ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

সম্মেলন ঘিরে সরগরম বারহাট্টা উপজেলা বিএনপি


বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি photo বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২-৫-২০২৫ দুপুর ১:২০

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আগামী ২৫ মে রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন। সন্মেলনকে সামনে রেখে আড়মোড়া ভেঙে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের পক্ষে নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সন্মেলনকে সামনে রেখে ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ, পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার সর্বত্র।  বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলা জুড়ে বইছে নির্বাচনী আমেজ।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন সম্মেলন পরবর্তী একই সঙ্গে কাউন্সিলও অনুষ্ঠিত হবে। দ্বি-বার্ষিক সন্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সরাসরি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে করছেন পথসভা, মোটরসাইকেল শোডাউন এবং উঠোন বৈঠক। উজ্জীবিত হয়ে জনমত অর্জনের পাশাপাশি রাজনৈতিক মাঠ দখলেও তৎপর উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনগুলো। নির্বাচনে উপজেলার ৭ ইউনিয়নের (প্রতি ইউনিয়নে ৭১ জন) মোট ৪৯৭ জন ভোটার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন। আসন্ন সন্মেলনে সভাপতি পদে ৪ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সন্মেলনে সভাপতি পদে চারজন প্রার্থীর মধ্যে (চেয়ার) প্রতীক নিয়ে বর্তমান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাক আহমেদ। (হাতি) প্রতীক নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মানিক আজাদ, (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদার এবং (ছাতা) প্রতীক নিয়ে বাউসী ইউনিয়নের ৩ বারের নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রশীদ আলম তালুকদার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে (ফুটবল) প্রতীক নিয়ে বর্তমান উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিক আহম্মেদ কমল, (মাছ) প্রতীক নিয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্কাস আলী এবং (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল্লাহ সোহেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

নির্বাচন নিয়ে কথা ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সরাসরি ভোট প্রদান করতে পারেনি। ফলে বিএনপি কর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ভোট নিয়ে অনাগ্রহের সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন কেন্দ্র করে যে ভোটের স্বচ্ছ পদ্ধতি আবার এদেশে ফিরে এসেছে তাতে করে তারা আনন্দিত।

তারা আরও বলেন, এতদিন আমাদের নেতাদের কাছে ছুটে যেতে হতো। কিন্তু এবার সন্মেলনে ভোটকে কেন্দ্র করে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে, খোঁজ খবর নিচ্ছে, এতে করে আমরা আনন্দিত। আমরা এখন আমরা নিজেদের ভোটে নেতা নির্বাচন করতে পারবো। এতে করে যারা বিগত দিনে দুঃসময়ে আমাদের খোজ-খবর নিয়েছেন তাদেরকে নেতা হিসেবে বেছে নেয়ার সুযোগ পাবে আমাদের মত সাধারন কর্মীরা।

সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদার বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। তাই আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পারছি। বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে বারহাট্টা উপজেলা জুড়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আমি বিএনপির দুর্দিনে সভাপতি ছিলাম এবং কর্মীদের আগলে রেখেছিলাম। এখনও আমি তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে আছি। আমি সকল কাউন্সিলারদের কাছে যাচ্ছি আশা করি তারা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।

সভাপতি প্রার্থী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রশীদ আলম তালুকদার জানান, আগে সিস্টেম ছিল ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ আগ্রহী হয়ে তালিকা তৈরি করে দিতো। সে তালিকা দেখে থানা কমিটি অনুমোদন দিতো। এবার দলের আগের সিস্টেম পাল্টে গেছে। দলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নতুন সিস্টেমে সরাসরি ভোট গ্রহণ হচ্ছে। এতে আমরা যেমন মজা পাচ্ছি তেমনি দলীয় নেতাকর্মী সবাই মজা পাচ্ছেন। এখন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নতুন সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তৃণমূল থেকে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা কমিটি ভোটের মাধ্যমে কর্মীরা তাদের পছন্দের নেতৃত্ব বানাবে। নেতা নির্বাচিত করতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বেছে নেয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। আমি আশা করছি, তৃনমুল বিএনপির ত্যাগী কাউন্সিলররা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।

সভাপতি প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মানিক আজাদ বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার আমাদের মামলা-হামলা করে নানারকম অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে হলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তাই আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পারছি। বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে বারহাট্টা উপজেলা জুড়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিপদে আমি দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি আশা করি, দলীয় নেতাকর্মীরা ভোট দিয়ে সভাপতি পদে আমাকে বিজয়ী করবেন।

সভাপতি প্রার্থী বর্তমান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাক আহমেদ বলেন, দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পার হয়ে আমরা এখানে এসেছি। আমি তৃণমূল বিএনপির সাথে সবসময়ই ছিলাম এখনও আছি এবং থাকবো। আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আমাদের সম্মেলন। আশা করি, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আরও সুসংগঠিত হবে ও শক্তিশালী হবে। সভাপতি পদে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব  আশিক আহমেদ কমল বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলার সর্বত্র উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীদিনে নতুন বিএনপির যাত্রা শুরু হবে। আমরা সুন্দর একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছি। মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত উপজেলা হবে বারহাট্টা। বিপদে আমি দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি আশা করি, দলীয় নেতাকর্মীরা ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে আমাকে বিজয়ী করবেন।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক  আক্কাস আলী বলেন, আমি মনে করি বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। আমি বিএনপির আদর্শের একজন সৈনিক। বিগত দিনে আমি ফ্যাসিস্ট সরকারের নানারকম অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছি ও জেল খেটেছি। আমি আশা করি, এই নির্বাচনে কাউন্সিলাররা আমাকে ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করবেন।

আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আরিফুল্লাহ সোহেল  বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আমার উপর হামলা মামলা ও  নির্যাতন হয়েছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। বিএনপির মূল লক্ষ্য হলো গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা। আমরা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে চাই। আমি একজন তরুণ প্রতিনিধি হিসেবে সবার সাথে থাকতে চাই। আমি আশা  করি ভোটাররা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করবে। 

সংশ্লিষ্ট  সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ২০১৪ সালে বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই কমিটির মেয়াদ চলে গেলে ২০১৯ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। তারপর ২০১৯ সাল থেকে আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যক্রম। এরপর ২০২২ সালে বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তৎক্ষালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মাইনুল হক কাশেম ও সাহতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চঞ্চলের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা কর্মী বিএনপির সম্মেলন মঞ্চে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পরবর্তীতে বারহাট্টা কারিগরী ও বাণিজ্যক কলেজের মাঠে সম্মেলন দেওয়ার চেষ্টা করা হলে একই দিনে একই স্থানে যুবলীগের পোগ্রাম দেওয়া হয়। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলা বিএনপি সম্মেলন স্থগিত করা হয়।

এমএসএম / এমএসএম

লাকসাম পৌরসভার ১৯৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা

মাগুরা পৌরসভার ২০২৫ - ২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা

নিরাপদ সড়কের দাবিতে চৌগাছায় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মানববন্ধন

নাচোলে বিনামূল্যে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ

কাপ্তাই ১০ আরই ব্যাটালিয়ন কতৃক সহায়তা প্রদান

পটুয়াখালীর বাউফলে কেটে কেটে আ.লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

বাঁশখালীতে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণী উদ্বোধন

বাকেরগঞ্জ গৃহবধূ আসমার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিবকে কুপিয়ে জখম

গোপালগঞ্জে পলিথিন বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

টাঙ্গাইলে অর্ধকোটি টাকার লুন্ঠিত ৭৫ ড্রাম তেল'সহ ২ ডা/কা'ত গ্রেফতার

দাউদকান্দিতে মাইথারকান্দি খালের আবর্জনা অপসারণ উদ্বোধন

সীতাকুণ্ডে সরকারী জায়গা দখলকৃত শিপইয়ার্ড উচ্ছেদ করলো প্রশাসন