ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫

নবীনগরে ৮ কোটি টাকার পানি প্রকল্পে দুর্নীতি, ঠিকাদার লাপাত্তা, মেয়র পলাতক


সফর মিয়া, নবীনগর photo সফর মিয়া, নবীনগর
প্রকাশিত: ১৩-৫-২০২৫ রাত ৮:৫৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভায় ৮ কোটি ২৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত একটি পানি সরবরাহ প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পটি তিন বছর আগে উদ্বোধন করা হলেও আজ পর্যন্ত পৌরবাসীর ঘরে পৌঁছায়নি এক ফোঁটাও পানি। প্রকল্পের কাজ কাগজে সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এর অগ্রগতি প্রায় শূন্য। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল উত্তোলনের পর এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছে।

২০২১ সালের ২০ অক্টোবর তৎকালীন পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস নবীনগর পৌর পানি সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। বাস্তবায়নকারী সংস্থা ছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (DPHE)। ঠিকাদারি কাজ পায় ‘এনপিআইএল - কম্বাইন্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’ ও ‘মেসার্স তানভীর আহমেদ জেভি’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্পের আওতায় ১৮ দশমিক ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো, ৩ হাজার ৮৫৫টি হাউস কানেকশন এবং ১২টি স্ট্রিট হাইড্রেন্ট স্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বসানো হয়েছে মাত্র দুটি নলকূপ—একটি পশ্চিম পাড়া এলাকায়, অপরটি ভোলাচং এ। অধিকাংশ এলাকায় কোনো পাইপলাইন বসানো হয়নি। যেসব এলাকায় বসানো হয়েছিল, সেগুলোরও বড় অংশ চুরি হয়ে গেছে বা অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পরীক্ষামূলকভাবে কোথাও কোথাও পানি সরবরাহের চেষ্টা করা হলে পাইপ ফেটে যায়, লিক হয় এবং পুরো সিস্টেম ভেঙে পড়ে। এর পর থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকায় রয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই বিল উত্তোলন করে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। দীর্ঘদিনেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌর কর্মচারী জানান, “কাজ কাগজে হয়েছে, বাস্তবে নয়। টাকা ভাগ হয়ে গেছে—উপরে-নিচে সবাই পেয়েছে।” এক সাবেক কাউন্সিলর বলেন, “এটা ছিল সবচেয়ে বড় কমিশনের প্রজেক্ট। শিব শংকর দাসের ছত্রছায়ায় সবাই লাভবান হয়েছে।”

প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় রাস্তাঘাট খুঁড়ে পাইপ বসানোর নাম করে বহু এলাকায় রাস্তা ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে সেগুলো আর সংস্কার করা হয়নি। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী নিজেরা চাঁদা তুলে কিছু রাস্তা মেরামত করেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব কাজেরও পৌরসভা বিল তুলেছে।

পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম ও শাহ আলম বলেন, “এটা শুধু পানি প্রকল্প নয়, বরং উন্নয়ন বাজেটের ভয়াবহ লুটপাট। আমরা তিন বছর ধরে শুধু নাটক দেখে যাচ্ছি, কিন্তু পানি পাচ্ছি না। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি চাই।”

এদিকে, এনপিআইএল - কম্বাইন্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ঠিকাদার নজরুল ইসলাম ও সাবেক মেয়র শিব শংকর দাস এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স তানভীর আহমেদ জেভি’র মালিক শামিম আহমেদ দাবি করেন, “তৎকালীন মেয়র আমাদের ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আটকে রাখায় কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে পানি মিটার ও সরঞ্জামের ঘাটতি কাটিয়ে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে।”

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা এ বিষয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে পৌরসভার  নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ সারোয়ার বাতেন বলেন, “এই কাজটি সম্পূর্ণরূপে DPHE বাস্তবায়ন করেছে, পৌরসভা এতে জড়িত নয়। দুর্নীতির অভিযোগও সত্য নয়।”

এ বিষয়ে মঙ্গলবার(১৩ মে) নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন, “এই প্রকল্পটি আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে আশা করছি, অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।

এমএসএম / এমএসএম

৭ ই নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নাগেশ্বরীতে মুসলিম এইডের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব অনুষ্ঠিত

বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০

হাতিয়ায় গাঁজা ও ইয়াবা সহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

পঞ্চগড়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানী

ইনসাফ এর বাংলাদেশ চায় জামায়াত

রাতে স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, সকালে উধাও স্বামী

পটুয়াখালীর দশমিনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল

নেত্রকোনা-২ বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ডাঃ আনোয়ারুল হকের বিশাল নির্বাচনী শোডাউন

নবীনগরে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে ১৩ কিলোমিটার মানববন্ধন

তাড়াশে লক্ষ্মী নারায়ণ গোপাল বিগ্রহ মন্দিরের সম্পত্তি জোর করে দখল প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

সিংড়ায় বিএনপির বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত

মাদারীপুরে গৃহবধুর আত্মহত্যার ঘটনায় বিচার চায় পরিবার