কর্ণফুলী উপজেলার ভ্যাট-ট্যাক্সের ৫ কোটি টাকা গায়েব
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় গত ৭ অর্থবছরে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আদায়কৃত প্রায় ৫ কোটি টাকার ভ্যাট ও আয়কর সরকারিভাবে জমা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কেউই এর বিপরীতে সরকারি কোষাগারে জমার কোনো বৈধ চালান দেখাতে পারছে না।
অথচ বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর প্রতিটিতে ঠিকাদারের বিল থেকে নিয়ম অনুযায়ী কর কাটা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলজিইডি দপ্তরের পক্ষ থেকে একাধিকবার ইউএনও ও উপজেলা পরিষদকে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো সদুত্তর মেলেনি। বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অনুসন্ধানে যা জানা গেছে:
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল কর্ণফুলী উপজেলা কার্যক্রম শুরু হলেও প্রথম বছরের ভ্যাট ও ট্যাক্সের আয় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পটিয়া উপজেলায় জমা করা হয়। কারণ, সে সময় ট্রেজারী শাখাটি ছিল পটিয়া উপজেলার অধীনে।
২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত গত ৬ অর্থ বছরের হিসাব অনুযায়ী, কর্ণফুলী উপজেলায় মোট আয়কর আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ ১৮ হাজার ২৩৭ টাকা এবং মোট ভ্যাট আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৫ টাকা। ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের হিসাবও যোগ করলে ৫ কোটিরও বেশি টাকার হদিস পাওয়া যায়নি। এই বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করার চালান কপি প্রদর্শন করতে পারেননি কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা পরিষদ, এলজিইডি অফিস, ট্রেজারি শাখা বা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। তাঁরা কথা বলতেও নামাজ।
ভ্যাট-আয়করের টাকা তাহলে কোথায় গেল?
এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চট্টগ্রাম ডিভিশনাল ও জেলা কন্ট্রোলার অব একাউন্টস, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম জেলা হিসাব সংরক্ষণ অফিস, চট্টগ্রাম আয়কর বিভাগ, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা হিসাব সংরক্ষণ অফিস এবং রাষ্ট্রীয় সোনালী ব্যাংক পিএলসি কর্ণফুলী শাখার সাবেক ও বর্তমান দুই ব্যবস্থাপককের কাছেও কোনো সদুত্তর মিলেনি।
তবে সিংহভাগ অফিস ও কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ কর্তৃক আদায়কৃত এসব অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়নি কিংবা তারা জানে না এ বিষয়ে। সংশ্লিষ্ট অফিস কর্মকর্তাদের ধারণা, সরকারি এই বিশাল অর্থের হদিস দেওয়ার দায়িত্ব ইউএনও এবং উপজেলা পরিষদের উপর রয়েছে। যারা যে সময় দায়িত্বে ছিলেন তারাই বলতে পারবে বলে দায়সারা ভাব সকলের।
কে দায়ী? দপ্তরগুলো কেন একে অপরকে দুষছে?
