ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

পাবনায় ভুয়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দের জিআর চাউল হরিলুট


এম মাহফুজ আলম, পাবনা photo এম মাহফুজ আলম, পাবনা
প্রকাশিত: ২-৫-২০২৫ দুপুর ২:১৩

পাবনায় ভুয়া ধর্মীয় বহু প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দের জিআর চাউল হরিলুটের অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ শুরু হয়েছে। প্রশাসনের পদক্ষেপ দেখার অপেক্ষায় এলাকাবাসী।
পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জি আর চাউল বরাদ্দে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের নামে চাউল উত্তোলন করা হলেও জানে না প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরা। ভুয়া কমিটি দাখিল করে চাউল উত্তোলন করে কালোবাজারে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আবার এক ব্যক্তি একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসাবে চাউল উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হবার পর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। তারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, চাটমোহর উপজেলায় ১১৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কাজে জি আর প্রকল্পে প্রায় ১৪১  মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন।
তার মধ্যে ফৈলজানা ইউনিয়নের বেশকিছু সমজিদ মাদ্রাসা ও এতিমখানার তালিকা অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পবাখালী দক্ষিণপাড়া মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা, পবাখালী রোকেয়া নুরুল মাদ্রাসা, দেলোয়ারা সামাদ নুরানী কিন্ডার গার্টেন (মক্তব) এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আব্দুস সামাদ এবং তার ছেলে তৌফিক ইমাম পবাখালী নুরানী কিন্ডার গার্টেনের সভাপতি। এই চারটি প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সাড়ে ১০ মে. টন। তাদের পিতা পুত্রের চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধু মাত্র পবাখালী রোকেয়া নুরুল মাদ্রাসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব নেই। ভুয়া কমিটি তৈরি করে চাউল উত্তোলন পূর্বক অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এদিকে দিঘুলিয়া হাসান হোসেন (রহঃ) জামে মসজিদ এবং দিঘুলিয়া পুরাতন বড় জামে মসজিদ এর সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। এই দুইটি মসজিদে বরাদ্দ পাওয়া গেছে সাড়ে চার মে. টন। এর মধ্যে দিঘুলিয়া পুরাতন বড় জামে মসজিদের অস্তিত্ব নেই। ভুয়া কমিটি দাখিল করে চাউল আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এছাড়া মিনহাজ মোড় কেন্দ্রীীয় জামে মসজিদ, পবাখালী দক্ষিণপাড়া বাইতুল আমান জামে মসজিদ এর সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এর মধ্যে মিনহাজ মোড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অস্তিত্ব নেই। এই দুটি প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ পেয়েছে সাড়ে পাঁচ মে. টন চাউল।
পবাখালী নতুন জামে মসজিদ ও পবাখালী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি সাইফুল ইসলামের ভাতিজা মনিরুল ইসলাম। এর মধ্যে পবাখালী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের নামে ভুয়া কমিটি দাখিল করে চাউল উত্তোলন করা হয়েছে। ফরিদা শামসুল মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি সাইফুল ইসলামের ভাগনে আজিবর রহমান দেড় টন বরাদ্দ পেয়েছে। অথচ এই নামে কোন প্রতিষ্ঠান নেই।
পবাখালী লালন একাডেমীর নামে দেড় টন চাউল উত্তোলন করেছেন সভাপতি হিসাবে সরোয়ার হোসেন। অথচ এই নামে কোন একাডেমী নেই। তবে এলাকায় একটি মাজার আছে যার সাথে এটির সংশ্লিষ্টতা নেই। মাজার কমিটির  লোকজন জানেই না এই নামে চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
পবাখালী মাজারের সভাপতি নায়েব আলী জানান, 'আমাদের মাজারের নামে কোনো বরাদ্দ পাইনি। পবাখালী লালন একাডেমীর নামে চাউল তুলে আত্মসাত করা হয়েছে বলে মনে করছি।'
কুঠিপাড়া জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ ও মুয়াজ্জিন মোঃ আব্দুল আওয়াল বলেন, 'আমার কাছ থেকে উপজেলার একজন ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে বলেছিল মসজিদের নামে অনুদান আসবে। তাই দিছিলাম। পরে একদিন গিয়ে আমার হাতে ছয় হাজার টাকা দিয়ে আসছে। কত কি বরাদ্দ আসছে তার কিছুই জানি না। পরে ওই টাকা মসজিদের ফান্ডে জমা রেখেছি।'

এরকমভাবে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ভুয়া কমিটি তৈরি করে চাউল বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে প্রায় সারা জেলা জুড়ে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেরা কমিটি তৈরি করে চাউল উত্তেলন করেছেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের আসল কমিটির লোকজন জানেইনা। কিছু প্রতিষ্ঠানের কমিটির লোকজনকে ম্যানেজ করতে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ বলেন, ‌'যা হবার তা হয়ে গেছে। এখন কি করব বলেন, যারা ওটা করছে তারাতো করেই ফেলছে। ওসব তো বলে তো আর লাভ নেই। আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা বলব।'
আরেক অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম বলেন, 'মসজিদ একটাই নাম দুইটা। একবার জালসার জন্য আর একবার ইফতার পার্টির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। প্রথমবার যে নাম দিছিলাম দ্বিতীয়বার আর মনে ছিলনা। ওইভাবে মানে নামটা  দেয়া হইছিল। তবে টাকাটা মসজিদ কমিটির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।'
অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বলেন, ’দুইটা মসজিদের নাম নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় আমরা শুধু একটা মসজিদের চাউল তুলেছি। আরেকটা মসজিদের চাউল তোলা হয়নি।’
এছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বানানো কমিটির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে তাদেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিয়য়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মূসা নাসের চৌধুরী বলেন,“ফৈলজানা ইউনিয়নের চাউল বরাদ্দের অনিয়মের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তার আগেই আমরা তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়গুলো প্রকাশ পেয়েছে। আর অভিযোগের বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়ায় সরকারি রাস্তা দখল, ঘরবন্দি শিরিনা খাতুন

সান্তাহারে ইয়াবা ট্যাবলেট ও প্রাইভেট কারসহ দুইজন গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে গরুর গাড়ি মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে সভা

কাউনিয়ায় এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে গাছের চারা বিতরণ

দুই সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত

পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করে চটের ব্যাগ ব্যবহার করুন- কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সোনাগাজীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গরু চোরসহ গ্রেফতার-০৪, চোরাই গরু উদ্ধার

সীমান্তে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপির নেতাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এভাবেই নষ্ট হচ্ছে পৌরসভার অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ

টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি, শিক্ষার্থী নেই তবুও চলছে এমপিওভুক্ত কলেজ

জয়পুরহাটে ব্র্যাকের উদ্যোগে ১৩৯ জন গ্রাহকের মাঝে তেলাপিয়া মাছের পোনা বিতরণ