ঢাকা শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

ঈশ্বরদীতে আগাম সবজি চাষে বেশী লাভের স্বপ্নে বিভোর কৃষকরা


এএ আজাদ হান্নান, ঈশ্বরদী photo এএ আজাদ হান্নান, ঈশ্বরদী
প্রকাশিত: ২৫-৯-২০২৫ দুপুর ৩:৫৯

ঈশ্বরদীতে শীতকালীন সবজি ফসল স্বাভাবিকভাবে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে ক্ষেত থেকে ওঠানো হয়। কিন্তু ওই সময় কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পায়না। অপরদিকে বর্ষার শেষে বাজারে সবজির যে অপর্যাপ্ততা তৈরি হয়, দামও থাকে বেশি, চাহিদাও থাকে বেশি। দামের এই বিষয়টি  মাথায় রেখে বিগত প্রায় দেড়যুগ সময় ধরে বিভিন্ন  ইউনিয়নে আগাম সবজি চাষে জোর দিয়েছে ঈশ্বরদীর সবজি চাষিরা। দেশের সবজির ভান্ডার হিসেবে পরিচিত ঈশ্বরদীতে শীতকালীন সবজির ব্যাপক চাষ হয়। এখনও শীত মৌসুম শুরু না হলেও এখানকার সবজি চাষিরা শীতের সবজি বাজারে উঠিয়ে লাভবান হচ্ছেন এবং ঈশ্বরদীর উঁচু জমিগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় সবজি চাষের সাথে জড়িত পরিবারগুলো ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখানে শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন এবং মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। যদিও চলতি বছরের আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস লাগাতার বৃষ্টির কারণে সবজি ফসল উৎপাদনে কিছুটা বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও ভালো দাম পাওয়ায় তারা খুশি এবং শীতের আগেই যাতে শীতকালীন সবজি ভোক্তাদের নিকট চাহিদামত পৌছানো যায়, সেই প্রচেষ্টায় ব্যস্ত সবজি চাষিরা। 'সবজির আগাম চাহিদা মাথায় রেখে ফলানো হচ্ছে নানান জাতের সবজি। সরেজমিন ঈশ্বরদীর মুলাডুলিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের আগাম সবজি চাষ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি, গড়গড়ি, আলহাজ্ব মোড়, মোড়,আওতাপাড়া, সাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর আসনা এলাকার উত্তর দিকের উঁচু মাঠে, সলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর বরইচরা, ভাড়ইমাড়ি ড়ইমাড়ি ও মুলাডুলি ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া, বাঘহাচলা, মুলাডুলি, সরইকান্দি বিশাল এলাকাজুড়ে কোথাও কোথাও শিম, কোথাও মুলা, ফুলকপি, গাজর, কোথাও ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, করলা, কাকরোল, লাউ, লালশাক, ধনিয়াপাতা ইত্যাদি আগাম শীতকালীন সবজি আবাদ হচ্ছে। মুলাডুলি ইউনিয়নের শাহিন,রহিম আলী ও বাঘহাসলা গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, 'যে কোনো সবজি যদি মৌসুমের শুরুতে বাজারে তোলা যায়, তবে তার দাম বেশি পাওয়া যায়। এরইমধ্যে আগাম জাতের অটোশিম, মুলা, লালশাক, পুঁইশাক, করলা, পালংশাক বাজারে আসতে শুরু করেছে। পর্যাপ্ত দামও পাচ্ছি।'উপজেলায় বিভিন্ন মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। বাজারেও উঠেছে আগাম শীতকালীন সবজি। তবে দাম অনেক চড়া।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসের দায়িত্বশীল সূত্রে জানাগেছে, চলতি খরিপ মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ অর্জিত হয়েছে। আগাম জাতের সবজির আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। বর্তমানে শুধুমাত্র মুলাডুলি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় আগাম জাতের শীতকালীন সবজি অটোশিম আবাদ হয়েছে ৯১০ হেক্টর জমিতে। এছাড়াও সলিমপুর, লক্ষ্মীকুন্ডা,সাড়া, সাহাপুর, ইউনিয়নের আওতাপাড়া, ভাড়ইমাড়ি, চরকুরুলিয়া, কামালপুর এলাকায় ৩’শ১০ হেক্টর জমিতে গাজর ও  ৩’শ হেক্টর জমিতে ফুলকপিসহ আগাম শীতকালীন বাম্পার সবজির আবাদ হওয়ায় এলাকার কৃষককুলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে।
সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল গাফফার মল্লিক গত ২৫ বছর ধরে সবজির আবাদ করে সুনাম অজন করায় তার সাথে সবজি মাঠে বসে খোলামেলা কথা হয় । তিনি জানান, ৮ বিঘা জমিতে আবাদ করা  মুলার মধ্যে ৬ বিঘা জমির মুলা বিক্রি করেছেন। দুই বিঘা জমির মুলা বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। শুধু মুলা চাষই না,মুলা উঠানোর জমিগুলোতে গাজর বুনার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে মুলা আবাদ করতে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। এবার তিনি বিঘা প্রতি মুলা বিক্রি করেছেন ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আগাম মুলা বিক্রি করে ভাল লাভবান হয়েছেন তিনি। মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মোহাম্মদ আলী এসকেন, তোরাপ আলী বিশ্বাসসহ অনেক চাষির জমিতেই সবজিচাষ হচ্ছে। স্থানীয় আড়মবাড়িয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আলীম জানান, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া এ ধরনের ফসল উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায় চাষিরা আগাম জাতের সবজি করে লাভের অঙ্ক গুনছেন। আওতাপাড়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজন ইসলাম ও স্থানীয় সবজি চাষিরা জানান, আগাম আবাদকৃত মুলা, ফুলকপি, ধনিয়ার এক চালান বিক্রি করেছেন তারা। বর্তমানে চাষিরা একটু অপেক্ষা করছেন আবহাওয়া দেখে পরবর্তী চালানের সবজি গাজর, শসা, করলা, আবাদ করবেন। স্থানীয় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা জানান, অনেক জমি আছে,সেইসব মালিকদের নিকট থেকে জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করেন তারা। চলতি মৌসুমে হঠাৎ করেই জমির মালিকরা জমির ইজারা চুক্তির মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ায় তারা পড়েছেন বিপাকে। রাস্তার পাশের যে জমির ইজারা মূল্য ২০ হাজার টাকা ছিল তা বর্তমানে ইজারা মূল্য হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা । জমির মালিকরা যদি একটু সহনশীল হতো, তাহলে সবজি চাষীরা বেশী করে সবজি চাষ করে বেশী লাভবান হতেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল মুমিন বলেন, অন্যান্য ফসলের চাইতে আগাম সবজিচাষ লাভজনক। যেকোনো সবজি যদি মৌসুমের আগে বাজারে তোলা সম্ভব হলে দাম বেশি পাওয়া যায়। বিষযটি বুঝতে পেরে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অনেক চাষি আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন। ঈশ্বরদী এলাকার উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণ শেষে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। 

এমএসএম / এমএসএম

৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ জন্ম হবে না: শওকত হোসেন সরকার

পাটগ্রামে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালন

টাঙ্গাইলে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, হাইজিন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম কালভীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

বাউফলে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালীতে বাজারের ইজারা নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সন্ত্রাসী হামলায় ৫ পুলিশসহ আহত ৬, গ্রেপ্তার ৩

নওগাঁয় মামলা তদন্তে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

টিএইচই র‌্যাঙ্কিংয়ে আবারও শীর্ষে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

‎আনোয়ারায় মোবাইল কোর্ট অভিযান,তিন মামলায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা

ঠাকুরগাঁওয়ে টাইফয়েড টিকা দান ক্যাম্পেইন ও সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন

রাজশাহী সড়ক-জনপথে কর্মচারীদের জনসংযোগ

শাহজাদপুরে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উদযাপন