের পরিবেশেও খুব খারাপ ছিলো। আমি আমার বেতনের টাকা থেকে কিছু কিছু কাজ করিয়ে বসার মতো পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছি। এই রুমে কোন পর্দা ছিলো না। একজন ক্রীড়া প্রেমী পর্দাগুলো কিনে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আশপাশ বন জঙ্গলে ভরে উঠেছিলো। তা পরিষ্কার করিয়েছি। বিভিন্ন সমস্যা, পুননির্মান এবং নতুনভাবে উদ্যোগ নিয়ে সংস্থাটি পরিচালনার জন্য আর্থিক অনুমোদনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। এখনো সাঁড়া পায়নি। তবে খুব শিঘ্রই সাঁড়া পেতে পারেন বলে তিনি আশাবাদী।
এমএসএম / এমএসএম

প্রকৌশলীর গাড়িসহ ৩৭ লাখ টাকা জব্দ! বৈধ নথি দেখাতে ব্যর্থ, মুচলেকায় মুক্ত

সুবর্ণচরে মানবসেবা সংগঠনের ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ

তানোরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকা তসরুপের অভিযোগ

লাখো রোহিঙ্গার ইফতার মাহফিলে পদপিষ্ট হয়ে বৃদ্ধ নিহত ও আহত হয়েছেন আরও দুজন

রোজা মানুষকে ধৈর্যশীল হতে শেখায়:বিএনপি নেতা নুরুল আনোয়ার

বাকেরগঞ্জ সড়কে বেপরোয়া অবৈধ লরি নিষিদ্ধ যানের কারণে বেড়েই চলেছে প্রাণহানির সংখ্যা

র্যাবের হাতে গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি আটক

গাজীপুরে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নারীসহ তিনজন নিহত

বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক রাজেন রায় গ্রেফতার

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে জাতিসংঘ মহাসচিব

সিদ্ধিরগঞ্জে সাংবাদিকতার আড়ালে দেহব্যবসা ব্ল্যাকমেইলিং কথিত ৩ সাংবাদিককে গণপিটুনী

ধামইরহাটে বিএনপির ইফতার মাহফিল উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