উপজেলা সৃষ্টির গত ৭ বছরে ইউএনও হিসেবে কর্ণফুলীতে কর্মরত মোট আটজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এ দায় এড়াতে পারেন না। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উপজেলার একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং ইজারাদাতাগণও।
তারা প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আদায়কৃত এই কোটি কোটি টাকার ভ্যাট-ট্যাক্স কোথায় গেছে এবং কার কাছে রয়েছে? কোন একাউন্টে তা জমা রয়েছে, তারও সঠিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন। অনেকটা জানলেও, মুখ খুলতে নারাজ কর্ণফুলীর ইউএনও অফিসের সিএ দীপু চাকমা। তিনি সব কিছু জানেন বলে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার প্রথমে দীপু চাকমাকে।
অর্থবছর ভিত্তিক বাদ্দের হিসাব ও ভ্যাট ট্যাক্স
কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ, এলজিইডি হিসাব শাখার নথি ও ট্রেজারী শাখার বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদকের হাতে গত ৬ অর্থ বছরের তথ্য আসে। এতে তথ্য বলছে, উপজেলা উন্নয়ন তহবিলে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের বরাদ্দ ছিলো ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫% আয়কর ছিলো ৩২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং সাড়ে ৭% ভ্যাট ছিলো ৪৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা।
২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিলো ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫% আয়কর ছিলো ২৬ লাখ টাকা এবং সাড়ে ৭% ভ্যাট ছিলো ৩৯ লাখ টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ ছিলো ৪ কোটি ২৯ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫০ টাকা। এতে ৫% আয়কর ছিলো ২১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭২ টাকা এবং সাড়ে ৭% ভ্যাট ছিলো ৩২ লাখ ২১ হাজার ৫০৮ টাকা।
২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কর্ণফুলী উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ ছিলো ৯ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৬ টাকা। এর মধ্যে ৫% আয়কর ছিলো ৪৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩১৫ টাকা এবং সাড়ে ৭% ভ্যাট ছিলো ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৭২ টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ ছিলো ৯ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৫% আয়কর ছিলো ৪৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং সাড়ে ৭% ভ্যাট ছিলো ৭৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ ছিলো ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫ হাজার টাকা। এতে ৫% আয়কর ছিলো ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ২৫০ টাকা এবং সাড়ে ৭% ভ্যাট ছিলো ৪১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৭৫ টাকা। হিসাব মতে, ২০১৮ হতে ২০২৪ পর্যন্ত গত ৬ অর্থ বছরে মোট বরাদ্দ ছিলো ৪০ কোটি ৬৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫৬ টাকা। এর মধ্যে মোট আয়কর ছিলো ২ কোটি ৩ লাখ ১৮ হাজার ২৩৭ টাকা এবং মোট ভ্যাট ছিলো ৩ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৫ টাকা। তার সাথে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের হিসাবও যোগ হবে।
কোন কৌশলে অডিট ফাঁকি ও অসঙ্গতি
নির্ভরশীল সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল কর্ণফুলী উপজেলার কার্যক্রম শুরু হলেও ২০২২ সালের শেষের দিকে একবার অডিট করেছিলেন ঢাকাস্থ হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিজিএ) সদস্যরা। এতে অডিট কর্মকর্তাদের চোখে কোটি কোটি টাকার অসঙ্গতি ধরা পড়লেও পরে মোটা অঙ্কের সুবিধা দিয়ে তাঁদের ম্যানেজ করেছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের তৎকালীন কর্মকর্তাগণ।
ভ্যাট-ট্যাক্স কী আদৌও আদায় হয়েছে?
এছাড়া, কর্ণফুলী উপজেলা সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদার, ইজারাগ্রহীতাগণ এবং সরবরাহকারীকে বিল প্রদানকালে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৫২ ধারা ও ১৯৮৪ সালের আয়কর বিধিমালার ১৬ বিধি অনুসারে উৎস কর কর্তন করা হয়। পরে তা নির্দিষ্ট চালান ফরমে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু কর্ণফুলীতে তা যথাযথভাবে জমা না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে উদ্ভট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদিও অনেকের দাবি, টাকা জমা দিয়েছেন, কিন্তু কোন প্রমাণ বা চালান কপি নেই। যদিও গত ৭ বছরে নানা অভিযোগ পাওয়া গেলেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্ণফুলীতে কোন অভিযান চালাতে নজরে আসেনি।
অনুসন্ধানে তথ্য পাওয়া যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের রাজস্ব আয় যা পরবর্তীতে উপজেলা উন্নয়ন তহবিলে স্থানান্তরিত হয়, সেই তহবিলের অর্থ দিয়ে দরপত্র, রিকুয়েস্ট ফর কোটেশন (আরএফকিউ) পদ্ধতিতে এবং প্রজেক্ট ইমপ্লেমেন্টেশন কমিটি (পিআইসি) পদ্ধতিতে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হয়।
এসব বাস্তবায়িত কাজের অধিকাংশ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এমনকি নিয়ম অনুযায়ী পরিশোধিত বিলে কাজের ভ্যাট ও আয়কর কর্তন করা হয়েছে। অথচ ভবিষ্যৎ অডিট টিমের কাছে উপস্থাপনের জন্য এলজিইডি চালান কপি চাইলেও তা দিতে ব্যর্থ হন কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ, যা চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
এই ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) ও ট্যাক্সের অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না হওয়ায় পুরো বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সচেতন মহল বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বিভাগীয় কন্ট্রোল জেনারেল অফ একাউন্টস (সিজিএ) এর অডিট কামনা করেছেন।
২০১৭ সাল থেকে পরবর্তী সকল অর্থ বছরে সরকারের কোটি কোটি টাকার ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ক্ষতি করা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন উপজেলার একাধিক জনপ্রতিনিধি।
বার বার তাগিদে কী বলেছিলো এলজিইডি?
কর্ণফুলী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফরের সাবেক এক প্রকৌশলী জানান, ‘ভ্যাট ট্যাক্সের বিষয়ে এলজিইডি থেকে কয়েকবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি ইস্যু করা হয়েছিলো। কিন্তু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বারবার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।'
তিনি আরো বলেন, 'পরে একদিন ইনকাম ট্যাক্সের অফিসার আসলে দীপু চাকমা জানিয়েছিলেন, পরিষদের একাউন্ট প্রাইভেট ব্যাংকে থাকায় চালানে টাকা জমা দিতে পারছেন না। প্রতি চালানে তিনশ’ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। তবে, এই বিষয়টি আমাদের তখন জানায়নি উপজেলা পরিষদ। অথচ ওই সময় চেয়ারম্যান বলেছিলেন, সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কর্ণফুলীর ভ্যাট-ট্যাক্স রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়েছে কিনা, আমি বলতে পারি না।’
তথ্য সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্দেশনা পেয়ে উপজেলা পরিষদকে নিয়ম অনুযায়ী চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিলো যে, উন্নয়ন তহবিলের (এডিপি/রাজস্ব) অর্থায়নে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক প্রতি অর্থ বছরের প্রকল্প গ্রহণের শেষ সময় পূর্ববর্তী ৩১ মার্চ ও বাস্তবায়নের শেষ সময় ৩১ মে নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্দেশনা মতে, অর্থ বছরের প্রকল্প ও দরপত্র কার্যক্রম ৩১ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছিলো। সঠিক সময়ে ব্যয় করতে না পারলে, তা ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করার কথাও জানানো হয়েছিলো। কিন্তু এসব নির্দেশনাও আমলে নেয়নি উপজেলা পরিষদ।
নিয়ম লঙ্ঘন না দুর্নীতির কৌশল?
এদিকে, পরপর গত ৬-৭ অর্থবছরে কর্ণফুলী উপজেলা থেকে কোনো ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারি কোষাগারে জমা না হওয়া এবং কোন ধরনের অডিট ও পরিচালনা করা না হওয়ায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও এসব বিষয় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কিংবা দ্রুত অডিট প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত। এতে সরকারি কর্মকর্তাদের অবহেলা এবং দায়িত্ব পালনে অবজ্ঞা থাকতে পারে, যা আরও তদন্তের দাবি রাখে।
ফলে, কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিটি অর্থ বছরের ভ্যাট ও ট্যাক্সের কোটি কোটি টাকা যদি সরকারি খাতে জমা না হয়, তাহলে এসব টাকা কোথায় রয়েছে? সচেতন মহল উদ্বিগ্ন, কারণ সরকারি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে, তা কোথায় রাখা হচ্ছে? এই ধরনের অব্যবস্থা দেখে অনেকে আবার হতবাক হয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, স্থানীয় সরকারের রাজস্ব তহবিলে অর্থ বছর শেষ হওয়ার পরবর্তী বছর শুরু হওয়ার সাথে সাথেই রাজস্ব তহবিলের জমাকৃত অর্থ উন্নয়ন তহবিলে স্থানান্তরিত হওয়ার কথা। উক্ত অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে করতে হয়। কিন্তু কর্ণফুলীতে এই বিধান লঙ্ঘিত হয়েছে, যা সরকারি নিয়ম ও প্রক্রিয়ার প্রতি অবজ্ঞা এবং শৃঙ্খলার অভাবের প্রতিফলন।
সব জেনেও জানে না কর্ণফুলী এলজিইডি? ব্যয়ের হিসাবে গড়মিল!
