ঢাকা শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

সফিপুরে ভুয়া ডাক্তারের প্রতারণা: প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন


এম এস রহমান  photo এম এস রহমান
প্রকাশিত: ৩০-৬-২০২৫ দুপুর ১:৪৯

গাজীপুর জেলার সফিপুর বাজার সংলগ্ন রাখালিয়ারচালা, মৌচাক এবং লালমনিরহাট মেডিকেল হল-এর মতো অলিগলিতে বসে থাকা ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহারকারী চিকিৎসকদের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন নিরীহ মানুষ। অভিযোগ রয়েছে, এমন ডাক্তার ডিগ্রি ব্যবহারকারী ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গাজীপুরে তেমন কোনো কার্যকর অভিযান নেই বললেই চলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু সতর্কবার্তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সনদপ্রাপ্ত ডাক্তারদের কাছে পৌঁছাতে না পেরে রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন। স্বীকৃত পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও কিছু চিকিৎসক নিজেদের ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন, যা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন প্যাড ও ভিজিটিং কার্ডে ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ লেখা দেখে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রোগীরা প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, আইন অমান্য করে কোনো কোনো চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপত্রে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ওষুধও লিখছেন। ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত না হয়েও অনেকে তাদের নামের পূর্বে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করছেন। এমনই একজন হলেন সফিপুরে চিকিৎসা প্রদানকারী ডাঃ মো. নূর হোসেন, যিনি ডি.এম.পি.এ (ঢাকা) ও এম.এইচ.জি.(ঢাক) ডিগ্রি ব্যবহার করেন।

দেশের সর্বত্র চলছে বিএমডিসির দেওয়া সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি অমান্য করার প্রতিযোগিতা। এতে একদিকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে অনেক রোগী অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়ছেন আর্থিক ক্ষতির মুখে।

বিএমডিসি আইনের কিছু অংশ উল্লেখ করে চিকিৎসকদের বারবার সতর্ক করে থাকে। বিএমডিসি’র সতর্কীকরণ বার্তায় বলা হয়, স্বীকৃত ডিগ্রিপ্রাপ্ত অনেকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নিবন্ধন ব্যতীত চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নিবন্ধিত অনেক চিকিৎসক/দন্ত চিকিৎসক তাদের সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদিতে এমন কিছু ব্যবহার করছেন যা কোনো স্বীকৃত অতিরিক্ত চিকিৎসা যোগ্যতা নয় (যেমন: পিজিটি, এফসিপিএস পার্ট-১/২, এমডি ইন কোর্স, এম.এস পার্ট-১/২ ইত্যাদি)। তাছাড়া, স্বীকৃত পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, গাইনি বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি ব্যবহার করা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো কোনো চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপত্রে নিষিদ্ধ ওষুধও লিখছেন।

বিএমডিসি আইনের ২২(১) ধারা অনুযায়ী, নিবন্ধন ব্যতীত এলোপ্যাথি চিকিৎসা নিষিদ্ধ। এই ধারা লঙ্ঘন করলে ৩ বছর কারাদণ্ড অথবা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। ২৯(১) ধারা অনুযায়ী, ভুয়া পদবি ব্যবহার নিষিদ্ধ। ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতীত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। এই উপধারা লঙ্ঘন করলে ৩ বছর কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রত্যেকবার পুনরাবৃত্তির জন্য অন্যূন ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত অর্থদণ্ড হবে।

এদিকে, দেশের সর্বত্র চলছে বিএমডিসি আইনের লঙ্ঘন। স্বীকৃত চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও অনেকে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করে নিজেদের নামের আগে ভুয়া ডিগ্রি লাগিয়ে রোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে রোগীর ভালো-মন্দের বদলে টাকা উপার্জন। স্বীকৃত চিকিৎসকদের পাশাপাশি অস্বীকৃত কোয়াক চিকিৎসকদের সংখ্যাও কম নয়, যারা চিকিৎসা খাতের জন্য বড় হুমকি। দেশে প্রায় আড়াই লাখ ‘কোয়াক চিকিৎসক’ রয়েছে, যাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতা নেই। সীমিত জ্ঞান নিয়ে তারা নিজেদের মতো করে চিকিৎসাসেবা দেন, যার ফলে অনেক রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সরকারি অনুমোদন না থাকলেও এ ধরনের চিকিৎসকরা দেশের আনাচে-কানাচে চিকিৎসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে মো. নুরুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "আমি এখানে বিগত ১৫ বছর যাবত চিকিৎসা দিয়ে আসছি।" দেশের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন আইন, বিধি ও নীতিমালা অনুযায়ী নামের আগে ডাঃ লেখাটা সঠিক আছে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি ‘না’ বলে ফোন কেটে দেন।

পরবর্তীতে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে মো. নূর হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হলেও কিছু অগোচরে থেকে যায়। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

এমএসএম / এমএসএম

বিআরটিএতে বিতর্কিত কর্মকর্তা তোফাজ্জলকে বহাল রাখায় প্রশ্ন

মাওনায় ‘মিথ্যে মৃত্যু’ নাটক মাদার্স কেয়ার হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর হয়রানির অভিযোগ

উত্তরায় শিমুল আহমেদের নেতৃত্বে যুবদল নেতা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন

সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ্ রাকিবের বারী সিদ্দিকী পদক অর্জন

বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের প্রেস উইংয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা নিয়োগে বিসিএস ইনফরমেশন এসোসিয়েশনের প্রতিবাদ

১২ বার ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন আবু সালেহ রনি

গুলশানে রাজউকের মোবাইল কোর্ট ও উচ্ছেদ অভিযান

ঢাকা-৫ আসনে এনসিপির মনোনয়ন চান সাদিল আহমেদ

উৎসব মুখর পরিবেশে ড্যাবের নুতন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত

কে এই প্রতারক নাহিদ,পরিচয় ও তার পেশা কি ?

রাজউকের জোন ৬/২-এ ভবন নির্মাণে অনিয়ম দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের না দেখার ভান

মনোহরদী থানার ওসি দুলাল আকন্দের বিরুদ্ধে আইজিপির কাছে অভিযোগ