নবীনগরে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার চর গোসাইপুর বকসি বাড়ী প্রবাসী সমাজ কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে ঢোলের তালে তালে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালে চর গোসাইপুর পশ্চিমপাড়ায় লাঠি খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। লাঠি খেলাটি দেখার জন্য চরগোসাইপুর সহ নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার দর্শক উপস্থিত হন।
ঢাক, ঢোল আর সানাইয়ের শব্দে চারপাশ আলোড়িত হয়। বাদ্যযন্ত্রের তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে নানান অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতি ও গ্রামীণ জনজীবনের নানা দিক প্রদর্শন করে লাঠিয়ালরা। তারপরই শুরু হয় লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও তাকে আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ার অসাধারণ দৃশ্য দেখেন উপস্থিত দর্শকরা। দর্শকদের করতালি আর হৈ-হুল্লোড়ে আরো জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে উঠে লাঠি খেলার আসর। এই লাঠি খেলায় উপজেলার কুড়িঘর গ্রামের একটি লাঠিয়াল বাহিনী দল অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত লাঠি খেলায় বড়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল বাসারের সভাপত্বিতে, আলমগীর হোসেন ও মকবুল হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও সমাজ সেবক আবুল হোসেন বকসি, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বকসি বাড়ীর কৃতি সন্তান জাকির হোসেন বকসি,বড়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামিম খান, সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, মীর নুরুল ইসলাম , মীর মুসলেম, ইকবাল বকসি, আলমগীর বকসি, রিপন বকসি, জুয়েল বকসি, কালন বকসি, ফরিদ বকসি, শাকিল বকসি, মো. মারুফসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কুড়িঘর গ্রামের লাঠি খেলার সরদার আব্দুল আহাদ বলেন,গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা আজ বিলুপ্তির পথে। আমাদের অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের লাঠি খেলা রয়েছে। আগে গ্রামের সাধারণ মানুষ বাংলা বর্ষবরণ, বিবাহ, চড়ক পূজা, সুন্নতে খাৎনা ইত্যাদি উপলক্ষে লাঠি খেলার আয়োজন করতেন। এখন আর সেই ভাবে আয়োজন করা হয় না।
আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা বিলুপ্তি হওয়ার কারণে এর খেলোয়ার সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে না নতুন কোন খেলোয়ার। আর পুরনো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা পূর্বের মত লাঠি খেলা দেখাতে পারছে না। তারপরও তারা এই বয়সে ধারুণ খেলা দেখিয়েছেন। এই খেলার মাধ্যমে যুবসমাজ বিনোদন পেয়ে মাদক ছেড়ে এই বিনোদনে আগ্রহী হবে। তাই ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলা ধরে রাখতে বিনোদনের খোরাক জোগানোর জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
T.A.S / T.A.S