বর্তমান কর্ণফুলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান নিজেই জানেন না যে, গত অর্থ বছর শেষে উন্নয়ন তহবিলে কত টাকা স্থানান্তরিত হয়েছে। গত ৭ বছরে ভ্যাট ট্যাক্স আদায় করা হয়েছে কিনা সে তথ্যও তাঁর জানা নেই। কারণ তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টানা সাড়ে ১০ বছর আনোয়ারা উপজেলায় কর্মরত ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার এপিএস সায়েম এর খুঁটির জোরে। অথচ নিয়মানুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছরের অধিক সময় থাকতে পারেন না।
তাঁকে তিনবার বোয়ালখালী, রাঙ্গামাটি বদলি করা হলেও সাবেক মন্ত্রী-এপিএসের হস্তক্ষেপে তাঁর বদলি আদেশ প্রত্যাহার হয় বারবার। বর্তমানে সুকৌশলে আনোয়ারা থেকে কর্ণফুলী উপজেলায় বদলি নিলেন। যাতে বিগত সময়ের সকল অনিয়ম দুর্নীতি থেকে নিজেকে আড়াল করতে পারেন।
বিগত সময়ে প্রকৌশলী তাসলিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, নিম্নমানের কাজ অনুমোদন, ঠিকাদারের সাথে সখ্যতা গড়ে একাধিক প্রকল্পে লোকসান দেখিয়ে প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশসহ পছন্দসই ঠিকাদার দিয়ে কাজ করানোর। এ নিয়ে দুদকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়েছে বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, স্কীম বাছাই কমিটির অনুমোদন ছাড়া কোন স্কীম গ্রহণ করা যায় না, কিন্তু কর্ণফুলী উপজেলায় আজ পর্যন্ত কোন স্কীম বাছাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এ পরিস্থিতি স্পষ্টতই প্রশ্ন তুলছে, তাহলে স্কীমগুলো অনুমোদিত হয় কীভাবে? এটি একটি গুরুতর অব্যবস্থা, যা সরকারি নিয়মের প্রতি অবজ্ঞা এবং দায়িত্বের অভাবকে ইঙ্গিত করছে।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত কর্ণফুলী উপজেলার সমস্ত হাট বাজার, ঘাট, পুকুর ও বিভিন্ন জলাশয় ইজারা দিয়ে যে অর্থ রাজস্ব খাতে জমা হওয়ার কথা, সে অর্থের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। যদিও অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, তবে কোথায় এবং কীভাবে তা ব্যয় হয়েছে, তার কোনো ভাউচার বা সঠিক হিসাব উপজেলা পরিষদ ও কর্ণফুলী ইউএনও মাসুমা জান্নাত দেখাতে পারেননি। এই অবস্থায়, খাতভিত্তিক আয় থাকলেও ব্যয়ের সামঞ্জস্য না থাকার বিষয়টি আত্মসাতের অভিযোগকে আরও শক্তিশালী করেছে। যা তদন্তের দরকার। এছাড়া, ভূমি উন্নয়ন করের ২ শতাংশ অর্থও উপজেলা পরিষদ গ্রহণ করে, কিন্তু গত ৭ বছরে এ সম্পর্কিত কোন সঠিক তথ্যও দিতে পারেনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়।
মিলে মিশে লুটপাট, না অন্য কিছু?
মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে অন্যান্য সরকারি দফতরগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর নির্দেশে উৎসে কর কর্তন এবং সময়মতো সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলো। কিন্তু কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ তা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত ও সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তাঁরা গত ৫ আগস্টের পর উপজেলা কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে নামে বেনামে প্রকল্প দেখিয়ে উন্নয়ন তহবিলের কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন, যা আইনগতভাবে বৈধতা নেই।
মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ করার কোনো সুযোগ নেই, এবং এই অর্থ রাজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা যেতে পারে। তবে, শহীদ মিনার নির্মাণ ও পুকুর খননের জন্য বরাদ্দ হওয়া টাকা উন্নয়ন তহবিলের প্রকল্পের আওতায় পড়ে না, বরং এটি রাজস্ব তহবিলের টাকা ছিলো। এসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য দুদকের অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক সাবেক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘কর্ণফুলী এলজিইডি অফিস থেকে বিল উপস্থাপনের সময় নিয়ম অনুযায়ী আয়কর ও ভ্যাট কর্তন করে সংশ্লিষ্ট চালানসহ বিল উপজেলা পরিষদে পাঠানো হয়। কিন্তু উপজেলা পরিষদ উক্ত চালানের টাকার চেক পাশ করে নগদ অর্থ উত্তোলন করে, অথচ সেই টাকা সংশ্লিষ্ট সরকারি ব্যাংকে জমা না দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে রেখে দেন সংশ্লিষ্টরা। এতে প্রায় ৫ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব—ভ্যাট ও আয়কর—অন্যের পকেটে চলে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অভিযোগ তদন্ত করলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।’
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে ফাঁক ফোকর
এদিকে, কর্ণফুলী উপজেলায় বিভিন্ন খাত থেকে আদায়কৃত ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারি কোষাগারে যথাযথভাবে জমা হয় কিনা জানতে চাইলে ইউএনও অফিসের কনফিডেনশিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিএ) দীপু চাকমা বলেন, ‘আমরা কিছুদিন আগে চালান ফরমে অর্থ জমা দিয়েছি। জমা প্রদানের চালান ফরম এলজিইডি অফিসের সব ফাইলে আছে হয়তো।’ তবে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান জানান, তিনি এখনো এ ধরনের কোনো চালান ফরম বা কাগজ পাননি। তবে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি যাচাই করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এমন অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের দাবি ও প্রকৌশল দপ্তরের বক্তব্যের মধ্যে বড় ধরনের সাংঘর্ষিকতা দেখা দিয়েছে। এতে কর্ণফুলী উপজেলার ভ্যাট-ট্যাক্স সংক্রান্ত অভিযোগগুলো আরও জোরালো ও সন্দেহজনক হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা।
কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদে ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও আর্থিক কর্মকর্তাদের বক্তব্যে অস্পষ্টতা, এড়ানো এবং দায় এড়ানোর প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
কী বলছেন উপজেলার অন্যান্য কর্মকর্তারা?
উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এলজিইডি অফিস। সুতরাং এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ ও এলজিইডি অফিস বলতে পারবে। আমি কিছু জানি না।’
আবার উপজেলা প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান বলেন, ‘আমি মাত্র কিছু দিন আগে যোগদান করেছি। এই বিষয়ে কিছুই জানি না। কাগজপত্র যাচাই করে বলতে পারব।’ এর মানে দীর্ঘদিনের আর্থিক লেনদেন বিষয়ে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর কোনো জ্ঞাত তথ্য নেই।
অন্যদিকে, সোনালী ব্যাংক পিএলসি কর্ণফুলী উপজেলা শাখার সাবেক এক ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার দায়িত্বকালে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ বড় অঙ্কের কোনো ভ্যাট বা আয়কর জমা দিয়েছেন বলে মনে পড়ে না। কেবলমাত্র অল্প কিছু জমা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের।’
বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক দীপেস দাশ জানান, ‘আমার জানা মতে এখানে ভ্যাট-ট্যাক্স জমা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত না। তবে প্রকল্প কর্মকর্তা বিল পাস করালে আমরা তা কার্যকর করি। তাঁরা জানবেন বিষয়টি।’ সারাদেশে একই চালান নম্বরে ভ্যাট ট্যাক্স জমা হয় বলে আলাদা করে কর্ণফুলীর হিসাব জানা আরো কঠিন বলে মন্তব্য ব্যবস্থাপকের।
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে প্রথমে বলেন, ‘আমি কিছু জানি না, খোঁজ নেব।’ পরে তিনি হঠাৎ করে উপজেলা প্রশাসনের হলরুমে একটি রাজস্ব সভা ডাকেন, কিন্তু সেই সভা থেকেও কার্যকর কোনো ব্যাখ্যা বা তথ্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। সূত্র মতে, বর্তমানে তিনি ঢাকায় প্রশিক্ষণে রয়েছেন।
