রাস্তাঘাটের নামে নরকযাত্রা: খোঁড়াখুঁড়িতে বিধ্বস্ত ঢাকা, সিটি কর্পোরেশন নির্বিকার

ঢাকার রাস্তাঘাট এখন আর শুধু যাতায়াতের পথ নয়—এগুলো যেন এক মৃত্যুফাঁদে রূপ নিয়েছে। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত এলাকাগুলোতে রাস্তাঘাটের এমন বেহাল অবস্থা যে, প্রতিটি পা ফেলাই যেন ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া। একদিকে চলছে অবিরাম খোঁড়াখুঁড়ি, অন্যদিকে কাদামাটি আর নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখার কারণে প্রতিটি গলি এখন বিপদসংকুল ময়দানে পরিণত হয়েছে। অথচ এসবের খোঁজখবর নিতে সিটি কর্পোরেশনের যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার অলিগলি—প্রতিটি স্থানেই চলছে ‘উন্নয়ন’ নামের অপারেশন। কিন্তু উন্নয়ন কীভাবে জনদুর্ভোগে রূপ নেয়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে এই খোঁড়াখুঁড়ির কার্যক্রম। রাস্তা খুঁড়ে ফেলা হয়েছে, কিন্তু শেষ করা হয়নি। মাটি ফেলে রাখা হচ্ছে, কিন্তু সরানো হয়নি। বৃষ্টিতে কাদা জমছে, অথচ কোনো নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে শহরের বহু অংশ এখন হাঁটুজল আর হাড়ভাঙা কাদার রাজত্বে পরিণত হয়েছে। এক পথচারী বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, "একটা রাস্তা কাটে, দুই মাস কাজ বন্ধ থাকে। মানুষ পড়ে আহত হয়, যানজট লেগে থাকে। এটা কি উন্নয়ন, না দুর্ভোগের ষড়যন্ত্র?"
একাধিক জায়গায় একসঙ্গে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে—কোনো পূর্বঘোষণা নেই, কোনো বিকল্প পথও নেই। স্কুলগামী শিশু, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, কর্মজীবী মানুষ—সবাই প্রতিদিন এক ভয়ংকর যুদ্ধ করে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, "এই রকম অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি শুধু জনদুর্ভোগই বাড়ায় না, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়ও ডেকে আনে।" অথচ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো দায়িত্বশীল বিবৃতি নেই, কোথাও নেই প্রকল্প সমন্বয়ের ছিটেফোঁটা চিহ্ন।
সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা মাঝে মাঝে কিছু নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে ছবি তুলে, হালকা হস্তক্ষেপ দেখিয়ে ফের অফিসে ফিরে যান। অথচ বাস্তবতা হলো, খুঁড়ে রাখা রাস্তায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। ড্রেন খোলা রেখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, শিশুরা তাতে পড়ে আহত হচ্ছে। কর্মরত শ্রমিকের অভাব এবং দিনের পর দিন কাজ বন্ধ থাকায় মনে হচ্ছে প্রশাসন যেন ঘুমিয়ে আছে—আর নগরবাসী যন্ত্রণায় পুড়ছে।
একজন বৃদ্ধ পথচারী চান মিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "হাঁটার রাস্তাও নাই, ডান পাশে কাদা, বাম পাশে খাল! প্রতিদিনই পা পিছলে মানুষ পড়ে যাচ্ছে। এত খোঁড়াখুঁড়ি করে কী লাভ যদি শেষই না করে?" একজন মা অভিযোগ করে বলেন, "স্কুলের বাচ্চা কোলে নিয়ে হাঁটছি—খেয়াল না রাখলে হয়তো গর্তে পড়ে যাবে। আমরা কি মানুষ নই?"
নগরের প্রাণ শুকিয়ে যাচ্ছে, সেবার নামে চলছে নীরব অত্যাচার। রাস্তার এই বেহাল দশা শুধু দৈনন্দিন চলাচলের সমস্যা নয়, এটি একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি, জীবনহানি এবং সামাজিক অস্থিরতার উৎস হয়ে উঠছে। আবর্জনা, কাদা, দুর্গন্ধ, পানিবদ্ধতা—সব মিলিয়ে মানুষের সহ্যসীমা এখন চরমে। তথ্য ও অভিযোগ মোতাবেক, এই ভোগান্তির পেছনে যে গাফিলতি, সেটি স্পষ্টভাবে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক ব্যর্থতা।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনগণের একটাই প্রশ্ন—রাস্তাগুলো কবে ঠিক হবে? খোঁড়াখুঁড়ির কাজ কবে শেষ হবে? নাগরিক নিরাপত্তা কে নিশ্চিত করবে? যদি এইভাবে চলতে থাকে, তাহলে এই শহর আর বসবাসযোগ্য থাকবে না—পরিণত হবে এক অন্ধকার জনপদে, যেখানে উন্নয়ন মানে হবে দুর্ভোগের আরেক নাম।
উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ সিটির অধীনস্থ ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকনগর এলাকাটি যেন এই দুর্বস্থার একটি প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে পরপর কয়েকটি ম্যানহোলের ঢাকনা নেই—রাস্তার মাঝখানে অরক্ষিত অবস্থায় সেগুলো পড়ে রয়েছে। দিন-রাত পথচারীরা প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন। শিশুরা, বৃদ্ধরা, স্কুলগামী ছাত্রছাত্রী—কেউই নিরাপদ নয়। স্থানীয়রা বলছেন, "ম্যানহোল তো খোলা, এখন শুধু কার মৃত্যু হবে সেটা সময়ের ব্যাপার।" এই পরিস্থিতি কেবল অদক্ষতার নয়—এটি সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক উদাসীনতার এক নির্মম প্রমাণ।
এমএসএম / এমএসএম

উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ফ্ল্যাট ও কার পার্কিং আইডি বরাদ্দের লটারি অনুষ্ঠিত

পেট্রোবাংলায় ২৯১ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে আছে, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা

আ’লীগের আমলে প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসায়ী তোপাজ্জলের কারখানায় হামলা-লুট

ব্যর্থতায় রাকিব-নাছির নেতৃত্বাধীন ছাত্রদল কমিটি ভাঙছে, আসছে নতুন নেতৃত্ব

বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. অরূপরতন চৌধুরী’র জন্মদিন

আলোচিত ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবিতে চাকরি পেলেন

মেট্রোপলিটন হিন্দু কর্মজীবী সমবায় সমিতির অর্থ তছরুপ

উত্তরার গণসমাবেশে আনোয়ার হোসেনের হাতে হাতপাখা তুলে দিলেন চরমোনাই পীর

উত্তর সিটির টেন্ডারবাজিতে এখনো আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দৌরাত্ম

চট্টগ্রাম দিয়ে পালাতে গিয়েও ব্যর্থ আলমগীর কবির ও রায়হান কবির

ধর্ষণের মামলায় এএসপি নাজমুস সাকিব গ্রেপ্তার হচ্ছে না, চাকরিতে থেকে তদন্ত প্রভাবিত করছেন

মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী: দায় এড়ানোর কৌশল খুঁজেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে
