হাওরের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়: সংকট বাড়ছে, উদ্যোগ কম

হাওর শুধু একটি ভূপ্রাকৃতিক গঠন নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, জীববৈচিত্র্য এবং একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা। কিন্তু বারবার বন্যা, আগাম বৃষ্টি, দুর্বল অবকাঠামো, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবহেলার কারণে হাওর এখন রক্ষার বদলে ধ্বংসের মুখে।
এই বাস্তবতা সামনে রেখে আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে নেত্রকোণা সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা আয়োজিত ‘হাওরের সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা বলেন, জাতীয় সম্পদ হাওরকে রক্ষায় সম্মিলিত উদ্যোগ ও দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এখন সময়ের দাবি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, "হাওর শুধু ভ্রমণপিপাসুদের নয়, আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এই অঞ্চলকে যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি, তাহলে আগামী দিনে এর চরম মাশুল দিতে হতে পারে।"
সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রফিক মুহাম্মদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের অর্থ সম্পাদক, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মুহাম্মদ মোফাজ্জল। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী খান লিথো।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের সাবেক রাজনৈতিক কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মা. মাহবুব হাসান শাহীন, বিএনপির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, গ্রিন কনসার্ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক তাহমিনা খানম, আরটিভির বার্তা সম্পাদক ইলিয়াস হোসাইন এবং কিশোরগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এরফানুল হক নাহিদ।
বক্তারা বলেন, প্রতি বছর আগাম বন্যা, বাঁধ ভেঙে যাওয়া কিংবা পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে হাওরের ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে বাজারে চালের দাম বাড়ে, শহরের জীবন ব্যয় বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য নিরাপত্তায় টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। অথচ হাওরবাসীর এই দুর্ভোগ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব, যদি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আন্তরিকতা, স্বচ্ছতা এবং সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তারা আরও বলেন, হাওরের জীববৈচিত্র্যও মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে। দেশীয় মাছ, পাখি ও জলজ উদ্ভিদ আজ হারিয়ে যাচ্ছে। মাছ চাষ, জলাশয়ের মালিকানা, মৎস্য আহরণসহ নানা ক্ষেত্রেও প্রান্তিক মানুষের পরিবর্তে সুবিধাভোগী গোষ্ঠী কর্তৃত্ব করছে। "জাল যার জলা তার"-এই কথাটি অনেক আগেই বাস্তবতা হারিয়েছে।
এছাড়া হাওরের নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষাসেবা এখনও পিছিয়ে রয়েছে। হাওরপারের অধিকাংশ মানুষ এখনো ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে। চিকিৎসা থেকে শুরু করে মৌলিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য নেই কার্যকর পদক্ষেপ।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের উচিত হাওর অঞ্চলকে জাতীয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা। বর্ষায় বিপর্যয় এবং শুষ্ক মৌসুমে দারিদ্র্য যেন হাওরের স্থায়ী চিত্র না হয়। প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রশাসনিক দৃঢ়তা।
তারা আরও বলেন, অবিলম্বে হাওর উন্নয়নে পৃথক কর্তৃপক্ষ, টেকসই বাঁধ ব্যবস্থাপনা, দখলমুক্ত জলাশয়, পরিকল্পিত কৃষি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা—এসব নিশ্চিত করতে হবে। না হলে হাওরের সংকট শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয় দুর্যোগ হয়ে দাঁড়াবে।
সেমিনারে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রয়াস হাওর রক্ষায় নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
এমএসএম / এমএসএম

সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে আগুন

স্টেডিয়াম এলাকায় সেনাবাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান

তুরাগে রাজউকের খালি প্লট দখলের অভিযোগ সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে

ই-কমার্স খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বাফেসাপ আইকনিক অ্যাওয়ার্ড পেল ই-ক্রয় ডটকম

পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় নারীর অংশগ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা

জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের আলোচনা সভা

বাড়তি টাকা দিলে কাগজপত্র ছাড়াই বাসায় পৌঁছে যায় ট্রেড লাইসেন্স

অডিট আপত্তির ভিত্তিতে রেলওয়ে মহাপরিচালকের অপসারণ বেআইনি : রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি

জুলাই সনদের দাবি নিয়ে শাহবাগ অবরোধ

আড়াইহাজারে বিএনপি'র অফিসের ভাড়া চাওয়ায় ঘর মালিককে হত্যা

ডেমরায় জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কর্মসূচি