এই অবস্থায় একের পর এক সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে অস্পষ্টতা, দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া এবং তথ্য গোপনের প্রবণতা কর্ণফুলীতে দীর্ঘদিন ধরে চলা অর্থনৈতিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগকে আরও দৃঢ় করছে।
সচেতনমহল বলছে, এখনই সময় এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিজিএ) কার্যালয়ের সরাসরি তদন্তের। তা না হলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়ার কথা ছিল এমন কোটি কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরীর বক্তব্য কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদে ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত জটিলতা এবং অনিয়মের চিত্রকে আরও সুস্পষ্ট করে তুলেছে। তিনি বিশেষ সুত্রে দাবি করেছেন, তার সময়ে উপজেলা কোড না থাকায় এডিপি বরাদ্দ পাননি, তবে রেজিস্ট্রি ও বাজার খাত মিলিয়ে প্রতি বছর ২ থেকে ২.৫ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছেন।
তার মতে, ইউএনও কার্যালয়ের সিএ দীপু চাকমা ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে আয়কর ও ভ্যাটের টাকা চেকের মাধ্যমে পটিয়া সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়েছেন, যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অর্থ জমা হয়নি বলে ধারণা। ব্যাংকের সার্ভিস চার্জ সংক্রান্ত জটিলতাও ছিল বলে জানান তিনি। তবে তিনি স্পষ্ট করে দায়িত্বটি ইউএনও’র ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়ে বলেছেন, 'সব তথ্য ইউএনও থেকে নেওয়া সমীচীন হবে। এটা উনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।'
সংশ্লিষ্ট জেলা ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নোমান হোসেন বলেন, 'অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ভ্যাট ও ট্যাক্স কর্তন করে তা কেন সরকারি কোষাগারে জমা দেবে না, তা বোধগম্য নয়। এতদিন কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় বিষয়টি জানা সম্ভব হয়নি। আমি উপজেলা প্রশাসনকে খোঁজ নিতে বলছি।'
চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১-এর কর কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'এ ধরনের তথ্য আমাদের জানা ছিল না, এখন আপনার কাছ থেকেই জানলাম। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের ভ্যাট-ট্যাক্স ফাইল পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস কর্মকর্তা এস এম মনজুর আহমেদ বলেন, 'উপজেলা থেকে কোনো বিলের বিপরীতে ভ্যাট-ট্যাক্স চালান কপি আমাদের অফিসে এসেছে কিনা তা যাচাই করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের এসব বিষয়ে অবগত থাকার কথা। কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস অফিস গুরুত্ব দিয়ে অডিটের উদ্যোগ নেবে।' তিনি আরও বলেন, 'এ বিষয়ে কর কমিশনারই সঠিক ব্যক্তি, প্রয়োজনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।'
ঢাকা হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের উপ-হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (অডিট) মোসা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, 'বিল অনুমোদনের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স কর্তন হওয়ার নিয়ম রয়েছে। সারা দেশে একই কোড ব্যবহার হয়। তবে উপজেলা পরিষদে হেরফের অসম্ভব নয়। অডিট করলে সব বেরিয়ে আসবে। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।'
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন অডিট অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক জেনারেল মো. নুরুল ইসলাম বলেন, 'লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৯ মে কর্ণফুলীকে দেশের ৪৯
এমএসএম / এমএসএম
ভূরুঙ্গামারীতে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সংগঠনের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
বড়লেখায় হাদীর রুহের মাগফিরাত কামনায় জামায়াতে ইসলামীর দোয়া মাহফিল
দেবিদ্বার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে প্রধান শিক্ষককে বহিস্কারের অভিযোগ
গজারিয়ায় দিনে দুপুরে এক যুবককে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
চাঁদপুরে শহিদ হাদির গায়েবানা জানাজায় ছাত্র-জনতার ঢল
হেডম্যান পাড়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার উদ্যােগের মহা আচরিয়া গুরু পূজা অনুষ্ঠিত
ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদে সমাজসেবা অফিস সহায়কের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কাউনিয়ায় শোকাবহ পরিবেশে ওসমান হাদীর গাইবানা জানাজা সম্পন্ন
আব্দুল আলী ও হালিবন নেছা ফাউন্ডেশন কর্তৃক মুকসুদপুরের ৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হলো মেধা বৃত্তি পরীক্ষা
শেরপুরের নকলায় নিখোঁজের চার দিন পর শিশু রেশমীর লাশ উদ্ধার
ভূরুঙ্গামারীতে শরীফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
তানোর কোয়েল পূর্বপাড়া গ্রামের স্বপন আলী অবৈধ মটার স্হাপন জনগণের মধ্যে চরম উত্তেজনা