মাদকের নিঃশব্দ দহন, একটি পরিবারের কান্না

গোধূলি সন্ধ্যায় নিজ কর্মস্থলে বসে পত্রিকায় খবরের শিরোনাম দেখছি। এমন সময় (সুনীল) ছদ্মনামের এক ভদ্রলোক এসেছিল আমার কাছে। মাদকাসক্ত ভাগিনী জামাইকে এ পথ থেকে ফেরাতে চান। তিনি এসেছিলেন আমার এলাকার পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে পরামর্শ নিতে। একটি পরিবার কে বাঁচাতে তার আকুলতা ও অস্থিরতা দেখে আমি বাকরুদ্ধ। তার অশ্রু স্বজন চোখে আমি চোখ রেখে স্তব্ধ হয়ে শুনেছি তার কথা। এক সময় যে ছেলেটা ছিলো পরিবারের ভরসার জায়গা। সেই আজ পুরো পরিবার ধংস করে চলছে। দুই সন্তানের জনক হলেও নেই পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা। পরিবার কে এখন সে নরক বানিয়ে রেখেছে। মাদকের টাকার জন্য বৃদ্ধ বাবা-মা সহ স্ত্রী কে নিয়মিত নির্যাতন করে। পরিবারের মুল্যবান জিনিস পএ দিনে দিনে বিক্রি করে সেবন করছে মাদক। ধীরে ধীরে পরিবার টি এখন নিঃস্ব হওয়ার পথে। পরিবারের সদস্য কেউ মাদকের বিরুদ্ধে কিছু বললেই তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সুনীল সাহায্য সহোযোগিতা চান আমার কাছে লেখালেখি করি গণমাধ্যম কর্মী বলে। তিনি বলেন আপনার পরিচিত প্রশাসনে অনেক পরিচিত লোক জন আছে যদি একটু সহযোগিতা পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন ইতিপূর্বে নিজেদের চেষ্টায় ও বিভিন্ন ব্যক্তি বর্গের দারস্থ হয়েও কোনো কূলকিনারা করতে পারেন নি। এক্ষেত্রে আমিও তাকে নানা পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে চুপ থেকেছি। কারণ সমাজ মাদক কারবারি কে লালন পালন করে। সংবাদ কর্মী হিসেবে আমার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবল ইচ্ছে থাকলেও অসহায়ত্বের কথা কি করে তাকে বুঝাই। আমি আপনি চাইলেও কি সম্ভব মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে? মোটেও তা কিন্তু নয়। কারণ এখানে কোটি কোটি টাকার বানিজ্য হয় যেটার সুবিধা ভোগী এই সমাজেরই মানুষ। মাদকের ছোবলে এই সমাজে, এই দেশ জুড়ে প্রতিনিয়ত কত শত পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে, অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে, তার হিসেব কে রাখে। মাদকাসক্ত হয়ে যুব সমাজ ধংস হচ্ছে। অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থী ও তরুণেরা অকালেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যত প্রজন্ম ধংসের দ্বারপ্রান্তে আজ। মাদক আমাদের সমাজ কে গিলে খাচ্ছে কোনো প্রতিকার নেই। নেই কারো মাথা ব্যাথা না আছে সমাজের না আছে রাষ্ট্রে। যেটুকু আছে সেটা লোক দেখানো বলা চলে। দিন শেষে প্রতিটি পরিবার মাদকের ছোবলে আক্রান্ত হচ্ছে। আগামীতে এর পরিনতি কতটা ভয়াবহ হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জরিপ বলছেন দেশের মাদক কারবারিদের একটি বড়ো অংশই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন শক্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়। প্রশাসনও অনেকটা দায় সারা কাজ করে চলছে অনেক টা চাপের মুখে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৮৩ লক্ষ লোক মাদকাসক্ত। যা মোট জনসংখ্যার ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ ও যুবক। মাদকাসক্তদের মধ্যে পুরুষ ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ও নারী ২ লাখ ৮৫ হাজার এবং এর বাইরে ২ লাখ ৫৫ হাজার মাদকাসক্তই শিশু কিশোর বয়সের। এ থেকে সহজেই বুঝা যায় দেশে মাদকের তীব্রতা কতটা ভয়াবহ।
সমাজ বিজ্ঞানীরা বলেন মাদকের রামরাজত্বে
তরুণদের একাংশের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বহু পরিবার ধংস হয়ে যাচ্ছে। সমাজে অপরাধ প্রবনতা দিন দিন বাড়ছে। সমাজ আজ অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে। মাদক সেবনে বিকৃত-মস্তিস্কের মানুষ সমাজে বাড়ছে। মাদকাসক্ত ব্যাক্তি বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে ফলে তাদের পরিবারে চিকিৎসা ব্যয় বাডছে। মাদক কারবারির ফলে দেশের বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতায় উত্তরণের উপায়-ই বা কি? মাদকের নীল দংশন থেকে যুব সমাজ কে বাঁচাতে দরকার পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা।মাদকাসক্তি একটি সামাজিক ব্যাধি। এ ব্যাধি থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার। প্রতিটি পরিবার থেকে স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় সহ এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে জোড়ালো ভাবে ঘৃনা প্রকাশের আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। এতে দেশ ও জাতি এবং সমাজের পরিবার গুলো মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে রক্ষা পাবে। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আসুন আমরা মাদক মুক্ত দেশ ও সমাজ গড়ে তুলি। পরিবার ও জাতি কে রক্ষা করি।
এমএসএম / এমএসএম

অখণ্ড বিজয়নগর রক্ষার দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সাংবাদিককে হুমকি

ভূরুঙ্গামারীতে বসতভিটা দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

রায়গঞ্জে ৬ লাখ টাকাসহ বিকাশ কর্মী নিখোঁজ: বাগান থেকে মটর সাইকেল উদ্ধার

সাংবাদিক জগতের নক্ষত্র ছিলেন প্রয়াত সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমনঃ সিআরএ

কাপ্তাইয়ে ১৪ হাজার ৭শত ৪২ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে

কসবায় বিদেশি মদসহ নারী আটক

লালমাইতে বিয়ে করতে এসে ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দিলো বর

কুতুবদিয়ায় এনসিপি নেতা হেলালিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

লায়ন নুর ইসলামের নির্বাচনী এলাকা নড়াইল ২ এ ভি,পি নূরকে ফুলের শুভেচ্ছা

বোদায় যৌথবাহিনীর অভিযানে জরিমানা ও হাসপাতাল সিলগালা

শালিখায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের মূল্যায়ন ও সমাপনী অনুষ্ঠান
