ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

মহাদেবপুরে শিক্ষকের পদত্যাগ নেয়া ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা


মহাদেবপুর প্রতিনিধি photo মহাদেবপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২-৮-২০২৫ দুপুর ৩:৫০

গতবছর জুলাই-আগস্টের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের বেলকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক শামসুল আলমের কাছ থেকে স্থানীয় ছাত্রজনতা পদত্যাগপত্র লিখে নেয়ার একবছর পর এব্যাপারে থানায় একটি মামলা এন্ট্রি করা হয়েছে। পুলিশ খাইরুল আলম পলাশ নামে এক বিএনপি নেতাকে থানায় ডেকে নিয়ে ওই মামলায় গ্রেপ্তারও করেছে। পদত্যাগের পর ওই শিক্ষক গত এক বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও বন্ধ হয়নি তার বেতন-ভাতা। ছাত্রজনতা তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দিলেও গত এক বছরেও সে অভিযোগের বিষয়ে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেও প্রধান শিক্ষক কিভাবে নিয়মিত তার সরকারি অংশের বেতন-ভাতা পাচ্ছেন সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না উপজেলা প্রশাসন। এনিয়ে এলাকায় রাজনৈতিক মহলে দারুন তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে একটি প্রভাবশালী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে। 
ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্র ও এক বিএনপি নেতাসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে গত ২ জুলাই মহাদেবপুর থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় বাদি প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম অভিযোগ করেন যে, গতবছর ২২ আগস্ট বেলা ১১টায় ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবক সমাবেশ চলার সময় আসামীরা তার উপর চড়াও হয়ে বেদম মারপিট করে পদত্যাগপত্র লিখে নেয় এবং তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয় দেয়। এর তিন মাস পর গতবছর ২৪ নভেম্বর বিকেল ৩টায় তিনি আবার বিদ্যালয়ে গেলে আসামীরা আবার তাকে মারপিট করে। মামলার ১৩ নং আসামী বেলকুড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওই বিদ্যলয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র, ৫নং আসামী ওইগ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে খাইরুল আলম পলাশ হাতুড় ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের আহ্বায়ক এবং অন্যরা অভিভাবক, বিএনপি ও সমমনা দলের কর্মী সমর্থক। গত ১৩ জুলাই পুলিশ পলাশকে চা খাওয়ার কথা বলে থানায় ডেকে নিয়ে ওই মামলায় গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয়রা জানান, ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল হক বকুল। তার বাড়ি বিদ্যালয় থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরে হলেও রাজনৈতিক কারণে তাকে সভাপতি মনোনীত করা হয়। ফ্যাসিবাদ আমলে নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের যোগসাজসে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে ৪৫ লক্ষ টাকা এবং বিদ্যালয়ের ১১ বিঘা জমি থেকে আসা বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের অডিট আপত্তির তিন লক্ষ ৫১ হাজার ৭২৭ টাকা আত্মসাত করেছেন, এসব অভিযোগে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। সেই থেকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার পদত্যাগপত্র ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে গত এক বছরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষকের দেখা পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের স্টাফরা জানান, তিনি প্রায় এক বছর ধরে অনুনমোদিত অপুস্থিত রয়েছেন। তদানিন্তন সহকারি প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম পদত্যাগ করার এক মাস ১০ দিন পর গতবছর ৩ ডিসেম্বর পদাধিকার বলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মহাদেবপুর ইউএনও মো: আরিফুজ্জামান দেলোয়ার হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। পদত্যাগের পরদিন থেকে গতবছর নভেম্বর পর্যন্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক শামসুল আলমের বেতন বিল করা বন্ধ ছিল। কিন্তু গতবছর ডিসেম্বর থেকে ইএফটিতে বেতন আসা শুরু হয়, তা এখনও অব্যাহত আছে। কিন্তু পদত্যাগের পর তিন মাস ৯ দিনের বেতন এখনও তুলতে পারেননি। বিদ্যালয় থেকে বেতন বিল বন্ধ করা থাকলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশি কিভাবে তার ইএফটি চালু করলো তা কারো বেধগম্য নয়।
মউশির ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত প্রথম সারির কয়েকজন কর্মকর্তার সরকারি মোবাইলফোন নম্বরে বার বার কল দিলেও তারা বিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে শামসুল আলম মোবাইলফোনে জানান, তাকে বেদম মারপিট করে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেয়া হয়েছে। এটি কার্যকর নয়। ঘটনার পর তিনি বার বার থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের নিকট নিরাপত্তা চেয়েছেন। কিন্তু তিনি পাননি। তাই বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না। এখন তিনি প্রতিদিন জীবন নাশের শংকায় উপজেলা সদরের বাসাতেই থাকছেন। কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেও কিভাবে তিনি বেতন পাচ্ছেন, এর কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি নিজেই ভূক্তভোগি। বিষয়টি মাসের পর মাস ফেলে না রেখে এর একটা সুরাহা হোক তাই তিনি চান।
ইউএনও মো: আরিফুজ্জামান জানান, পদত্যাগ ও অনুপস্থিতির বিষয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশিকে জানানো হয়েছে। তারা এব্যাপারে এখনও কোন নির্দেশনা দেননি। ফলে পদত্যাগ বিষয়ের এখনও কোন সুরাহা করা যায়নি। তিনি জানান, কাউকে প্রতিদিন নিরাপত্তা দিয়ে কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া, নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তবে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের বিষয় তদন্ত করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একাডেমিক সুপারভাইজার ফরিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি মিমাংশার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন রেজা জানান, ঘটনার এক বছর পর মামলা এন্ট্রিতে আইনগত কোন সমস্যা নাই।

এমএসএম / এমএসএম

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে : শফিকুল আলম

নাগরপুরে যমুনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে জরিমানা ও জাল ধ্বংস

হাটহাজারীর অননুমোদিত ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটের উপর তৈরি হচ্ছে বিশাল স্থাপনা

এইচএসসিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ষষ্ঠ অবস্থান অর্জন করলেন কাপ্তাইয়ের পরমা চৌধুরী

শিবচরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে এক কিশোরের মৃত্যু

হাতিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে অভিভাবকদের হতাশা

মিরসরাইয়ে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বই বিতরণ

তালাকের তিন মাস পর প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে টুঙ্গিপাড়ায় নারীর মামলা

শালিখায় রবিউল ইসলাম নয়নের গণমিছিলে হাজারো মানুষের ঢল

তানোরে যুবদল নেতাকে ফাঁসাতে ফাঁদ পেতেছে আওয়ামী লীগ নেতা

চন্ডিডহরে স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবিতে তিন উপজেলার মানুষের বিশাল মানববন্ধন

হাটিকুমরুলে শ্রমিক লীগ নেতা এখন জামায়াত নেতা

চন্দনাইশে পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ে তামাশার প্রতিবাতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন