বৃহত্তর পাবনা অঞ্চলের সরিষা দেশের চাহিদার এক চতুর্থাংশ পূরণ করে থাকে
অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচিত সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন পাবনার কৃষকরা। জেলার ৯ উপজেলায় এ বছর ৪৫,০৪৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে; যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬৬,১৬২ টন।
এই মৌসুমে কৃষকরা ব্যাপকভাবে সরিষা চাষ করেছেন এবং এখন বাম্পার উৎপাদন এবং বিপুল লাভের আশা করছেন।
পদ্মা-যমুনা ও হুরাসাগর নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে সরিষা চাষ বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ঐঠছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ৪৫,০৪৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬৬,১৬২ টন নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, বেশিরভাগ কৃষককে ১ কেজি সরিষা বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার এবং ১০ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও, কৃষককে ১ কেজি সরিষা বীজ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও, কৃষকদের সরিষা প্রদর্শনী এবং সরঞ্জাম সহায়তা দেয়া হয়েছে।
অনেক কৃষক জানিয়েছেন যে এ বছর তারা গতবারের চেয়ে বেশি সরিষা চাষ করেছেন। সরিষা গাছে এখন ফুল ফুটেছে।
চরনাগদা এলাকার আফতাব উদ্দিন নামে এক কৃষক বলেন,"আমি এই মৌসুমে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করি প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ২০,০০০ টাকা আয় করব।"
একই গ্রামের বর্গাচাষী আশরাফ আলী জানান,"আমি চার বিঘা জমিতে তিন ধরণের সরিষা চাষ করেছি। ক্ষেত পূর্ণ ফুলেছে।
আবহাওয়া ভালো থাকলে আমি বাম্পার সরিষার ফলন পাব। প্রতি বিঘায় আমাদের ১৫-২০,০০০ টাকা আয় হবে।
পাবনা সদর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশিকুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন,“গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা চাষ বেড়েছে। সরিষা ক্ষেত এখন পূর্ণ ফুলেছে।"
কৃষকদের নিয়মিত ফলন বৃদ্ধি এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক ডঃ জামাল উদ্দিন এ প্রতিনিধিকে বলেন,"বিদেশ থেকে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে ভোজ্য তেল আমদানি করা হয়। এই আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।"
দেশের মোট সরিষার চাহিদার এক-চতুর্থাংশ বৃহত্তর পাবনা অঞ্চলে উৎপাদিত হয় হয় উল্লেখ করে এ কর্মকর্তা বলেন,“নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সরিষার ফলন বেশি হয়। যেহেতু পদ্মা,যমুনা, হুরাসাগরসহ অনেক নদী পাবনার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সরিষার আবাদ যেমন বেশি হয়; তেমনি ফলনও হয় আশানুরুপ।” ‘বিপুল পরিমান সরিষা এখানে উৎপাদন হয় বিধায় দেশের চাহিদা পূরণে যথেষ্ঠ ভুমিকা পালন করে থাকে।’
এমএসএম / এমএসএম