দুর্নীতিবাজ চক্রের রোষানলে সিডিএ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সেলিম
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)’র পরিচ্ছন্ন প্রকৌশলী এজিএম সেলিম অফিস স্টাফদের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় দীর্ঘদিনের অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া সিন্ডিকেটটির রোষনলে পড়েছে বলে সূত্রে জানায়। গুরুত্বপুর্ণ পদে এ ব্যক্তি অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণে প্রতিদিন কাজের অগ্রগতির বিষয়ে কৈফিয়ত, ফাইলে আটকে হয়রানি, টাকার বিনিময়ে মনগড়া প্ল্যান ও নকশা দেয়ার প্রচলন দীর্ঘদিন ধরে চলমান রয়েছে। এ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের অনেকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলাও চলমান রযেছে। সিডিএর অফিস স্টাফদের দুর্নীতিমুক্ত হয়ে সেবার মান বাড়ানোর নির্দেশ দেয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে অফিসের কিছু স্টাল উঠে পড়ে লেগেছে বলে সূত্রে প্রকাশ।
সিডিএতে সেবার মানবৃদ্ধি করতে নির্দেশ দেয়ার পর অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া ঘুষখোর কর্মকর্তা কর্মচারীদের রোষানলে পড়েছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৗশলী ও ইমারাত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান এজিএম সেলিম। এইসব বিষয়ে নগরীর বিভিন্ন বিল্ডিং মালিক, রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, সিন্ডিকেট এর সদস্য, সিডিএ’র কর্মকর্তা কর্মচারী, গ্রাহকসহ সৃজনশীল ও সচেতন ব্যক্তিদের সাথে কথা বিষয়টি পরিস্কার হয়ে উঠে।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে মার্চ মাসে এজিএম সেলিম সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে সৎ অফিসার হিসেবে পরিচিত হন। এ সময় থেকে ইঞ্জিনিয়ার সেলিমের বিপক্ষে কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিপক্ষে অবস্থান নিতে থাকেন। সিন্ডিকেটভুক্ত সদস্যরা এক জোট হয়ে কৌশলে সঠিক কর্মকা-ের বিপরীতে ঘুষের কাজ শুরু করে। এই সময় সিন্ডিকেটের সদস্যরা জোট বেঁধে তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এমন কি কর্তাব্যাক্তিদের বশে এনে ২০০৭ সালে অক্টোবর মাসে তাকে বরখাস্ত করান। মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে ২০০৮ সালের মার্চ মাসে সসম্মানে তার বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। ফলে ঘুষখোর বনাম সৎ অফিসার দ্বন্ধ লেগে আছে সিডিএতে তখন থেকে। এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকে মামলাও একাধিক চলমান। এইসব দুর্নীতিবাজ লোকদের কোন লোন নেই, আছে শুধু নামে বেনামে-বিশাল অংকের টাকা ও সহায় সম্পদ।
আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার রোষানলে পড়ে এজিএম সেলিম আওয়ামী লীগ আমলে ২০১২-২০১৬ সাল পর্যন্ত চাকুরিতে কর্মচ্যুত হন। ২০১৩ সালে তাকে ষড়যন্ত্র করে বদলিও করা হয়। হয়রানি করা হয় নানা ভাবে। অভিযোগ, মামলা ও অবহেলায় এজিএম সেলিমকে রাখা হয় কর্মস্থলে। কাজ না দিয়েও যথাযথ বেতন ভাতা প্রদান করেন কর্তৃপক্ষ। ফলে নগরবাসী সেবা বঞ্চিত হয়, দুর্নীতিবাজরা হয় অবৈধ ভাবে লাভবান। এজিএম সেলিম ওই সময় গ্রাহকসেবা দিতে পারেননি ফলে কর্মহীন অবস্থায় চাকুরী জীবন চলে তাঁর। ২০১৫ সালে হাইকোর্টের মামলায় রায় হয় এজিএম সেলিম’র অনূকুলে। বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও এজিএম সেলিম নৈতিক শক্তিতে এখনোও বারবার পদোন্নতি পেয়ে আসছেন।
এদিকে, সিন্ডিকেটের সদস্যরা অনৈতিক ভাবে যে সব গ্রাহক থেকে ঘুষ নিয়ে ফাইল পাস করাবে এমন আশ্বাস দিয়েছে তারা এখন বেকায়দায় পড়েছেন। নানা ভাবে গ্রাহকদের বারবার নানা আশ্বাস দিচ্ছে কিন্তু অনৈতিক ভাবে ফাইল পাস করাতে পারছে না। তারা এখন একজোট হয়ে এজিএম সেলিম বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার শুরু করেছেন। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে রাস্ট্রীয় পট পরিবর্তনের পর দেশে বিভিন্ন দপ্তর -অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে পদ-পদবীর রদ বদল হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ইঞ্জিনিয়ার সেলিম তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও ইমারাত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান পদে আসীন হন। এই পদে যোগদানের পর ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেকাদায় পড়ে। সৎ, বৈধ গ্রাহকেরা সেলিম সাহবের কর্মকা-ে অত্যধিক খুশী হলেও অন্য দুর্নীতিবাজরা দারুণ নাখোস হয়ে পড়েছেন বিপাকে। এরা পারছেন না অবৈধ উপায়ে অনৈতিক লেনদেন করতে। এসব কারণে সেলিম সাহেব ও ইমারত নির্মাণ কমিটির সদস্যরা সেবা দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইমারত নির্মাণ অনুমোদন শাখার সিন্ডিকেট সদস্যরাও। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইমারত নির্মাণ শাখায় সিন্ডিকেট বাণিজ্যের বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে। ভবন নির্মাণ করতে গেলে অনুমোদন প্রক্রিয়াতে পদে পদে সাধারণ জনগণকে ভোগান্তি এবং বিড়ম্বনার সাথে ঘুষ বাণিজ্য তো আছেই। ৫ আগস্ট এর পরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সবচাইতে যে বিষয়টি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এসেছে তা হচ্ছে ইমারত নির্মাণ শাখায় সিন্ডিকেট বাণিজ্য দৌরাত্ব প্রায় বন্ধ হয়েছে বললেই চলে। এর পিছনে মূল কারিগর হচ্ছে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান এজিএম সেলিম । যার সুনাম চট্টগ্রামের মানুষের মুখে মুখে। তিনি একমাত্র ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে গত ১৬ বছর কোন ঘুষ বাণিজ্য কিংবা অন্য কোন দুর্নীতির অভিযোগ নেই। গত ১৫ বছর চট্টগ্রামে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারত বিধিমালার প্রায় কোন আইন মানা হয়নি বললেই চলে। বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল করিম সৎ এবং যোগ্য মানুষ হিসেবে এজিএম সেলিমকে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। সেলিম এই পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমে যে সকল অনিয়মগুলো চালু ছিল সেসব অনিয়মগুলো বন্ধ করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি মূলত আইন অনুযায়ী একটি জায়গাতে যত তলা ভবন অনুমোদন পাওয়ার কথা ঠিক ততটুকু ভবনের নির্মাণ অনুমোদন প্রদান করেন। এই কারণে বিভিন্ন ডেভলপার কোম্পানি এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট মেম্বাররা যারা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বড় বড় ভবন নির্মাণের অনুমোদন করে দেবেন বলে টাকা নিয়েছিলেন এই চক্রটি এখন বেশ বেকায়দায় আছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা আবেদনকারী কে বলতো ছোট জায়গাতে বেশি তলার অনুমোদন নিয়ে দেবে। আর এই কারণে গত ১৫ বছর এমনো দেখা গেছে চট্টগ্রাম নগর এ দুই ফুট রাস্তার মধ্যে ১০ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন একাধিক তদন্ত বর্তমানে চলমান রয়েছে। গত নয় মাসে ভবন নির্মাণ অনুমোদনে এই বিষয়টি অনেকাংশে কমে এসেছে।
যে সিন্ডিকেট ভবন নির্মাণের পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতো তারা এখন চাচ্ছে যে কোন পন্থায় এজিএম সেলিম কে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে , এতে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান নীতিবান চেয়ারম্যান নুরুল করিম। কারণ তিনি এজিএম সেলিমকে একজন সৎ যোগ্য অফিসার হিসেবে খুবই বিশ্বাস করেন। এভাবে যদি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইমারত নির্মাণ শাখা চলতে থাকে তাহলে আগামীতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের যে সকল অভিযোগ তা আর থাকবে না। ফলে চট্টগ্রাম নগরী একটি পরিকল্পিত নগরীতে রূপ লাভ করবে এটাই আশা করে চট্টগ্রাম নগরের সাধারণ জনগণ।
এমএসএম / এমএসএম
ভূরুঙ্গামারীতে অবকাঠামো উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে বাজারের চিত্র
সুবিপ্রবি অনুমোদিত স্থানে নির্মাণের দাবিতে যুক্তরাজ্যে স্মারকলিপি
দেশনায়ক তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপি নেতা মুর্শেদ-ই-কামালের শুভেচ্ছা
মনোহরগঞ্জে সেতু আছে রাস্তা নেই ৫০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ -২০ বছরেও উদ্বোধন হয়নি কোটি টাকার সেতু
সার সিন্ডিকেট ভাঙতে তৎপর নালিতাবাড়ী কৃষি অফিস: নেই সংকট
তানোরে সাজিদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিলো জামায়াতে ইসলামী
ভূরুঙ্গামারীতে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সংগঠনের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
বড়লেখায় হাদীর রুহের মাগফিরাত কামনায় জামায়াতে ইসলামীর দোয়া মাহফিল
দেবিদ্বার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে প্রধান শিক্ষককে বহিস্কারের অভিযোগ
গজারিয়ায় দিনে দুপুরে এক যুবককে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
চাঁদপুরে শহিদ হাদির গায়েবানা জানাজায় ছাত্র-জনতার ঢল
হেডম্যান পাড়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার উদ্যােগের মহা আচরিয়া গুরু পূজা অনুষ্ঠিত