ফটিকছড়িতে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও সড়ক নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এক বছর আগে প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষ হলেও নির্মান কাজ সম্পন্ন না করেই কাজের বিল উত্তোলন করে উধাও ঠিকাদার। নির্মান কাজের অনিয়ম ও কাজ বুঝিয়ে না দেয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বার বার অবহিত করার পরেও কোন সুরাহা মিলেনি। ইউনিয়নবাসির দীর্ঘ প্রত্যাশিত এ প্রকল্পে এমন অনিয়মের কারণে ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা। এ ছাড়া নিম্মমানের কাজের প্রতিবাদ করায় মামলার আসামী হতে হয়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ইমনকে। যদিও স্থানীয় সাংসদের হস্তক্ষেপে পরে তা প্রত্যাহার করে নেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
১ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যায়ে সমিতির হাট ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও ২৩ কোটি টাকা ব্যায়ে কাটির হাট যোগির হাট সড়ক নির্মানে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। সড়ক নির্মানে নিম্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার এবং যেন তেনভাবে ইউপি ভবনের নির্মান কাজ করে সরকারী বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। নির্মান কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ধসে পড়েছে সেতুর উইং ওয়াল । প্রকল্পের আওতায় থাকা একটি ব্রিজ নির্মান করা হয়নি। আরেকটি ব্রিজ এখনো অসম্পূর্ণ পড়ে থাকায় পারপার করতে গিয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ার আগেই ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে ভবনটি। বৃষ্টি হলে ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ছে। পরিষদের হলরুমে নিম্ম মানের বৈদ্যুতিক কাজের কারণে বাতিসহ ফ্যান গুলো চলেনা। এতে করে গ্রাম আদালতের সাপ্তাহিক বিচারকার্য ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন রুমের টাইলসের কাজও করা হয়েছে যেনতেন ভাবে। পানির পাইপ লাইনের কাজ সঠিকভাবে না করায় টয়লেটগুলো ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের সময় নির্মাণ কোড না মানায় বৃষ্টিতে ছাদে পানি জমে থাকে। এ ছাড়া ভবন নির্মান প্রকল্পের আওতায় থাকা গভীর নলকুপ স্থাপন এবং পরিষদের মাঠ ভরাটের কাজসহ পরিষদ সংযোগ সড়কের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ঠিকাদার প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলজিইডি সুত্রের তথ্যমতে ২০১৭ সালে উপজেলার সমিতির হাট ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবন ও সমিতিরহাট বাজার হতে ইউনিয়ন পরিষদের সংযোগ সড়কসহ ১ কোটি ২৩ লাখ টাকার প্রকল্পের দরপত্র আহবান করা হয়। মেসার্স মনির আহমদ কনস্ট্রাকশন এ প্রকল্পের ২০১৮ সালের জানুয়ারীতে কার্যাদেশ পায় উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তার ও এক বছর পর জানুয়ারী ২০১৯ সালে কাজ শুরু করে। এ ছাড়া কাটির হাট যোগির হাট সড়কের হালদার ব্রিজ হতে যোগির হাট পর্যন্ত ফটিকছড়ি অংশে ২৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ৭ কিলোমিটার সড়কের নির্মান কাজের কার্যাদেশ পান একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দুটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য সময় নির্ধারিত থাকলেও তা যথা সময়ে শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কাজ শুরু হলে নিম্মমানের কাজের প্রতিবাদ করায় উল্টো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করে উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক টিটু। পরে তা স্থানীয় এমপি’র মধ্যস্ততায় মামলা প্রত্যাহার করা হয়।
এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, সড়কের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি অথচ সড়কটির বিভিন্নস্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ধসে পড়ছে ব্রিজের পাশের প্রতিরোধ দেয়াল। সড়ক নির্মানে নিম্মমানের পাথর ,খোয়া ও বিটুমিন ব্যবহার করায় ২/৩ মাসের মাথায় সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
সমিতির হাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আলম কুতুবী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ভবনটি বুঝিয়ে দেয়ার আগেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ছে। সঠিকভাবে করা হয়নি টাইলসের কাজ। এ ছাড়া নিম্মমানের বৈদ্যুতিক সামগ্রী দিয়ে ওয়ারিং করার ফলে ভবনের হলরুমসহ বিভিন্ন রুমের ফ্যান গুলো অচল। মাঠ ভরাট করা হয়নি । স্থাপন করা হয়নি গভীর নলকুপও। দরজাগুলোও খুবই নিম্মমানের। সঠিকভাবে পানির পাইপ লাইনের কাজ না করায় ব্যাঘাত হচ্ছে টয়লেটসহ বিভিন্ন রুমে পানি সরবরাহে।
সমিতির হাট ইউনিয়ন পরিষদ য়োরম্যান হারুনুর রশিদ ইমন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভবন না থাকায় দীর্ঘদিন ভাড়া ঘরে চলে আসছিল পরিষদের নিয়মিত কার্যক্রম। তিনি বলেন অনেক তদবির করে ইউনিয়ন পরিষদের নতুন দ্বিতল ভবন বরাদ্দ হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে। কিন্তু ভবনের নির্মান কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেয়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ করার পরেও কাজের গুনগত মানের কোন পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে কাটির হাট যোগির হাট সড়কের হালদা ব্রিজ থেকে কাটির হাট অংশেরও একই অবস্থা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও এখন কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেখানেও কাজ হচ্ছে অত্যন্ত নিম্মমানের। খোয়া থেকে পাথর এবং বিটুমিন সবই নিম্মমানের। যে অংশে কাজ হয়েছে সেগুলোও আবার কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। একটি ব্রিজের কাজ এখনো অসম্পূর্ন থাকায় জন দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
এদিকে এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাই মেসার্স মনির কনস্ট্রাকশনের মালিক আসাদুজ্জামান টিটু বলেন নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শক্রমেই কাজ করা হয়েছে। এর বাইরেও কোন ধরনের ত্রুটি থাকলে প্রকল্পের সিকিউরিটি মানি থেকে তা মেরামত করে দেয়া হবে। এলজিইডির কাজে অনিয়ম করার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আমিরুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। তবুও কোন ধরনের অনিয়ম হলে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এমএসএম / জামান

গাজীপুরে অন্তহীন অভিযোগে অভিভাবকদের তোপের মুখে প্রধান শিক্ষক!

ভূঞাপুরে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন সভা

রাণীশংকৈলে পুলিশের ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

সবুজে ঢেকে যাক কালকিনি: পরিবেশ রক্ষায় আনসার-ভিডিপি’র অঙ্গীকার

অভয়নগরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

শ্রীমঙ্গলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত -১

তানোরে ব্যাক ডেট ও জালিয়াতি নিয়োগের তদন্তে হাজির হননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে স্কুল শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন

চট্টগ্রামে নেক্সাস ফেস্ট-২০২৫ সম্পন্ন

পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে: জামায়াতের অধ্যাপক মজিবুর রহমান

শ্রীপুরে পরিবেশ বিপর্যয় রোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

অনার্সের খাতা দেখেন কলেজ হোস্টেলের গার্ড !
