ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

ধোঁয়াশার রাত: একটি মৃত্যু নিয়ে জনমনে প্রশ্ন অনেক


মহেশখালী প্রতিনিধি photo মহেশখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৯-৪-২০২৫ দুপুর ৩:৫৮

রাত তখন তিনটা। মহেশখালীর কালারমারছড়া মোহাম্মদ শাহ ঘোনা এলাকা ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ করেই ঘুম ভাঙে গুলির শব্দে। কিছু বোঝার আগেই আবুল হোসেন (৫০) নামের এক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন নিজ বাড়ির উঠোনে। এরপরই শুরু হয় ধোঁয়াশা— কে মারল তাঁকে? কেন মারল?

পরিবারের ভাষ্যে, রাতে কোস্ট গার্ড অভিযান চালায় এলাকায়। কিছু লোককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি গুলি চালায়, আর সেই গুলিতেই ঝরে পড়ে আবুল হোসেনের প্রাণ। তাঁর স্ত্রী ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী। কিন্তু নিহতের আরেক আত্মীয় আবার ভিন্ন কথা বলছেন। তাঁর দাবি, প্রতিপক্ষের গুলিতেই নিহত হয়েছেন আবুল হোসেন। প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল।

কোস্ট গার্ড কীসের অভিযান চালালো? কাদের গ্রেফতার করলো? অভিযান শেষে ঠিক কী ঘটেছিল? আর কোস্ট গার্ডের সাথে থাকা সোর্সরাই কি গুলি চালিয়েছে? পুলিশের দাবিও প্রায় একই— প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে নিহত হতে পারেন আবুল হোসেন। তাহলে সত্য আসলে কী?

বিচারহীনতার শেকল

এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নতুন নয়। বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু, মানবাধিকার লঙ্ঘন—এসব শব্দ এখন আমাদের বাস্তবতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। প্রতিবারই একই ধোঁয়াশা, একই অস্পষ্টতা। তদন্তের নামে সময়ের টালবাহানা, কিন্তু প্রকৃত সত্য আর বেরিয়ে আসে না।

এই ঘটনাও কি তেমনই একটি অধ্যায়ের সূচনা? আইনের শাসনের বদলে ‘শক্তির শাসন’ই কি প্রাধান্য পাচ্ছে? রাষ্ট্রযন্ত্র কি আদৌ নিরপেক্ষ থাকছে, নাকি কারও ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে?

আইনশৃঙ্খলার অবনতি নাকি নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাস?

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এমন ঘটনা ঘটলে বারবার উঠে আসে কিছু প্রশ্ন। কেন অভিযানে নিরীহ মানুষের মৃত্যু হবে? কোথা থেকে আসে এত অস্ত্র? যদি সত্যিই প্রতিপক্ষের গুলিতেই আবুল হোসেন নিহত হয়ে থাকেন, তবে তাঁর খুনিরা গ্রেফতার হচ্ছে না কেন?
একটি গণতান্ত্রিক সমাজে নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু যখন সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়ে, তখন সেটা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; সেটা হয়ে ওঠে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার ওপর এক কালো ছায়া।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: ক্ষমতার ছায়ায় হত্যার বৈধতা?

বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন, ক্ষমতার বলয়ে আধিপত্য কায়েম এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহার এখন ওপেন সিক্রেট। ক্ষমতার ছায়ায় থেকে কেউ কেউ যেন হত্যার বৈধতা পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যে সমাজে বিচারহীনতা দখল নেয়, সে সমাজে অন্যায়ের শিকল আর কখনোই ভাঙা যায় না।

আবুল হোসেনের হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হওয়া জরুরি। অভিযানের সময় আসলে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। প্রত্যক্ষদর্শীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করা উচিত। একইসাথে রাষ্ট্রের উচিত নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যাতে সাধারণ মানুষ আর এভাবে রক্তাক্ত না হয়।
এই ধোঁয়াশা কি কেটে যাবে? নাকি আরো অনেক রাত এভাবেই রক্তের দাগে কালো হয়ে থাকবে— উত্তরটা হয়তো সময়ের হাতে।

এমএসএম / এমএসএম

বাগেরহাট জেলায় সর্বদলীয় অবরোধ কর্মসূচি

রাণীশংকৈলে বালু উত্তোলনের সময় গর্তে পড়ে শিশুর মৃত্যু

লোহাগড়ায় নিখোঁজের চার দিন পর কিশোরের লাশ উদ্ধার

পাঁচবিবিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে ৩ দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক

বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা মুন্সি আকতার হোসেনের সংবাদ সম্মেলন

পাকশীতে রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের বারো দফা দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা

অনির্বাণের আয়োজনে লেখক ও কবিদের চলনবিল ভ্রমণ ও সাহিত্য আড্ডা

জয়পুরহাটে বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী

ভূঞাপুরে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের ৪ সদস্য আহত

পাঁচবিবিতে উপজেলা স্কাউটের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন

তাড়াশের ২ জন পাচারকারী র‌্যাব-১২’র অভিযানে মূল্যবান কষ্টি পাথরের তৈরি মূতিসহ গ্রেফতার